Site icon The News Nest

Gunjan Saxena -The Kargil Girl review: কেমন অভিনয় করলেন জাহ্নবী, জেনে নিন ভিডিওর সাহায্যে

কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্তার কথা আজও এদেশে খুব ফিসফিসিয়ে বলা হয় ।এমন ভাবে লুকিয়ে রাখা হয় গোটা বিষয়টি যেন সেই মেয়েটির অপরাধ। এই অবস্থায়  ভারতীয় বায়ুসেনার অন্দরমহল এর গল্পটা তুলে ধরা সত্যি করে খুব কঠিন কাজ কিন্তু এই কাজ করে ফেলেছেন গুঞ্জন সাক্সেনা দা কারগিল গার্ল -সিনেমার পরিচালক শরণ শর্মা।আর এই বায়োপিক শুধুমাত্র গুঞ্জনের নয় হয়ে উঠেছে দেশের প্রতিটা মেয়ের কথা।

গল্পটা আমাদের সবার জানা, মাটিতে পা রেখে আকাশে ওরা- এটাই প্রধান মন্ত্র ছিল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট গুঞ্জনের। কার্গিল যুদ্ধের সময় সতীর্থ শ্রীবিদ্যা রাজনের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয় মহিলা সামরিক অফিসার হিসেবে সরাসরি সংঘাতে অংশগ্রহণ করে ইতিহাস রচনা করেছিলেন গুঞ্জন। দুই বিমানচালক পাক সেনার নাকের ডগা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা রণাঙ্গনে আহত যোদ্ধাদের উদ্ধার করেছিলেন। গুঞ্জন হলেন প্রথম মহিলা যিনি নিজের সাহসিকতার জন্য শৌর্য চক্র পেয়েছিলেন।

আর্মি পরিবার থেকে আসা পরিবার আদরের গুঞ্জুর বড়ো হয়ে ওঠা লখনৌতে। বাবা, মা ও দাদাকে নিয়ে ছোট পরিবার। বাবা রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার।   পাইলট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বড়ো হয়ে ওঠে গুঞ্জন।  যে স্বপ্নে তাঁর পাশে বাবা ছাড়া কেউ নেই।  মা, দাদা থেকে শুরু করে পাড়া – পড়শি, আত্মীয়ও -স্বজন সবাই তাঁকে বারবার বলতে থাকে মেয়েরা পাইলট হয়না।  কিন্তু গুঞ্জনের জেদ আর পরিশ্রম তাঁকে একদিন এনে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনার অন্দরে।  এখন থেকে শুরু হয় তাঁর জীবনের এক অন্য পর্ব।

আরও পড়ুন: স্টেজ ৩ ক্যান্সার! চিকিৎসার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উড়ে যাচ্ছেন সঞ্জয় দত্ত

পাইলটের ট্রেনিং নিতে গিয়ে তাঁকে পড়তে হয় অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে।  সহকর্মী থেকে শুরু করে ট্রেনিং অফিসার – সবাই গুঞ্জনকে বোঝাতে থেকে পুরুষদের জগতে অনধকার প্রবেশ করে ফেলেছে সে।  একসময় স্বপ্ন গুলো ভেঙে পড়তে থাকে গুঞ্জনের।  কিন্তু ফের একবার বাবার সাহায্যে উঠে দাঁড়ায় সে আর তারপর টুকু না হয় সিনেমার জন্য তোলা থাক।

এবার আসা যাক সিনেমাটির ভালো – মন্দে।  প্রথমেই ভালো গুলো বলে নিই। যা এই সিনেমাটাকে উপভোগ্য করেছে তা হল অভিনয়।  কারোর অভিনয়ে কোনো খুঁত নেই। জানভি কাপুর, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, অঙ্গদ বেদি, মানব ভিজ, বিনীত কুমার সিং, – সকলের অভিনয় খুব ভালো।  জানভি কাপুর অনেকটাই উন্নতি করেছেন। তার বড়ো চোখ গুঞ্জনের এক্সপ্রেশান দিতে অনেক খানি সাহায্য করেছে। রাগ, দুঃখ কিংবা আনন্দ – অনেকটাই চোখের মাধ্যমে পর্দায় ফাটিয়ে ফুলেছেন তিনি।  এই সিনেমা বলিউডে তাঁর পা আরো মজবুত করলো একথা বলাই যায়। তবে সব থেকে ভালো লেগেছে গুঞ্জন ও তাঁর বাবার দৃশ্য গুলো।  পঙ্কজ ত্রিপাঠি নির্লিপ্ত মুখে এমন সব ডায়লগ বলেছেন যা সিনেমাকে  অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।  গুঞ্জনের বায়ুসেনার পাইলট হওয়ার থেকে বেশি এই গল্প হয়ে উঠেছে বাবা- মেয়ের কাহিনী যা দেখতে আপনার খারাপ লাগবে না।

দেখুন ভিডিও –

দ্বিতীয ভালো লাগা হলো সিনেমাটির গান. অরিজিৎ সিংয়ের গাওয়া  ‘ভারত কি বেটি’ হোক বা রেখা ভরদ্বাজের গাওয়া ‘ডোরি টুট গাইয়া’ বা আরমান মালিকের গাওয়া ‘মান কি ডোরি’ – সবকটিই যথাযথ।  যে কথাটা না বললেই নয় তা হলো, সিনেমাটিতে কোথাও জোর করে  দেশভক্তি ঢোকানো হয়নি বা দেশভক্তি নিয়ে বাড়াবাড়িও করা হয়নি। বরং একটি দৃশ্যে গুঞ্জন তার বাবাকে বলে, ‘দেশভক্তি আছে এমন মানুষ চায় বায়ুসেনা।  আমি তো শুধু পাইলট হতে চাই.’ যার উত্তরে গুঞ্জনের বাবা বলে ওঠেন, ‘তুমি আগে ভালো পাইলট হয়ে ওঠো, দেশভক্তি নিজে থেকেই চলে আসবে।’

এবার আসা যাক খারাপে। কার্গিল যুদ্ধের দৃশ্য গুলো অত্যন্ত বাজে ভাবে শুট করা হয়েছে। দৃশ্য গুলো দেখলে মনে হয়  খুব দায়সারা গোছের কাজ।  বিনীত কুমার ও অঙ্গদ বেদির স্ক্রিন টাইম আরো একটু বেশি হলে ভালো লাগতো।  তবে সিনেমাটার মূল সমস্যা হলো ফ্লাট স্টোরি টেলিং।  এমন কোনো মুহূর্ত নেই, এমন কোনো দৃশ্য নেই – যা আপনার এড্রিনালিন রাশ বাড়াবে। তবে গুঞ্জন সাক্সেনার এই বায়োপিক  আপনাকে শেখাবে বাবা- মা পশে থাকলে সন্তানদের পক্ষে স্বপ্নের পথ ধরে চলা কতটা সহজ হয়।

স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সপরিবারে নেটফ্লিক্সে দেখে নিতে পারেন সিনেমাটি।  আর কেমন লাগলো তা অতি অবশই আমাদের জানাবেন।

আরও পড়ুন: ‘বন্ধ করা হোক মিডিয়া ট্রায়াল’, সুপ্রিম কোর্টে আর্জি রিয়ার

Exit mobile version