Site icon The News Nest

কমছে না পরিযায়ী-যন্ত্রণা! মধ্যপ্রদেশে গাড়ি উল্টে মৃত ৫, কেরালায় আত্মঘাতী বাংলার শ্রমিক

ভোপাল: দু’দিন আগেই অওরাঙ্গাবাদে ঘুমন্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পিষে দিয়েছিল মালগাড়ি। মৃত্যু হয়েছিল ১৬ জনের। ট্রেনের পর এ বার লকডাউনের মধ্যেও ট্রাক উল্টে মৃত্যু হল ৫ পরিযায়ী শ্রমিকের। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১ জন। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হায়দরাবাদ থেকে আগরায় আম নিয়ে যাওয়ার পথে মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুরে কাছে দুর্ঘটনাটি ঘঠে। দুর্ঘটনায় মৃত ও আহত সবারই করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তেলঙ্গানার হায়দরাবাদ থেকে একটি আমভর্তি ট্রাক যাচ্ছিল উত্তরপ্রদেশের আগরায়। ওই ট্রাকে ছিলেন মোট ১৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক। এ ছাড়াও ছিলেন দুই চালক ও এক জন খালাসি। রবিবার সকালে মধ্যপ্রদেশের পথ গ্রামের কাছে দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ট্রাকটি। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নরসিংহপুরের জেলাশাসক দীপক সাক্সেনা বলেন, ‘‘১৮ জনের মধ্যে পাঁচ জনকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা।’’

আহতরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ওই হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অনীতা আগরওয়াল জানিয়েছেন, ‘‘দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের জব্বলপুর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বাকিরা স্থিতিশীল। আহতদের মধ্যে এক জনের গত তিন দিন ধরে সর্দি ও কাশি ছিল। তাই মৃত ও আহতদের সবারই নমুনা সংগ্রহ করে করোনার পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।’’

বাড়ি ফিরতে না পেরে মানসিক অবসাদে কেরালায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী এ রাজ্যের এক পরিযায়ী শ্রমিক। মৃতের নাম আশিক ইকবাল মন্ডল (২২)। মৃত যুবকের বাড়ি ডোমকল থানার জিৎপুর শিরোপাড়া গ্রামে। ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ মাস আগে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন আশিক। লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মজুরির টাকা প্রায় শেষ হয়ে আসছিল। খাবার কিনে খাওয়ার টাকাও ছিল না।

আরও পড়ুন: ইদ উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করার প্রয়োজন নেই, মমতাকে চিঠি ইমামদের

গত বুধবার কেরালা থেকে একটি ট্রেন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে মুর্শিদাবাদে এসেছিল। ওই ট্রেনে বাড়ি আসতে পারেননি আশিক ইকবাল। ফিরতে না পেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। কেরলের যেখানে আশিক থাকতেন, সেখানে তাঁর গ্রামেরই আরও ৩০ জনের বাস। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রথম ট্রেনে আসার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম আমরা। পুলিশ প্রথমবার আমাদের সুযোগ দেয়নি। দ্বিতীয়বার নিয়ে যাবে বলেছিল। এরপর থেকেই ভেঙে পড়ে আশিক।’

তাঁরা জানিয়েছেন, যে ঠিকাদারের কাছে আশিক কাজ করতেন, তিনি টাকা দেননি। ফলে সঙ্গে থাকা টাকা প্রায় শেষই হয়েছিল তাঁরা। যে ঘরে সকলে থাকতেন, সেই ঘর থেকে কিছুটা দূরে একটি আম বাগানের মধ্যে শনিবার সকালে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন আশিক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই পরিবারের লোকেদের কাছে খবর পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন: তোমায় ছাড়া ঘুম আসে না মা…শ্রীদেবীর শেষ স্পর্শ শেয়ার করলেন জাহ্নবী

Exit mobile version