Site icon The News Nest

লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে পারে, সর্বদলীয় বৈঠকে ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

147

নয়াদিল্লি: গত কয়েকদিন ধরে তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে রকম দাবি তুলতে শুরু করেছেন, তাতেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল যে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতা সেই মর্মেই সায় দিলেন। তার পর প্রধানমন্ত্রীও কার্যত বুঝিয়ে দিলেন লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতেই হবে।

সর্বদল বৈঠকে সব জাতীয় ও আঞ্চলিক দলের প্রতিনিধিরা তাঁদের মতামত জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী তাঁর মত দেন। তিনি বলেন, লকডাউন তুলে নেওয়া মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। বরং লকডাউন এবং সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং-ই একমাত্র রাস্তা যা দিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনার বলি ৩৫, মৃত বেড়ে ১৪৯! আক্রান্ত ৫১৯৪

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫১৯৪। ফলে চিন্তা ক্রমশই বাড়ছে। সূত্রের খবর, লকডাউন নিয়ে বিরোধীদের তাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন মোদী। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া আগে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা হবে বলেও তিনি জানান।এনিয়ে বৈঠক হবে ১১ এপ্রিল।

মন্ত্রীরা আরও পরামর্শ দিয়েছেন, ধর্মীয় কেন্দ্রগুলি যেখানে সাধারণত বিপুল জনসাধারণের সমাগমের প্রবণতা রয়েছে, সেই জায়গাগুলিকে চরম নজরদারির মধ্যে রাখা উচিত। প্রয়োজনে ড্রোন উড়িয়েও বিশেষ তদারকির মাধ্যমে জনসমাগম রোখার আর্জি জানিয়েছেন এই মন্ত্রীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের  ওই বৈঠকে ধর্মীয় স্থল, স্কুল কলেজ ও শপিং মল আরও ৪ সপ্তাহ বন্ধ রাখার কথা আলোচনা করা হয় বলে সূত্রের খবর।

প্রধানমন্ত্রী এদিন বৈঠকে বলেন, করোনার আক্রমণে দেশে এক সামাজিক জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ওপরে কড়া নজর রাখতে হবে সবাইকে। বিভিন্ন রাজ্য, জেলা প্রশাসন লকডাউন বাড়ানোর পক্ষেই মত দিয়েছে। এ দিন প্রধানমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং পরে যেমন গোটা বিশ্বে মানুষের জীবনযাত্রা বদলে গিয়েছে, তেমনই করোনা পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে গোটা বিশ্বে মানুষের জীবনযাপনে বিরাট বদল আসবে। কর্ম সংস্কৃতির বদল আসবে। সামগ্রিক জীবনে পরিবর্তন আসবে।” বর্তমান পরিস্থিতিকে সামাজিক জরুরি অবস্থা বা সোশ্যাল ইমারজেন্সি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় এবার দেশের পাশে আমির খান! নিঃশব্দে বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত

মোদী এ দিন করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে তা কাটিয়ে ওঠার কথাও বলেন। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার-সহ বিএসপি, লোকজনশক্তি পার্টির সাংসদরাও।

সুদীপ এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের শুরুতেই রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়ার কথাও জানান। করোনা পরিস্থিতিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেই কেন্দ্রের কাছে ২৫ হাজার কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। সেই দাবিই এ দিন ফের তুলে ধরেন সুদীপ। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছে পাওয়া ৩৬ হাজার কোটি টাকার কথাও ফের এক বার প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেন সুদীপ। সেই সঙ্গে লকডাউনের মধ্যে বা পরে বেসরকারি ক্ষেত্রে ছাঁটাই নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সুদীপ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বার্তা দেওয়া উচিৎ যাতে কর্মী ছাঁটাই না হয়।”

দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করার দাবিও জানানো হয় তৃণমবল কংগ্রেসের তরফ থেকে।  সুদীপ আগামী ২ বছরের জন্য এমপি ল্যাড বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন তা পুনর্বিবেচনা করতে বলেন। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদ বেতনের ৩০ শতাংশ কেন আরও বেশি দিতে আমরা তৈরি। কিন্তু সাংসদ তহবিলের টাকা বন্ধ হয়ে গেলে বহু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ক্ষতি হবে।”

আরও পড়ুন: টোকে অনেকেই কিন্তু বাদশাহর মত ঋণ স্বীকার করতে পারে কজন!

Exit mobile version