কোভিড চিকিৎসার সরঞ্জাম, ওষুধ ও অন্যান্য পণ্যের উপরে কর কমাল জিএসটি কাউন্সিল (GST Council)। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ টসিলিজুমাব ও অ্যামফোটেরিসিন বি করমুক্ত করা হয়েছে। শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের (Nirmala Sitharaman) নেতৃত্বে ৪৪ তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে কোভিড পথ্য ও চিকিৎসা পণ্যে কর-স্বস্তির একাধিক সুপারিশ করেন মেঘালয়ের উপমুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার নেতৃত্বাধীন কমিটি। ওই সুপারিশে অনুমোদন দিয়েছে কাউন্সিল। আপাতত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর মকুবের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। তবে বহাল থাকছে কোভিড টিকার (COVID Vaccine) উপরে ৫ শতাংশ জিএসটি (GST)।
কোভিড টিকা ও ওষুধে জিএসটি মুক্ত করার দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোভিডের পথ্যে কর হ্রাস হলেও টিকার ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টিকা ও ওষুধে করছাড়ের জন্য চিঠিও দেন মমতা। তার পর নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) টুইটে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, টিকা করমুক্ত করা হলে সেই বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের উপরে। তবে এ দিন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে টিকার উপর কর প্রত্যাহারের দাবি করেনি রাজ্যগুলি। কারণ আগের ব্যবস্থায় তাদের কিনতে হত। এখন টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সেক্ষেত্রে রাজ্যগুলির উপরে টিকা কেনার দায়িত্ব থাকছে না। তবে বৈঠকে কোভিড সরঞ্জাম ও ওষুধকে করমুক্ত করার দাবি করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু তা করেনি কেন্দ্র। বরং কর কমিয়ে ৫ শতাংশ রাখা হয়েছে।
আরটি-পিসিআর মেশিন, আরএনএ এক্সট্র্যাকশন মেশিন ও জেনোম সিকোয়েন্সিং মেশিনে জিএসটি হার ১৮ শতাংশই থাকছে। জেনোম সিকোয়েন্সিং কিটের ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ জিএসটি লাগে। তাতে কোনও বদল হয়নি। কোভিড পরীক্ষা কিটের কাঁচামালেও কোনও জিএসটি বদল হয়নি। তবে হেপারিন, রেমডিসিভির এবং কোভিড চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সুপারিশকৃত যে কোনও ওষুধে কর ১২% থেকে কমে হয়েছে ৫%। মেডিক্যাল গ্রেড অক্সিজেন, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ও ভেন্টিলেটর, ভেন্টিলেটর মাস্ক, বাইপাপ মেশিনের উপরে জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫ শতাংশ। কোভিড পরীক্ষা কিটে আগে লাগত ১২ শতাংশ। তা কমে হল ৫%। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
Finance Minister Smt. @nsitharaman will chair the 44th GST Council meeting via video conferencing at 11 AM in New Delhi tomorrow. The meeting will be attended by MOS Shri. @ianuragthakur besides Finance Ministers of States & UTs and Senior officers from Union Government & States. pic.twitter.com/pslBvrD31k
— Ministry of Finance (@FinMinIndia) June 11, 2021
আরও পড়ুন: পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের মাস্ক পরানো ঠিক নয়, কী কী নিয়ম মানতে হবে গাইডলাইন দিল কেন্দ্রীয় সংস্থা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) চিঠির কথা স্মরণ করিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। দলের বিধায়ক ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) মন্তব্য, কোভিড সংক্রান্ত সরঞ্জামে কর বসিয়ে দেশবাসীর সঙ্গে তামাশা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন,”গোটা দেশের মধ্যে একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৯ মে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি দাবি করেছিলেন, কোভিড সংক্রান্ত কোনও কিছুতেই কর নেওয়া উচিত নয়। আজ ৪৪ তম জিএসটি কাউন্সিলে কেন্দ্র জানিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সেও কর লাগবে। জীবনদায়ী ওষুধেও কর নিচ্ছে। এটা একটা জনবিরোধী সরকার। জনবিরোধী নীতি প্রণয়ন করেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন আপাতত ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই জিএসটি বহাল থাকছে। অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে জিএসটি বসানো হাস্যকর তামাশা। এই তামাশা দেশবাসীর সঙ্গে করেছেন নির্মলা সীতারমন। সমস্ত ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা বারবার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও একবার প্রমাণ হল, এটা জনবিরোধী সরকার। এই জিনিসগুলির উপরে কর কোনও সভ্য দেশে বসতে পারে না। মানুষের প্রতি সহানুভূতি নেই।”
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের (Sukhendu Sekhar Roy) বক্তব্য, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ৯ মে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। কোভিডের প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও যন্ত্রপাতিকে করমুক্ত করার কথা বলেছিলেন। কেন্দ্র সাড়া দেয়নি। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ করমুক্ত করার ঘোষণা হল না। অ্যাম্বুল্যান্সেও ১২ শতাংশ কর নিচ্ছে। এই জনবিরোধী নীতির তীব্র প্রতিবাদ করছি। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে কর-নীতি পুনর্বিবেচনা করা হোক।
আরও পড়ুন: যেতেই হবে না আরটিও অফিসে, ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাবেন খুব সহজে