Site icon The News Nest

করোনার ‘হটস্পট’ থেকে আসা প্রসূতিকে ভর্তিই নিল না NRS, মৃত্যু সদ্যোজাতের

nrs 2

কলকাতা: ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ‘ভয়’ দেখিয়ে বাড়ি পাঠানোর অভিযোগ উঠল এনআরএসের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে। আতঙ্কিত প্রসূতি হাসপাতালের বদলে নিজের বাড়িতে ফিরে শৌচাগারে পুত্রসন্তান প্রসব করলেন। যদিও সেই সন্তান বাঁচেনি। ঘটনার কথা স্বীকার করে তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।

শনিবার হাওড়া থেকে প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে NRS হাসপাতালে আসেন এক তরুণী। কিন্তু তিনি করোনার রেড জোন হাওড়া থেকে এসেছেন শুনেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন চিকিৎসকরা। অভিযোগ, অনেক অনুনয় বিনয়েও তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি। জানানো হয়, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সংক্রমণ ছাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তরুণীর অভিযোগ, তাঁর করোনার কোনও উপসর্গ নেই বলে জানালেও তাঁকে ভর্তি নিতে চাননি একদল চিকিৎসক। উলটে নানা কুকথা বলা হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত তরুণীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান স্বজনরা।এর পর তরুণীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন আত্মীয়রা। এরই মধ্যে প্রসব হয় তাঁর। মৃত্যু হয় সদ্যোজাতের। ঘটনায় হাসপাতালের সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন তরুণীর পরিবার।

আরও পড়ুন:  এক দিনে পজিটিভ ১৩২৯, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১৫ হাজার, মৃত বেড়ে ৫০৭

ওই প্রসূতি বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি মুহূর্তে আমাকে বলে যাচ্ছে, এখানে ভর্তির পরে আপনি ও আপনার সন্তানের করোনা হলে আমরা কেউ দায়ী থাকব না। আপনাকে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সঙ্গে থাকতে হবে! আমি নিজে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। চিকিৎসকেরা যে এত দুর্ব্যবহার করবেন ভাবিনি।’’ তরুণীর দাবি, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে নানা ভাবে তাঁকে বোঝানো হয়, ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হলে করোনা হবেই। শেষ পর্যন্ত মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত প্রসূতি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসেন। তরুণী বলেন, ‘‘বাড়িতে পৌঁছনোর পরে শৌচাগারে আমার প্রসব হয়ে গেল। আমার পুত্রসন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না। ওরা হাসপাতালে বারবার বলছিল, আমি, আমার বাচ্চা মরে গেলে কেউ দায়ী থাকবে না। বাচ্চাটা আমার মরেই গেল।’’

NRS হাসপাতালের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘ঘটনার কথা শুনেছি। অভিযোগ পেয়েছি। শনিবার কারা গাইনকোলজির জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া শাস্তি হবে।’ স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, বেশ কয়েকজন রেসিডেন্ট ডাক্তারকে অন্তত ৩ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হতে পারে এই ঘটনার জেরে। আগামিকাল, সোমবার অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত না করা যায়, তা হলে ইউনিট হেড এবং বিভাগীয় প্রধানকে দায়িত্ব নিতে হবে।’’

আরও পড়ুন:  মাস্ক পড়ুন, এবার ভিডিও বার্তা বিরাট- সৌরভ -সচিনদের

Exit mobile version