Site icon The News Nest

স্কলারশিপের ৪ কোটি টাকা হাতাতেই কি খুনের গল্প ফাঁদছে পরিবার? সুদীক্ষার মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে রহস্য

দুর্ঘটনা, নাকি হত্যা, উত্তরপ্রদেশের কৃতী ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে এখনও টানাপড়েন চলছে। পরিবার যদিও পুলিশের কাছে বার বার দাবি করেছে , সুদীক্ষাকে হত্যা করাই হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেটা মানতে নারাজ। পাল্টা পুলিশের দাবি, সমস্ত প্রমাণ কিন্তু ইঙ্গিত করছে, দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে যোগীর রাজ্যের এই কৃতী ছাত্রীর।

গত সোমবার উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে এক মেধাবিনী ছাত্রী বাইক অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, দুই ইভটিজার তাঁকে হেনস্থা করেছিল। তার ফলেই দুর্ঘটনা হয়। কিন্তু বুধবার মৃতের পরিবারের দাবি উড়িয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানাল, কেউ ওই ছাত্রীকে হেনস্থা করেনি। তাঁর পরিবার বিমার টাকা পাওয়ার জন্য হেনস্থার গল্প বানিয়েছে।

মৃতের নাম সুদীক্ষা ভাটি। বয়স ছিল ২০। ২০১৮ সালে ১২ ক্লাসের পরীক্ষায় তিনি ৯৮ শতাংশ নম্বর পান। তারপরে আমেরিকায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করছিলেন। করোনা অতিমহামারীর জন্য জুন মাসে তাঁদের কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। সুদীক্ষা বাড়ি ফেরেন। অগাস্ট মাসেই তাঁর আমেরিকায় ফেরার কথা ছিল।

আরও পড়ুন: শেষ পর্যন্ত হার মানল ঘোড়া বেচাকেনার রাজনীতি, রাজস্থান নিয়ে খোঁচা অধীরের

সুদীক্ষার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, সোমবার তিনি ও তাঁর কাকা গৌতম বুদ্ধ নগরে তাঁদের গ্রামের বাড়ি থেকে বার হন। তাঁদের গন্তব্য ছিল সিকান্দ্রাবাদ। সেখানে স্কুল থেকে সুদীক্ষা দরকারি কিছু কাগজপত্র আনতে যাচ্ছিলেন। তাঁর পরিবারের সদস্য ওমকার ভাটি জানিয়েছেন, “ইভটিজাররা সুদীক্ষার প্রতি অশালীন মন্তব্য করছিল। তারা বাইক চালাচ্ছিল বিপজ্জনকভাবে।” সুদীক্ষার কাকা সতেন্দর ভাটি জানান, “বুলন্দশহর পেরিয়ে আমরা যখন গ্রামে ঢুকি, দু’টি বাইক আমাদের পিছু পিছু আসছিল। আচমকা বাইক দু’টি আমাদের ওভারটেক করে যায়। এক বাইকচালক নানা স্ট্যান্ট দেখাতে থাকে। আমি তখন বাইকের গতি কমিয়ে দিই। এই অবস্থায় অপর বাইকটি আমাদের ধাক্কা মারে। আমি ও সুদীক্ষা মাটিতে পড়ে যাই। সুদীক্ষার মাথায় আঘাত লাগে।” সতেন্দর জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরেই বাইক আরোহীরা পালিয়ে যায়। তিনি তাকে চিনতে পারেননি।

মেধাবিনী ছাত্রীর মৃত্যুতে বুলন্দশহরে ব্যাপক জনরোষ দেখা দেয়। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। বুধবার পুলিশ অফিসার সন্তোষ কুমার সিং বলেন, “মৃতের বাড়ির লোকজন ঠিক কথা বলছেন না। ওই ছাত্রী বিরাট অঙ্কের টাকা স্কলারশিপ হিসাবে পেতেন। তাঁর পরিবার এখন বিমার টাকা পেতে চাইছেন।”  বুলন্দশহর পুলিশের এসএসপি সন্তোষ কুমার জানান, ঘটনার দিন সুদীক্ষার কাকা বাইক চালাচ্ছিলেন না। ভাইয়ের সঙ্গে বাইকে করে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। অথচ তাঁদের কাছে দাবি করা হয়েছে কাকা বাইক চালাচ্ছিলেন। তিনি আরও জানান, যে সময় দুর্ঘটনা ঘটে সে সময় সুদীক্ষার কাকা সত্যেন্দ্র ভাটির মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ছিল দাদরি।সুদীক্ষার মৃত্যুর দু’ঘণ্টা পরে তিনি ঘটনাস্থলে হাজির হন।

সুদীক্ষা চার কোটি টাকার স্কলারশিপ পেয়েছে। পুলিশের অনুমান, সেই টাকা হাতাতেই হত্যার গল্প ফাঁদা হতে পারে। সন্তোষ কুমার জানিয়েছেন, এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ফেসবুক পোস্টে উস্কানির জেরে হিংসা, বেঙ্গালুরুতে সারারাত মন্দির আগলালেন মুসলিম যুবকরাই, ভাইরাল ভিডিও

Exit mobile version