মায়ের বিরুদ্ধেই উঠল ছেলেকে অপহরণ ও খুন করে দেহ লুকিয়ে রাখার অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের এ জে ব্লকে (Saltlake)। তদন্তে নেমে প্রায় কঙ্কাল হয়ে যাওয়া একটি পচাগলা দেহও উদ্ধার করেছে পুলিশ (Police)।
ওই যুবক নিখোঁজ রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ জানান তাঁর বাবা অনিলকুমার মহেনসারিয়া। আর এদিন রাতেই উদ্ধার হল ওই যুবকের কঙ্কাল। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, কঙ্কালটি অনিলবাবুর বড় ছেলে অর্জুনের। এ ঘটনায় পুলিশ ওই যুবকের মা ও ভাইকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন ফরেনসিক দলের আধিকারিকরা। তাঁরা সেখান থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।
বিধাননগর পুলিশের গোয়ান্দারা জানান, বৃহস্পতিবার পেশায় ব্যবসায়ী অনিলকুমার মহেনসারিয়া তাঁর অভিযোগে জানান যে তাঁর বড় ছেলে অর্জুন বেশ কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ। অনিলবাবুর সন্দেহ ছিল হয়তো তাঁর স্ত্রী গীতা অর্জুনকে অপহরণ করেছে বা তাঁকে খুন করে ফেলেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন অনিলবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালায় বিধানননগর পুলিশ। তখনই বাড়ির ছাদ থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়। কঙ্কালটি একটি কাপড়ে মোড়ানো ছিল।
আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দুকে ৬ কোটি, সুজনকে ৯ কোটি, অধীরকে ৬ কোটি টাকা দিয়েছি’, মোদী-মমতাকে চিঠি সুদীপ্ত সেনের
পুলিশের অনুমান, কঙ্কালটি অর্জুনের। এ ঘটনায় ওই যুবকের মা গীতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির নীচের তলার একটি ঘরে মেঝেতে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা গিয়েছে। ওখানে কিছু পোড়ানো হয়েছে বলে অনুমান করছে পুলিশ। একইসঙ্গে ছাদে ওঠার সিড়িতে পাওয়া গিয়েছে ছাই।
জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে বিয়ে হয় অনিল ও গীতার। দাম্পত্য কলহের জেরে সম্প্রতি আলাদা থাকছিলেন তাঁরা। বড় ছেলে অর্জুন, ছোট ছেলে বিদুর এবং মেয়ে বৈদেহীতে নিয়ে সল্টলেকের বাড়িতে থাকছিলেন গীতা। আর রাজারহাটে একটি আবাসনে একা থাকছিলেন অনিল। ব্যবসায়ীর দাবি, গত ২৯ অক্টোবর তিনি জানতে পারেন ছেলেমেয়েদের নিয়ে নিজের মায়ের বাড়ি রাঁচি চলে গিয়েছেন গীতা। কিন্তু ৩০ নভেম্বর তিনি জানতে পারেন ছোট ছেলে ও মেয়ে গীতার সঙ্গে গেলেও সেখানে নেই বড় ছেলে অর্জুন। অথচ এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে গীতা জানান অর্জুন তাঁর সঙ্গেই রয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় বড় ছেলের খোঁজ শুর করেন অনিল। কিন্তু কোনও সন্ধান না পেয়ে এদিন পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। অনিলের দাবি, গীতাই তাঁর বড় ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে।
উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি বাস্তবেই অর্জুনের কি না সেটা ফরেনসিক পরীক্ষার পরেই জানা যাবে। কিন্তু দেহটি পচেগলে যাওয়ার পরেও এলাকাবাসীরা কোনওরকম দুর্গন্ধ কেন পেলেন না সেই দিকটিও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্রের উপর বুলডোজার চালানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে’, Human Right day তে সরব মমতা