উৎসবের মরশুমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে কীরকম ভয়াবহ ভাবে ছড়াতে পারে তা হাতেনাতে প্রমাণিত হয়েছে কেরলে। বাংলায় দুর্গোৎসব নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে শুরু করে কলকাতার চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশের উদ্বেগ ছিলই।
সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে সোমবার ঐতিহাসিক রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ ব্যাপারে মামলার রায়ে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাংলায় সব পুজো মণ্ডপ দর্শকশূণ্য রাখতে হবে। ছোট মণ্ডপ হলে তার ৫ মিটারের মধ্যে এবং বড় মণ্ডপ হলে তার ১০ মিটারের মধ্যে কোনও দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না। হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মণ্ডপের শেষ প্রান্ত থেকে ফিতে মেপে ওই বলয় তৈরি করতে হবে। কোনও বড় মণ্ডপের বাইরে কোনও গেট তৈরি হলে সেটাকেই মণ্ডপের শেষ প্রান্ত বলে বিবেচনা করতে হবে। উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ সব পুজো মণ্ডপকে কনটেইনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করতে হবে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ নয় ব্যাঙ্কের লকারও, বর্ধমানে উধাও প্রায় ৭০ ভরি গয়না, নীরব কর্তৃপক্ষ
কোভিড অতিমারি পরিস্থিতিতে আদৌ পুজোর অনুমতি দেওয়া সঙ্গত কি না তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে হওয়া মামলায় এ দিন হাইকোর্ট সমস্ত মন্ডপকে ‘নো এন্ট্রি’ জোন হিসাবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে। এ দিন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় মামলার শুনানির সময়ে বলেন,‘ আজকের খবরের কাগজে যে ছবি দেখেছি তা আশঙ্কা তৈরি করেছে।” বিচারপতি এ দিন মন্তব্য করেন, ‘‘অতিমারি রোখার জন্য যে গাইডলাইন রয়েছে তাতে সদিচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু তার বাস্তবে কোনও প্রয়োগ নেই।’’
হাইকোর্টের বিচারপতিরা আরও বলেছেন, আদালত যে রায় দিল তা বড় বড় করে লিখে প্রতিটি পুজো মণ্ডপের বাইরে ঝোলাতে হবে। প্যান্ডেলের মধ্যে পুজো কমিটির লোকও বেশি ঢুকতে পারবে না। সর্বোচ্চ ২৫ জন ঢুকতে পারবেন। সেই তালিকা রোজ বদল করা যাবে না। এই তালিকাও মণ্ডপের বাইরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
এদিন পুজো নিয়ে হাইকোর্ট যেসব নির্দেশ দিয়েছে তা ঠিকভাবে পালন করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে লক্ষ্মীপুজোর পরে ডিজি ও কমিশনারকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। যে পুজো উদ্যোক্তারা কোভিডবিধি মেনে দর্শনার্থীদের মণ্ডপে ঢুকতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হাই কোর্টের রায়ে মনমরা তাঁরা।
আরও পড়ুন: মমতাকে পুজোয় উপহার পাঠালেন শেখ হাসিনা, দিলেন শাড়ি, মিষ্টি ও ফুল