Site icon The News Nest

সুদীপ্ত সেনের চিঠি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত! খতিয়ে দেখার দাবিতে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ শুভেন্দু, আদালতে কুণাল

আলিপুর জেলে বন্দি সুদীপ্ত সেনের লেখা চিঠির তদন্ত চেয়ে এ বার সিবিআই ডিরেক্টরকে চিঠি লিখলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, সারদা চিটফান্ড কর্তা সুদীপ্তর ওই চিঠি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে আমার ইস্তফা, তার পর সেই চিঠি লেখা এবং মিডিয়ার হাতে তা পৌঁছে দেওয়ার ঘটনাপ্রবাহ দেখেই আমার মনে ঘোর সন্দেহ হচ্ছে। এবং তা এই যে অতি প্রভাবশালীদের সঙ্গে জেল কর্তৃপক্ষ যোগসাজস করে জোর করে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে ওই চিঠি লেখানো হয়েছে। সুতরাং ওই চিঠি যেন যথাযথ ভাবে তদন্ত করে দেখা হয়।

বুধবার সিবিআইয়ের রিজিওনাল ডিরেক্টর ও কেন্দ্রীয় ডিরেক্টরকে চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘সারদাকাণ্ডের তদন্তে অযাচিত হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করছি। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানতে পেরেছি সারদাকাণ্ডে জেলবন্দি অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন বহু বছর পর হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। তাতে তাঁর কাছ থেকে ৫ জন রাজনীতিবিদ প্রচুর টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।’ তবে কে বা কারা অযাচিত হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা তা এখনো প্রকাশ্যে আসেনি। তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেই যে এই চিঠি লেখা হয় যেখানে তাঁর নাম উল্লেখিত আছে, সেই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়েছেন শুভেন্দু।

শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, যে পাঁচ রাজনীতিবিদের নাম সুদীপ্ত সেন তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তাঁদের কারও নামই সারদাকাণ্ডের চার্জশিটে ছিল না। এমনকী গোটা তদন্তপ্রক্রিয়ায় সারদাকর্তা কখনও তাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি। শুভেন্দুর ইঙ্গিত ২০২১-এর নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলির নেতাদের চাপে রাখতেই সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে তাঁদের নাম লিখিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

আরও পড়ুন: বড়দিনের কেক থেকে নলেন গুড়ের পিঠে… এবার এক ফোনেই পৌঁছে যাবে আপনার বাড়িতে

এদিকে বিষয়টিকে কোর্টের নথির অন্তর্ভুক্ত করেছেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। সিবিআই ও রাজ্য সরকারের দুই মামলায় এই চিঠির কপি কেস রেকর্ডে ঢুকিয়ে কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, এটা কি সত্যি সুদীপ্ত সেনের লেখা? যদি তা হয়, তবে তার সত্যতা খতিয়ে দেখা হোক। কারণ সুদীপ্ত সেন এই প্রথম হিসাব বহির্ভূত নগদ অর্থের কথা বলেছেন। যে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা দরকার।

উল্লেখ্য, সারদা চিটফান্ড ব্যবসা চালানোর জন্য কাকে কত পরিমাণ অর্থ দিয়েছিলেন, চিঠিতে সে কথাই জানিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন। সেখানেই ছিল শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়-সহ পাঁচজনের নাম। সুদীপ্ত সেনের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী ৬ কোটি, অধীর চৌধুরী ৬ কোটি, সুজন চক্রবর্তী ৯ কোটি এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ২ কোটি টাকা নানা সময় তাঁর থেকে নিয়েছেন। তবে মুকুল রায়কে দেওয়া অর্থের পরিমাণ লেখা নেই সেখানে। চিঠিতে সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার অনুরোধও জানিয়েছিলেন সারদা কর্তা। বিস্ফোরক এই চিঠি সামনে আসার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী সাফ জানান, তিনি কোনও ‘চোরে’র কথার উত্তর দেবেন না। সারদা কর্তার দাবি হাস্যকার বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। এবার চিঠির ভিত্তি খতিয়ে দেখতে সিবিআইকে আবেদন জানালেন শুভেন্দু অধিকারী।

আরও পড়ুন: ‘বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান’, বিজেপির টুইটে টিপ্পনি তৃণমূলের

Exit mobile version