Site icon The News Nest

সন্তানের মৃত্যু, লকডাউনে সর্বস্বান্ত, মহালয়ার সকালে চারুমার্কেটে আত্মঘাতী দম্পতি

suicide

মাস ছয়েক আগে মৃত্যু হয়েছিল শিশুসন্তানের। তার পর লকডাউন শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা। অবসাদে আত্মঘাতী হলেন এক দম্পতি। মহালয়ার দিন ঘটনাটি ঘটেছে চারু মার্কেট থানা এলাকার KMDA আবাসনের শীর্ষতলে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে নিহতরা অরিজিৎ দত্ত (৩২) ও সুপর্ণা দত্ত (৩০)। বৃহস্পতিবার আবাসনের ছাদ থেকে উঁকি দিয়ে তাঁদের দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। এর পর খবর যায় পুলিশে।

প্রাথমিক তদন্তে খবর, এ দিন অনেক বেলা পর্যন্ত ওই দম্পতি ঘরের দরজা না খোলায় কয়েকজন প্রতিবেশী এবং বাড়ির মালিক দরজায় ধাক্কা দেন। আবাসনের পাঁচতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন ওই দম্পতি।  কিন্তু বেশ কয়েকবার ডাকাডাকির পরও সাড়া না পাওয়ায় তাঁরা সন্দিহান হন। জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে অরিজিতের দেহ। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। অরিজিৎ এবং সুপর্ম্পূনা দু’জনকেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:  ফের নিম্নচাপ, রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি, জারি কমলা সতর্কতা

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনের দেহই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সুপর্ণার বাবা কৃষ্ণ সরকার। চেতলা রোডে তাঁর বাড়ি।তিনি বলেন, তিন বছর আগে অরিজিতের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। জামাই অ্যাপ ক্যাব চালাতেন। দম্পতির একটি সন্তান হয়েছিল। কয়েক মাস আগেই চার মাস বয়সে সেই সন্তানের মৃত্যু হয়। কৃষ্ণের দাবি, মেয়ে-জামাইয়ের সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। আত্মহত্যার কোনও কারণ নেই। তবে গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দম্পতির মৃত্যু আপাত ভাবে আত্মহত্যার কারণে বলেই মনে করা হচ্ছে। একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার আগে চূড়ান্ত ভাবে কিছু বলা যাবে না।

তবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন লকডাউনের ফলে অনটনের মধ্যে দিয়ে চলছিলেন ওই দম্পতি। বেশ কয়েক মাস ফ্ল্যাটের ভাড়াও দিতে পারেননি। সুইসাইড নোটে এমন কিছু উল্লেখ নেই যা থেকে আত্মহত্যার কারণ স্পষ্ট হয়। নিহত অরিজিতের মা জানিয়েছেন, ‘অনেক টাকা বাজারে ঋণ হয়ে গিয়েছিল ছেলের। লকডাউন উঠে যাওয়ায় পাওনাদাররা টাকা চাইছিল। কিন্তু গাড়ির ব্যবসায় মন্দা চলায় টাকা শোধ দিতে পারছিল না ছেলে।’প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রথমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন অভিজিৎ। স্বামীর ঝুলন্ত দেহ নামিয়ে রেখে আত্মঘাতী হন স্ত্রী।  চারু মার্কেট থানার পুলিশ এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।

আরও পড়ুন: করোনায় মৃতদের দেহ তুলে দেওয়া যাবে পরিবারের হাতে, রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট

Exit mobile version