Site icon The News Nest

আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতারি নয়, সুপ্রিম আদেশে স্বস্তিতে অর্ণব

নয়াদিল্লি: কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীকে লাইভ টিভি শোতে অপমান করা হয়েছে, এই অভিযোগে মহারাষ্ট্রের প্রতিটি জেলায় জেলায় অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে আগেই পুলিশে এফআইআর দায়ের করেছিলেন যুব কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ। এবার জানা গেল, শুধু মহারাষ্ট্রে নয়, গোটা দেশজুড়েই কমপক্ষে হাজারটি মামলা দায়ের হয়েছে অর্ণবের বিরুদ্ধে। বাংলাও বাদ নয়। এত মামলার ফলে আশঙ্কা ঘনিয়েছে অর্ণবের গ্রেফতারির।

গতকাল, বৃহস্পতিবারই পাঁচটি রাজ্যে দায়ের করা এফআইআর-এর উপর স্থগিতাদেশের জন্য আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অর্ণব।আজ, শুক্রবার আদালতের নির্দেশে আপাতত তিন সপ্তাহের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। এর মধ্যে তিনি অগ্রিম জামিনের আবেদন করতে পারবেন। একই সঙ্গে সারা দেশজুড়ে নয়, একটি এফআইআরের ভিত্তিতে মানহানি মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্ণবের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মুম্বই পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

রিপাবলিক টিভির প্রধান সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী তার টিভি চ্যানেলে একটি লাইভ শো থেকে সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পালঘরে ঘটে যাওয়া সাধুদের ওপর গণহত্যার সমালোচনা করতে গিয়ে বলে বসেন, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী এই ‘হিন্দু’ সাধু হত্যায় খুশি হয়েছে। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে কংগ্রেসের সর্বস্তরের কর্মীরা।বুধবার যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রের প্রতিটি জেলায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। যুব কংগ্রেস নেতা সত্যজিৎ তাম্বে জানিয়েছেন, নিজের টিভি শোয়ের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ উস্কে দেওয়ার এবং মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে প্রতিটি জেলার মহারাষ্ট্র পুলিশকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার রাতে নিজের বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন তিনি, এমনটাই অভিযোগ করেছেন রিপাবলিক টিভি সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী। তাঁর দাবি, আক্রমণকারীরা স্বীকারও করেছে যে তারা কংগ্রেস দলের সমর্থক। কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে স্পষ্ট করেছেন, অর্ণবের দাবি করা ওই হামলায় কোনও কংগ্রেস কর্মী জড়িত নন।

আরও পড়ুন:  গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনার বলি ৩৭, মৃত বেড়ে ৭১৮! আক্রান্ত ছাড়াল ২৩ হাজার

এদিন অর্ণবের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন মুকুল রোহাতগি। মহারাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন কপিল সিবাল, রাজস্থানের পক্ষে ছিলেন মণীশ সিঙ্ঘভি, ছত্তিশগড়ের পক্ষে বিবেক তাঙ্খা। মুকুল বলেন যে তাঁর মক্কেল নিছকই পালঘরে পুলিশের উপস্থিতিতে হওয়া হত্যার কথা তুলে ধরেছিলেন। সেই রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও কংগ্রেস কিছু করেনি, সেই নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। অন্যদিকে কপিল সিবাল বলেন যে অর্ণব সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়েছেন, হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ঘটাতে চেয়েছেন। তাই পুলিশের তদন্ত করা উচিত। ছত্তিশগড়ের কৌঁসুলী বলেন টিভি লাইসেন্সের অপব্যবহার করছেন অর্ণব।তাঁকে এরকম প্রচার করা থেকে নিরস্ত করা উচিত। রিপাবলিক টিভির সঞ্চালকের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রিপোর্টিংয়ের অভিযোগ করে রাজস্থানও।

এর জবাবে অর্ণবের উকিল বলেন যে সঞ্চালক তো শুধু সাধু হত্যার কথা তুলেছেন। এতে হিন্দু-মুসলমান আসছে কোথা থেকে। আদালত জানিয়েছে, অর্ণবের বিরুদ্ধে আপাতত তিন সপ্তাহ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না ২১ তারিখ তাঁর টিভি প্রোগামে বলা উক্তির বিষয়ে। শুধু নাগপুরে দায়ের করা এফআইআরটির শুনানি হবে। কিন্তু নাগপুরে নয়, মুম্বইয়ের এনএম যোশী পুলিশ স্টেশনে সেটিকে ট্রান্সফার করতে হবে, বলে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পার্টিকে নোটিসও পাঠাবে জানায় শীর্ষ আদালত।

আরও পড়ুন:  পালঘর সাধু হত্যা কাণ্ডে সাম্প্রদায়িক রং দেবার চেষ্টা, খারিজ করলেন উদ্ধব

Exit mobile version