কলকাতা: এ বার রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত এক চিকিৎসকের মৃত্যু হল। শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ তিনি মারা গিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। রাজ্যে এই প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনও চিকিৎসকের মৃত্যু হল। তিনি সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরের দায়িত্বে ছিলেন।
গত কয়েক দিন ধরে সল্টলেকের আমরিতে ভর্তি ছিলেন ওই চিকিৎসক। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লালারসের নমুনা কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্যে পাঠানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয় ওই চিকিৎসককে। ওই দিনই গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। আমরি হাসপাতালের মিডিয়া রিলেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার দ্রিমি চৌধুরী বলেন, “রাত দেড়টা নাগাদ ওই চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।” যদিও তাঁর মৃত্যু করোনায় নাকি কো-মর্বিডিটির কারণে সে বিষয়ে স্বাস্থ্যভবন সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্রভাণ্ডার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর। কারণ, সেখানেই মজুত থাকে পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার-সহ করোনা মোকাবিলার যাবতীয় সরঞ্জাম। এখান থেকেই বিভিন্ন হাসপাতাল, মেডিক্যাল স্টোরে পৌঁছে যায় এই সমস্ত সামগ্রী। সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা সুগার এবং হাইপারটেনশনের রোগী ছিলেন। কয়েক মাস আগে এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারও হয়।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১৯৯০ জন সংক্রমিত,দেশে করোনা আক্রান্ত ছাড়াল ২৬ হাজার, মৃত ৮০৯
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশিকা অনুযায়ী ওই শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তার সৎকার করা হবে। জানা গিয়েছে, বেহালার হরিদেবপুরের বাসিন্দা ওই স্বাস্থ্যকর্তার স্ত্রীও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তিনিও সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। শোনা গিয়েছে, অসুস্থতার একেবারে শুরুতে স্থানীয় যে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্তা তিনিও করোনা আক্রান্ত।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সভাপতি অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, “আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। ভোরের দিকে খবর পাই উনি মারা গিয়েছেন। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন করোনা মোকাবিলায়। প্রত্যেককেই বলব যাতে সতর্ক ভাবে নিয়ম মেনে কাজ করেন।” বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “আইএমএ-এর বর্ষীয়ান সদস্য ছিলেন। তাঁকে আমরা হারালাম। ওঁর স্ত্রীও করোনা পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
আরও পড়ুন: করোনায় আশা দেখাচ্ছে প্লাজমা চিকিৎসা, আগামী সপ্তাহে পরীক্ষা শুরু বাংলাতেও