Site icon The News Nest

ভ্যাকসিনের পর এবার অক্সিজেনের আকাল, ‘ভয় পাবেন না’ আশ্বাসই সম্বল কেন্দ্রের

LEAD 2

ভ্যাকসিন ঘাটতির পর এবার আকাল অক্সিজেনে! (oxygen) তাই বুঝেশুনে ব্যবহার করুন। তৈরি করুন বিশেষ কন্ট্রোল রুম। সমন্বয় বাড়ান অন্য জেলা তথা রাজ্যের সঙ্গেও। প্রতি মুহূর্তে হোক পর্যালোচনা। কোভিড রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যবহৃত অক্সিজেন ইস্যুতে বৃহস্পতিবার রাজ্যগুলিকে এই পরামর্শ দিল কেন্দ্র। রকেট গতিতে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ১৫ দিন আগে গত ৩১ মার্চ যেখানে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার ৩৩০, এখন তা দু’লক্ষেরও অধিক। রাজধানী দিল্লি সহ রাজ্যে রাজ্যে হাসপাতালে উপচে পড়ছে ভিড়। অভিযোগ, মিলছে না শয্যা। অভাব হয়েছে অক্সিজেনের, যার জেরে ছড়িয়েছে আতঙ্কও। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, অক্সিজেনের অভাব নেই। সরবরাহের মতো পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। উৎপাদনও বাড়ানো হচ্ছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

মুখে আশ্বাস দিলেও অক্সিজেন পরিস্থিতি যে মোটেই স্বাভাবিক নেই, তা স্পষ্ট। রাজ্যে রাজ্যে অক্সিজেনের পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে বসেছিল কেন্দ্রের ‘ইন্টার মিনিস্টেরিয়াল এমপাওয়ারড গ্রুপ।’ দেশের কোথায় কত অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে, কত উৎপাদন একদিনে সম্ভব, চাহিদা ব্যাপক বাড়লে কোথা থেকে বাড়তি অক্সিজেন আসবে….ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, প্রয়োজন পড়লে স্টিল প্ল্যান্টে ব্যবহারের জন্য থাকা অক্সিজেন মেডিকেল চিকিৎসার কাজে রাজ্যগুলিকে পাঠানো হবে। সেই মতো ভিলাই, বেল্লারি, ডলভির মতো স্টিল প্ল্যান্টের কোথায় কত স্টক রয়েছে, তার বিস্তারিত খোঁজখবর শুরু হয়েছে।

ইস্পাত উৎপাদন এবং তেল শোধনাগারে মূলত অক্সিজেনের ব্যবহার খুব বেশি। সূত্রের খবর, এই সংস্থাগুলো এবার নিজেদের উৎপাদন অক্ষুণ্ণ রেখে অক্সিজেন জোগান দেবে হাসপাতালে। নিজেদের মজুত রাখা অক্সিজেনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।
তবে এই জোগানে সমস্যাও রয়েছে। ওডিশার ইস্পাত কারখানাগুলো অক্সিজেন জোগানে রাজি হয়েছে। এদিকে অক্সিজেনের সবথেকে বেশি প্রয়োজন মহারাষ্ট্রে। ওডিশা থেকে ওই রাজ্যে অক্সিজেন পৌঁছতে গেলে খরচ এবং সময়— দুইই যা লাগবে, তাতে সুরাহা কিছু হবে না।

আরও পড়ুন: মোদীর কেন্দ্রে গো হারা ABVP, জয় পেল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন NSUI

এখনও পর্যন্ত রাজ্যগুলির থেকে পাওয়া রিপোর্ট মোতাবেক দিনে ৩ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, ছত্তিশগড়, পাঞ্জাব এবং রাজস্থান, এই ১০ টি রাজ্যেই মেডিকেল অক্সিজেনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অন্য রাজ্যতেও ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৭ হাজার ১২৭ মেট্রিক টন মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন হয়। তাই এখনও পর্যন্ত তেমন চিন্তার কারণ নেই বলেই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কেন্দ্রীয় কমিটি মনে করলেও করোনার এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আর কিছুদিন চলতে থাকতে যে হাসপাতালে অক্সিজেনের আকাল হবে, তা বলাই বাহুল্য। তাই অক্সিজেন ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনওভাবেই যেন অক্সিজেন নষ্ট না হয়।

অক্সিজেন সিলিন্ডার বহনকারী ট্যাঙ্কার যাতে দেশের সর্বত্র বিনা বাধায় যেতে পারে, তার উপর বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এছাড়া যেসব কারখানায় সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভর্তি করার কাজ চলে, সেগুলিকে ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অক্সিজেন বহনকারী ট্যাঙ্কারের অভাব মেটাতে নাইট্রোজেন বহনকারী ট্যাঙ্কারগুলিকে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, যাতে সেগুলিতে করে অক্সিজেন বহন করা যায়।

আরও পড়ুন: গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি! ৭.৩৯%-এ বাড়তে পারে সব্জির দাম

Exit mobile version