Site icon The News Nest

ঘূর্ণিঝড়ও নাকি তাঁর কথা শোনে, চেনেন কী এই ‘সাইক্লোন ম্যান’কে

ওয়েব ডেস্ক: চেনেন কি এই ‘সাইক্লোন ম্যানকে’ ? বিধ্বংসী ঝড়ের কথা বুঝতে পারেন তিনি।দেশ এখন মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্রকে ‘দ্য সাইক্লোন ম্যান’ নামে চেনে।ওড়িশার ভদ্রক জেলায় মৃত্যুঞ্জয়ের জন্ম। ৬ বছর বয়স থেকে দেখছেন ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলা।ভেবেছিলেন, একদিন এই ঝড়কেই বশ করবে সে। ভবিষ্যতে বড় হয়ে সেই ভাবনাই সত্যি প্রমাণ করেছিল তিনি।

ছোট থেকেই ঘূর্ণিঝড়ে বার বার নিজের জেলাকে বিধ্বস্ত হতে দেখেছেন তিনি। তাঁর বাবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস পেলে প্রতিবেশীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতেন। সেখান থেকেই ভয় না পেয়ে প্রকৃতিকে ভালবাসার হাতেখড়ি মৃত্যুঞ্জয়ের।

আরও পড়ুন: ১ জুন থেকেই চলবে ২০০ নন এসি বিশেষ প্যাসেঞ্জার ট্রেন, জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর মৃত্যুঞ্জয় ডিআরডডিও-তে যোগ দেন জুনিয়র ফিজিসিস্ট হিসেবে। সে সময় স্বয়ং এপিজে আব্দুল কালাম এসে তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে ভারতের প্রথম অগ্নি মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ পর্বে তিনিও শরিক ছিলেন।

প্রকৃতির রূপবদলের প্রতি ভালবাসা রয়েই গিয়েছিল মৃত্যুঞ্জয়ের মনের কোণে । ১৯৯২ সালে তিনি পুণের আইএমডি-র অফিসে যোগ দেন। গত ২৮ বছর ধরে তিনি প্রথম সারির আবহবিদ। দেশের পাশাপাশি সম্মানিত হয়েছে অজস্র আন্তর্জাতিক সম্মানে।

১৯৯৯ সালের ওড়িশায় সুপার সাইক্লোনের দুঃসহ স্মৃতি জীবনভর তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে। এই দুর্যোগের পরেই তিনি হাওয়া অফিসকে আরও আধুনিক করে তোলার দাবি জানান।

‘ফায়ালিন’, ‘হুদহুদ’, ‘তিতলি’-সহ একাধিক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে মৃত্যুঞ্জয় এবং তাঁর সহকর্মীদের ভূমিকা দেশবাসীর কুর্নিশ আদায় করে নেয়। কারণ ঝড়ের গতিপ্রকৃতি ও গতিপথ নিয়ে নির্ভুল পূর্বাভাস সাহায্য করে প্রস্তুতি নিতে। ফলে বহু স্থানীয় বাসিন্দার জীবন রক্ষা সম্ভব হয়।

একই তৎপরতার ছবি ধরা পড়ে ২০১৯ সালে, ‘ফণী’ ঘূর্ণিঝড়ের সময়েও। সাইক্লোন ম্যানের পূর্বাভাস সাহায্য করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করতে। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয় অনেকটাই।

কাজপাগল মৃত্যুঞ্জয় ছুটির দিনেও অফিসে যেতে ভালবাসেন। আধঘণ্টার জন্য হলেও তাঁকে যেতেই হবে অফিসে।তৃপ্তি করে খান বাড়ির তৈরি নিপাট খাবার। পছন্দ করেন ওড়িশায় তৈরি রসগোল্লাও।

প্রকৃতিকে ভালোবাসি বন্ধু বানিয়েছেন তিনি । তাই বলা হয়, বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ও নাকি তাঁর কথা শোনে। তিনি যে গতিপথের পূর্বাভাস দেন, তার থেকে অন্য পথে এগোয় না ঝড়।

মৃত্যুকে জয় করা যায় না। কিন্তু তিনি বাঁচিয়েছেন বহু মানুষের প্রাণ। সেই অর্থে তাঁর ‘মৃত্যুঞ্জয়’ নাম সার্থক। একই সঙ্গে দেশের মানুষ তাঁকে যে ‘সাইক্লোন ম্যান’ নাম ডাকে তাও ষোলো আনা সফল ।

আরও পড়ুন: WHO-এর এগজিকিউটিভ বোর্ড চেয়ারম্যান পদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন

Exit mobile version