কথাবার্তা শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকেই। আর মঙ্গলবার জল্পনায় সিলমোহর পড়ল। গোয়ায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার অ্যালভিটো ডি’কুনহা। এর আগেই চার্চিল কর্তা আলেমাও চার্চিল এবং ভালেঙ্কা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে গোয়ার ক্রীড়ামহলও ধীরে ধীরে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
চলতি বছর সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের হাত ধরেছিলেন লাল-হলুদের ‘ঘরের ছেলে’ অ্যালভিটো (Alvito D’cunha)। তবে তিনি যে শেষ পর্যন্ত তৃণমূলে যোগ দেবেন, তা অনেকদিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। গতকাল সরকারি ভাবে তা ঘোষণা করা হল। কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার করার জন্য বুধবার কলকাতাতেও পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যেই মনোজ তিওয়ারির মতো খেলার জগতের তারকাকে পুরপ্রচারে দেখা গিয়েছে। আর এই প্রথমবার ঘাসফুল শিবিরের (TMC) হয়ে ভোট প্রচার করবেন অ্যালভিটো।
ঘাসফুল শিবিরে সামিল হয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন অ্যালভিটো। প্রসঙ্গত, ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ের পরদিনই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে ভবানীপুরের একটি শীতলা মন্দির ও গুরুদ্বারে পুজো দিতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের তারকা ফুটবলার অ্যালভিটো ডি-কুনহাকে। তারপর থেকেই জল্পনা ছড়িয়েছিল, গোয়ার ভূমিপুত্র কি এবার নাম লেখাবেন তৃণমূলে? অবশেষে সেই জল্পনা সত্যি হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় গোয়া সফরে।
হাত ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কারণ হিসেবে গোয়া থেকে আলভিটো বলেন, “আমি অনেক আগে থেকেই দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) লড়াইয়ের ফ্যান। কিন্তু আমার ভোটার কার্ড যেহেতু গোয়ার, তাই ইচ্ছে থাকলেও তৃণমূলে যোগ দিতে পারছিলাম না। যখন গোয়া কংগ্রেসে যোগ দিই, তখন গোয়ায় তৃণমূল ছিল না। কিন্তু যেই মুহূর্তে দিদি এবং অভিষেক গোয়াতেও তৃণমূলের প্রসার ঘটালেন, মনে হল, আর কংগ্রেসে থাকাটা ঠিক নয়। কারণ, আমার পছন্দের পার্টি তৃণমূল কংগ্রেস যখন গোয়াতেই আছে, তখন তৃণমূলে যোগ দেওয়াটাই উচিত। দিদির লড়াইয়ের সঙ্গে অভিষেকের নেতৃত্ব বরাবরই আমাকে টানত। দিদি এবং অভিষেকের হাত ধরে আমরা গোয়াতে নিশ্চিতভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রতিষ্ঠিত করব।”
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে পুলিসের বাসে জঙ্গি হামলা, আহত কমপক্ষে ১৪ জন আধিকারিক
আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। অ্যালভিটো নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন কি না জিজ্ঞাসা করা হলে জানান, “দেখুন, আমি দিদির আদর্শ আর তৃণমূলকে ভালবেসে দলে যোগ দিয়েছি। তার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্পর্ক নেই। দলের নেতৃত্ব, আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলবে, দলের প্রয়োজনে সেভাবেই আমি কাজ করব।”
রাজনৈতিক মহল বলছে, ইতিমধ্যেই গোয়ায় জাঁকিয়ে বসেছে তৃণমূল। কংগ্রেসের ঘর ভেঙে নিজেদের ঘর গোছাচ্ছে তাঁরা। গোয়ার দুবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফ্যালেইরো তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেস ছেড়ে। তারপর থেকেই দুবার গোয়া সফর করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ, সামনের বছরের শুরুতেই গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যে কোমর বেধেই নামতে চলেছে, তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। এই পরিস্থিতিতে অ্যালভিটোর যোগদান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক মহলের মতে, গোয়ার ভোটের ময়দানে কলকাতার ক্লাবের প্রাক্তন এই তারকা ফুটবলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: আকবর রোডের নাম বদলে রাখা হোক বিপিন রাওয়াতের নামে, নয়া দাবি নিয়ে আসরে বিজেপি