Site icon The News Nest

কোভিডে বিপর্যস্ত বারাণসী, সাংসদ মোদীর দেখা না পেয়ে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী

varanasi

দেশে এখন কোভিডের যে তাণ্ডব চলছে, তার অন্যতম প্রধান শিকার বারাণসী এবং তার আশপাশের অঞ্চল। শুধু বারাণসী শহরে নয়, ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের প্রত্যন্ত গ্রামেও। চিকিৎসা ছাড়াই ঘরে বসে ঐ সব গ্রামের বাসিন্দারা মারা যাচ্ছেন। উত্তর প্রদেশ রাজ্যের এই অঞ্চলের ক্রুদ্ধ বাসিন্দাদের অনেকে এখন খোলাখুলি প্রশ্ন করছেন এই চরম দু:সময়ে তাঁদের সাংসদ নরেন্দ্র মোদী- ভারতের প্রধানমন্ত্রী – বেপাত্তা কেন।

কোভিডে সবচেয়ে বিপর্যস্ত এলাকাগুলোর অন্যতম বারাণসীতে হাসপাতাল কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে, রোগীরা হাসপাতালে গিয়ে বেড পাচ্ছেন না, অক্সিজেন নেই, অ্যাম্বুলেন্স নেই। এমনকি কোভিড টেস্টের ফলাফল পেতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। গত দশদিনে, বারাণসী এবং আশপাশের অঞ্চলের ওষুধের দোকানগুলোতে ভিটামিন, জিংক বা প্যারাসিটামলের মত মামুলি ওষুধ পর্যন্ত মিলছে না।

”হাসপাতালে একটা জায়গা এবং অক্সিজেনের জন্য সাহায্য চেয়ে মিনিটে মিনিটে টেলিফোন আসছে, খুব সাধারণ ওষুধও দোকানে পাওয়া যাচ্ছেনা। ফলে অনেক রোগী মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও খাচ্ছেন।” নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে একথা জানিয়েছেন স্থানীয় একজন ডাক্তার। ক্ষুব্ধ মানুষজন বলছেন যে মানুষটিকে ভোট দিয়ে তারা এলাকার সংসদ নির্বাচিত করেছিলেন সেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিকে পা পর্যন্ত মাড়াচ্ছেন না।

আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই টানা ৩ দিন কলকাতা-সহ দেশের ৪ বড় শহরে বাড়ল পেট্রল, ডিজেলের দাম

বারাণসীতে সরকারি হিসাবে প্রতিদিন মারা যাছে ১০ থেকে ১১ জন। কিন্তু সেখানে যাদের সাথেই বিবিসি কথা বলেছে তারা বলেছে সরকারের এই পরিসংখ্যান পুরোপুরি অসত্য। শহরের মণিকর্ণিকা ঘাটের কাছে বহুদিনের পুরনো এক বাসিন্দা বললেন গত এক মাস ধরে শ্মশান ঘাটে বিরতিহীনভাবে মরদেহ পোড়ানোর কাজ চলছে। ”যেদিকে তাকাবেন অ্যাম্বুলেন্সের আওয়াজ এবং মরদেহ”। আগে, বারাণসীর দুটো প্রধান শ্মশান ঘাটে দিনে ৮০ থেকে ৯০টি দাহ হতো। কিন্তু, ঐ বাসিন্দার কথায়, গত এক মাস ধরে দিনে ৩০০-৪০০ দাহ হচ্ছে।

সম্প্রতি বারাণসীর একজন বাসিন্দার তোলা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে শ্মশান ঘাটে যাওয়ার একটি সরু রাস্তার দুই ধারে এক কিলোমিটার পর্যন্ত সার ধরে রাখা রয়েছে মরদেহ। গত দশদিনে নগর প্রশাসন নতুন দুটো শ্মশান তৈরি করেছে। সেগুলোও রাতদিন ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত বলে খবর রয়েছে।

নরেন্দ্র মোদী প্রায়ই বলেন বারাণসী, এখানকার মানুষ এবং গঙ্গা নদীর সাথে তার ”বিশেষ সম্পর্ক”। কিন্তু করোনাভাইরাসের তোড়ে যখন শহরের দুর্গতি চরমে দাঁড়ায়, তারপর তাকে তার এই নির্বাচনী এলাকায় দেখা যায়নি। অথচ এই শহরের বাসিন্দারা দেখেছেন তাদের এমপি ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারের জন্য ১৭ বার পশ্চিমবঙ্গে গেছেন।

আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ, মৃত অন্তত ৬, মুখে কুলুপ বিজেপির

Exit mobile version