Site icon The News Nest

সুন্দরী নয় তাই ধর্ষিত হওয়া সম্ভব নয়! বিচারপতির মন্তব্যে স্তম্ভিত নাগরিক সমাজ…

writers building

The News Nest:  দেখতে সুন্দর নন। তাই তাঁর ধর্ষণ হতে পারে না! বিচারকের এমন বক্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে। 

আপনি কেন ওত রাতে অফিসে গিয়েছিলেন? আপনি মদ্যপান করেছিলেন কেন? আপনি অভিযুক্তদের সকাল পর্যন্ত থাকতে দিয়েছিলেন কেন? একের পর এক বেফাঁস প্রশ্ন। যেন ধর্ষিতারই আসল দোষ। এ তো গেল প্রশ্নের কথা! এক বিচারক ধর্ষিতা মহিলার বয়ান বিশ্বাসই করতে চাননি। তার কারণ, সেই মহিলাকে দেখে বিচারকের সুন্দর বলে মনে হয়নি। বিচারক সন্দেহ করেছেন, ওই মহিলার সঙ্গে আদৌ দুষ্কর্ম করেনি কেউ। আর এমন মনে করার পিছনে তাঁর এক এবং একমাত্র যুক্তি একটাই। সেই মহিলা তাঁর চোখে ততটা সুন্দর নন। এই ঘটনার পর অনেকেই সেই বিচারকের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিচারকের বিচার পদ্ধতি যদি এমন হয়, তা হলে ভুক্তভোগী বিচারের আশায় কোথায় যাবেন!

এর পরই বিচারপতির এ ধরনের বক্তব্যের ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিক্ষোভও হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে ভারতে ধর্ষণের শিকার নারীদের বয়ান কেমন হবে, সে ব্যাপারে ধর্ষিতাদের জন্য গাইড কিংবা নির্দেশিকা থাকবে নাকি? কিংবা কোনও বিচারপতি আদর্শ ধর্ষণের শিকারের মানদণ্ড ঠিক করে দেবেন?

আরও পড়ুন: ভর সন্ধ্যায় ফের ভূমিকম্প দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায়, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষজন

দিল্লির সিনিয়র আইনজীবী অপর্ণা ভাট দেশের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের তিনজন নারী বিচারকের উদ্দেশে খোলা চিঠিতে লিখেছেন, ‘যে ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই বা আইনে লেখা নেই, সে ব্যাপারে কি বিচারের কোনও বিধান নেই? আর ভারতীয় নারী মানেই কি একটি ফরম্যাটের সঙ্গে মিলে যাবে? তার হেরফের হলেই সমস্যা!’

বেঙ্গালুরুর নারী অধিকারকর্মী মধু ভূষণ বলেছেন, ‘বিচারপতি যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা একেবারে হতাশ হওয়ার মতো।’ এই মামলার পর্যবেক্ষণেই বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত ধর্ষণের পর নারীর ঘুমিয়ে পড়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। অভিযুক্ত রাকেশ বি-কে গ্রেফতারির আগেই জামিনে মুক্তি দিয়েছিল আদালত। বার ও বেঞ্চের দাবি অনুযায়ী জামিনের আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি কৃষ্ণা দীক্ষিত বলেন, ‘অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, ধর্ষণের পর তিনি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। একজন ভারতীয় মহিলা এটা করতে পারেন না। আমাদের মেয়েরা ধর্ষিত হওয়ার পর এমন আচরণ করেন না।’

উল্লেখ্য, গত দু বছর ধরে নিগৃহীতার অফিসেরই কাজ করতেন অভিযুক্ত। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল বলে অভিযোগ। তার অপরাধের একাধিক প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করে জামিন নাকচের আবেদন জানিয়েছিলেন সরকারপক্ষের আইনজীবী। অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হলে, তদন্তে ভুল পথে চালিত হতে পারে বলেও আদালতে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কর্নাটক হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: নেই করোনা আতঙ্ক, এটিএমে টাকা দিলেই বেরচ্ছে আস্ত ফুচকা!

Exit mobile version