Site icon The News Nest

স্ট্রেচার থেকেই কবরে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে দেহ! ভিডিয়ো ঘিরে তোলপাড়

পুদুচেরি: করোনায় সংক্রামিতদের সঙ্গে যাতে খারাপ ব্যবহার না করা হয়, তার জন্য বার বারই আবেদন করছে সরকার৷ কিন্তু সাধারণ মানুষ তো বটেই, করোনা যুদ্ধে যাঁরা সামনে থেকে লড়াই করছেন, সেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও এই মারণ ভাইরাস নিয়ে ভয়ঙ্কর আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ পুদুচেরির একটি ঘটনায় তা ফের প্রমাণিত হল৷

প্রায় সাত মিনিটের একটি ভিডিয়ো। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে দাঁড়াল একটি মাঠের ধারে। ওই অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামলেন চার জন। তাঁদের সবাই পিপিই পরে রয়েছেন। তার পর পিছনের দরজা খুলে আগাগোড়া পলিথিনে মোড়া স্ট্রেচারের উপরে রাখা একটি মৃতদেহ নিয়ে আসছেন। আগে থেকেই একটি গর্ত খোঁড়া ছিল। ওই চার জন গর্তের পাশে দাঁড়িয়ে মৃতদেহটি ছুড়ে দিলেন গর্তের ভিতরে। ফিরে যাওয়ার সময় এক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘বডি ফেলে দেওয়া হয়েছে’। যে সরকারি আধিকারিককে বিষয়টি জানান, তিনিও সম্মতিসূচক ইঙ্গিত করেন।

https://youtu.be/p8M2yfQfDAw

আরও পড়ুন: অগস্টের পরে খুলবে স্কুল-কলেজ , জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরেই নানা মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। ওই কর্মীদের শাস্তির দাবি ওঠে। এক জন মৃত মানুষের প্রতি এমন আচরণ ‘মানহানি’ বলে সরব হয় বিভিন্ন সংগঠনও। মানবাধিকার সংগঠন ‘ইন্ডিয়া এগেনস্ট করাপশন’ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, মৃতদেহের সম্মানজনক সৎকার তাঁর অধিকার। এই ধরনের অপমান ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০ নম্বর ধারা অনুযায়ী অপরাধ। মৃত ব্যক্তির মানহানির দায়ে ওই স্বাস্থ্যকর্মী ও দাহকর্মী এবং তাঁদের সুপারভাইজারদের জরিমানা এবং শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।’’ সংগঠনের সভাপতি এস আনন্দ কুমার এই ঘটনাকে ‘পুদুচেরির অপেশাদার বিপর্যয় মোকাবিলা’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এমন কি, দেহ সমাহিত করার জন্য সরকারি গাইডলাইনও মানা হয়নি বলে অভিযোগ৷ সাধারণ কাপড়ে মুড়েই দেহ ফেলে দেওয়া হয়৷ কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, করোনায় মৃত্যু হলে দেহ প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে সৎকার করার কথা৷ ছুড়ে দিতেই সেটা খুলে যেতেও দেখা গিয়েছে ওই ভিডিয়োয়। জানা গিয়েছে, যে ব্যক্তির দেহ কবর দিতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে, তিনি চেন্নাইয়ের বাসিন্দা৷ পুদুচেরিতে গিয়ে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হন এবং সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

আবার মৃতদেহটি পিছনের দিকে যে দু’জন ধরেছিলেন, তাঁদের পায়ের জুতো নিয়েও সংশয় রয়েছে। কেননা, হু-এর গাইডলাইন অনুযায়ী দাহ করতে যাওয়া কর্মীদের পায়ে গাম্বুট অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু এই দু’জনের জুতো দেখে গাম্বুট কখনওই মনে হয়নি। এতে ওই কর্মীদের সংক্রমিত হয়ে পড়ার আশঙ্কাও করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সব মিলিয়ে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। তার জেরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পুদুচেরির জেলাশাসক অরুণ। তিনি বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একটি মেমো পাঠিয়েছি। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি বিষয়টির তদন্ত করছি।’’

আরও পড়ুন: দিল্লির হাসপাতাল স্থানীয়দের জন্য সংরক্ষিত করল কেজরি সরকার, দিলেন বর্ডার খোলার ঘোষণাও

Exit mobile version