২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই বাংলার মাটিতে পা রেখেছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তিনি এসেও দেখতে পেলেন রাজ্য বিজেপি’র অন্দরে প্রবল কোন্দল রয়েছে। যা থাকলে বাংলা দখল করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দলের অন্দরে একে অন্যের মধ্যে মুখ দেখা–দেখি কার্যত নেই। সেটা চোখে পড়ল অমিত শাহের। যা নিয়ে তিনি রাজ্য নেতাদের কিঞ্চিৎ ধমকেছেন বলে সূত্রের খবর।
আজ বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে মোমবাতি প্রজ্বলনের একটি কর্মসূচি ছিল। সেখানে দেখা যায় মুকুল রায় যখন ভারত মাতার ছবির তলায় ফুল দিচ্ছেন তখন মুখ ঘুরিয়ে নমস্কার করছেন দিলীপ ঘোষ। আবার এই ঘটনা দেখেও দিলীপবাবুর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না রাহুল সিনহা। তিনি যেন দিলীপ ঘোষকে দেখতেই পাননি। তবে দিলীপ ঘোষ আড়–চোখে রাহুল সিনহাকে দেখে নিয়েছেন। এই গোটা ঘটনাটি যখন ঘটছে তখন সেটার থেকে নজর এড়ায়নি অমিত শাহের।
আরও পড়ুন : ‘দুর্গাপুজোর নিয়ম মেনেই হোক কালীপুজো’, রাজ্যের প্রশংসা করল হাইকোর্ট
তাৎক্ষণিক তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। কারণ তাহলে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসত। পরে যখন দলীয় বৈঠক শুরু হয় তখনই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। এমনকী এই ঘটনা যে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তখন অবশ্য সবাই চুপ করেই ছিলেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্তা দিয়েছিলেন, বিভাজন রাখা চলবে না। সবাইকে নিয়েই চলতে হবে। সেখানে রাজ্য সফরে এসে বুঝলেন কেউ তাঁর কথা শোনে না। এতে তিনি প্রচণ্ড খচেছেন বলে খবর মিলেছে।
রাহুল সিনহা এখন সাইডলাইনে রয়েছেন। তাই তিনি কারও সঙ্গে কথা বলেন না। আর দিলীপ ঘোষ দেখতে পাচ্ছেন যে ক্রমাগত মুকুল রায়ের ক্ষমতা বাড়ছে। তাই তিনি মুকুল রায়কে এড়িয়েই চলেন বলে সূত্রের খবর। সাম্প্রতিক সৌমিত্র খানের যুব মোর্চার সমস্ত জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সে কথাও অমিতের কানে তুলেছিলেন মুকুল। এবার তা প্রকাশ্যে স্বচক্ষে দেখলেন তিনি। যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন দলের অন্দরেই।
এই বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক প্রথমসারির নেতা বলেন, ‘এমন কিছু হয়েছে বলে আমার কানেও এসেছে। তবে পুরো বিষয়টা জানি না। একটা মতানৈক্য তো রয়েছে। সেটা সব দলেই থাকে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। সেই বার্তাই দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’
আরও পড়ুন : যোগীর সিএএ মন্তব্যে বেজায় চটেছেন নীতীশ, বিহার ভোটের মাঝেই শরিকি সঙ্ঘাত