Site icon The News Nest

‘কেউ বহিরাগত নয়, সবাই ভারতমায়ের সন্তান’, বললেন NRC ইস্যুতে ব্যাক ফুটে থাকা মোদি

modi bohioragoto

এনআরসি করে একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে ‘বহিরাগত’ বলে দেগে দিতে চাইছেন তিনি। অথচ নিজে ব্যস্ত ‘বহিরাগত’ তকমা মুছতে। তৃণমূলের লাগাতার বহিরাগত আক্রমণের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ‘সবাই ভারত মাতার সন্তান’।

এ বারের ভোটে বিজেপি-র বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ‘বহিরাগত’। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা-সহ কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের এক ঝাঁক নেতা-মন্ত্রীকে এ রাজ্যে প্রচারে নামিয়েছে বিজেপি। এ রাজ্যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকও মধ্যপ্রদেশের নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এই নেতাদের কটাক্ষ করেই বহিরাগত বলে আক্রমণ শানাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের প্রায় সর্বস্তরের নেতারা।

এ নিয়ে আগেও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার কাঁথির সভা থেকে ফের সেই আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়ে মোদীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যে পশ্চিমবঙ্গ পুরো ভারতবাসীকে বন্দে মাতরম-এর মন্ত্র শিখিয়েছে, দিদি, সেই বাংলায় দাঁড়িয়ে বহিরাগত বলছেন?’’ বাংলার মনীষীদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মোদী বলেন, ‘‘বঙ্কিমচন্দ্র, বলেছেন, আমরা সবাই ভারতমাতার সন্তান। এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নয়। সবাই ভারতমাতার সন্তান।’’ জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতার প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, ‘‘বাংলা থেকে গুরুদেব সব ভারতবাসীকে এক মালা পরিয়েছিলেন, এই বাংলা থেকেই যে গুরুদেব পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাত মারাঠা… বলেছিলেন, আমরা সব সময় সেটা বলি। সেই বাংলায় আপনি বহিরাগতর কথা বলছেন দিদি?’’

আরও পড়ুন: ব্রজ-বরসানায় শুরু রঙের উৎসব, জানুন কোন দিন কোন হোলি, কবে খেলা হবে লঠমার হোলি

এ ভাবে কাউকে পর্যটক বা বহিরাগত বলা যে বাংলার কাছেই অসম্মানের সেটা বোঝাতে মোদী বলেন, ‘‘পর্যটক বলা হচ্ছে, বহিরাগত বলা হচ্ছে। এটা তো বাংলার অপমান। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ভূমিতে কাউকে বহিরাগত হিসেবে দেখতেন না।’’

বহিরাগতর সূত্রেই তৃণমূলের ভোটপ্রচারে অন্যতম স্লোগান, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। তৃণমূল নেতারা লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন, দিল্লি থেকে এসে কেউ বাংলা শাসন করবে না। এর উত্তরে মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরে রোড শো-এর ফাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বাংলার ভূমিপুত্র। সেই কথাই শোনা গিয়েছে মোদীর মুখেও। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় আপনারা যে বিজেপি-র সরকার বানাতে চলেছেন, তার মুখ্যমন্ত্রী এখানকার ভূমিপুত্রই হবেন।’’

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য শেষ হওয়ামাত্রই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সভা থেকে পাল্টা উত্তর দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “যাঁরা বাংলায় থাকেন, তিনি রাজস্থানী, গুজরাটি বা যাই হোন না কেন, তাদের আমরা বহিরাগত বলি না। উত্তরপ্রদেশ থেকে যে গুন্ডাদের পাঠানো হচ্ছে গেরুয়া পোশাক পরিয়ে তাঁদের বহিরাগত বলি।”

এদিনের সভা থেকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি-সহ কেন্দ্রের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে সভা মঞ্চ থেকে সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এতো মিথ্যাবাদী ভাবতে পারি না। কী দিয়েছে বিজেপি? ১৫ লক্ষ টাকা কেউ পেয়েছেন?”

এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি কন্যাশ্রী দিয়েছি, রূপশ্রী দিয়েছি, স্বাস্থ্যসাথী দিয়েছি,। তাই বলছি কে প্রার্থী দেখবেন না। ভাবুন সব কেন্দ্রে আমি প্রার্থী। জোড়া ফুলে ভোট দিন। মনে রাখবেন, তৃণমূল না জিতলে আমি সরকারটা করতে পারবো না। দুয়ারে রেশন পাবেন না। বিজ্রেপি এলে ঘর বাড়ি কেড়ে নেবে। বহিরাগত গুন্ডারা এলে মা, বোনেরা হাতা, খুন্তি নিয়ে জবাব দেবেন।”

আরও পড়ুন: ভাল সম্পর্ক চাই, ইমরানকে চিঠি দিলেন মোদী

Exit mobile version