টান টান উত্তেজনা। আলো আধারি দৃশ্যে প্রথমেই জোড়া খুন। দেখিয়ে দেওয়া হল খুনিকে। দেহ আগুনে নয়, পোড়ানো হল খুব সম্ভবত সালফার ডাই অক্সাইড। খুনিও আহত হয় তাতে। অবশ্য তার সংলাপে উল্লেখ নেই। চিল চিত্্কার তাঁর। এখান থেকেই শুরু সিনেমা। এরপর টাইম লিপ। ৫ বছর এগিয়ে এল গল্প।
গল্পের পটভূমি উত্তরপ্রদেশের কানপুর। বিয়ের ফুলসজ্যার রাতে খুন ঠাকুর রঘুবীর সিং (খালেদ তায়েবজি)। ইনি ছিলেন প্রভাবশালী মন্ত্রী। সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী (রাধিকা আপ্তে) ফুলশয্যার রাতেই বিধবা হন। খুনের সময় বাড়িতেই ছিলেন রঘুবীরের নেশাগ্রস্ত ছেলে, অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ও তাঁর স্বামী, রঘুবীরের প্রথম স্ত্রীর ভাই, রঘুবীরের ভাইপো তাঁর মা, এবং কাজের লোক। এন্ট্রি হয় জটিল যাদব ওরফে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির।
তদন্ত, জেরা, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন জটিল যাদব। বড় হাভেলি, ক্ষমতা দখলের লড়াই, মন্ত্রীরাজ, কমবয়সি স্ত্রী..রহস্যে মোড়া টানটান উত্্কন্ঠা নিয়ে এগোতে থাকে গল্প।প্রথম থেকেই রাধিকা আপ্তের মধ্যে একটা রাগী মেজাজের প্রকাশ দেখা যায়। যা রহস্যকে তরান্বিত করতে থাকে। জানা যায় বিয়ের আগেই থেকেই তাঁর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল মন্ত্রীর। চলত শারিরিক নির্যাতন। তাহলে দোষী কি রাধিকা আপ্তে? কিন্তু রাধিকার স্পষ্ট জবাব গল্পের মোড় ঘোরাতে থাকে। জানা যায় ,মৃতের ভাইপোর সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল তাঁর। যিনি পরিবারের সম্পত্তি, ব্যবসা সামলাতেন। তাহলে খুনি কে? মৃতের ঘরে ও বিবিধ জায়গায় মহিলাদের নগ্ন শরীরের ছবি দেখা যায়। সন্দেহের কাঁটা প্রতি মুহূর্তে ঘুরে যেতে থাকে।
পাঁচ বছর আগের জোড়া খুনের সঙ্গে যোগ সূত্র খুঁজতে থাকেন জটিল যাদব। এরমধ্যে চলে আসে রাজনৈতিক চাপ। একের পর এক রাঘব বোয়ালদের সঙ্গে লড়তে থাকে সে। নওয়াজউদ্দিনকে এর আগেও পুলিশের চরিত্রে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, চ্যালেঞ্জিং এক পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় তাঁকে দেখা যায়নি। তাঁর মায়ের চরিত্রে দেখা গিয়েছে ইলা অরুনকে। মা- ছেলের কথোপথনের দৃশ্য বাড়তি মজা যোগ করেছে সিনেমায়। সেই সঙ্গে জটিল যাদবের সাদাহরণ জীবন যাপন, সিনেমায় রঙের ব্যবহার, কাহিনীর মোচড় – সবটাই বাস্তব ঘেঁষা। যদিও গল্পের প্রথম হাফ একটু বেশি টানা হয়েছে বলে মনে হতে পারে, কিন্তু সিনেমাটি দেখার পর আপনার কোনো কিছু নিয়ে অভিযোগ জানাতে ইচ্ছা করবে না। প্রত্যেকে অসাধারণ অভিনয় করেছেন এই সিনেমাতে। গান দুটিও যথাযথ।
আপনি যদি এখনও ছবিটি দেখে না থাকেন নেট ফ্লিক্সে গিয়ে দেখে নিন। হানি তেহেরান পরিচালিত ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটের এই সিনেমা, আলো আঁধারি দৃশ্যে রহস্যময় গল্প দেখতে মন্দ লাগবে না। কারণ রহস্য উদঘাটনের পর চমকে উঠবেন আপনি।
আরও পড়ুন: Shakuntala Devi review: আরো একবার অভিনয়ে ঝড় তুললেন বিদ্যা, কিন্তু খামতি রয়ে গেল গল্পে, দেখুন ভিডিও