Site icon The News Nest

মোদীকে পাঁচ পৃষ্ঠার কড়া চিঠি মমতার, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আলাপনকে ছাড়া যাবে না

mamata alapan modi

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়ছে না রাজ্য সরকার। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কেন্দ্রের নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপনকে দিল্লিতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু আলাপনকে ছাড়ছে না রাজ্য।

কেন্দ্রের কর্মিবর্গ মন্ত্রক প্রধানমন্ত্রীর অধীনে রয়েছে। বস্তুত, ইন্দিরা গান্ধীর জমানা থেকে সেটাই প্রায় দস্তুর। সম্ভবত সেই কারণে প্রধানমন্ত্রীকেই সরাসরি চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ প্রসঙ্গে শনিবার দীর্ঘ সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে তিনি সেদিন যে কথাগুলি বলেছিলেন, মোটামুটি ভাবে পাঁচ পৃষ্ঠা দীর্ঘ চিঠিতে সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন। পরতে পরতে বোঝাতে চেয়েছেন, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর শতর্কে লঙ্ঘন করছে। অসৎ উদ্দেশে, মাথা গরম করে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন: ৩ জুন বর্ষা ঢুকছে কেরলে, বঙ্গে কবে থেকে শুরু বৃষ্টি?

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, চার দিন আগেই মুখ্য সচিব পদে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কী এমন হয়ে গেল যে তাঁকে দিল্লিতে বদলি করতে হল। নিয়ম ও আইন মেনে এবং কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতেই মুখ্য সচিবের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। বরং এখন যে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আমাদের মতে তা আইন অনুযায়ী হয়নি। তাই আবেদন করছি, তা যেন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। অভূতপূর্ব এই পদক্ষেপে অবাক হয়েছি।  রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিতে মুখ্যসচিবের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। তাই রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে এই মুহূর্তে কেন্দ্রের এই নির্দেশ প্রত্যাহার করার আর্জি জানাচ্ছি’। একই সঙ্গে মমতা লেখেন, ‘রাজ্য কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই সময় কোনও মতেই মুখ্যসচিবকে ছাড়া সম্ভব নয়’।

মমতা লেখেন, ‘এই নির্দেশিকা ১৯৫৪ সালের ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ (ক্যাডার) নিয়মের পরিপন্থী। এই সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিকও বটে। আমি আশা করছি আপনি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কোনও ক্ষতি চাইবেন না। আমি এটাও আশা করছি, বিভিন্ন রাজ্যে যে সব আমলারা কাজ করেন তাঁদের মনোবল তলানিতে চলে যায় এমন কোনও সিদ্ধান্ত আপনি নেবেন না। আমি বুঝতে পারছি না, কিছু দিন আগে মুখ্যসচিবের মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নিয়েছিল এবং সেই সিদ্ধান্তের কথা রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই হয়েছিল। তার পর কী এমন হল যাতে সেই সিদ্ধান্ত বদলে গেল। যে একতরফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তাতে আলাপনকে কেন বদলি করা হল তার কোনও কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।

চিঠিতে কলাইকুন্ডার প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন মমতা। তিনি লেখেন, ‘২৮ মে কলাইকুন্ডার বৈঠকের পরেই কি এই সিদ্ধান্ত হয়েছে? যদিও আমি বিশ্বাস করি কলাইকুন্ডার বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যদি সেটা হয় থেকে তাহলে তা হবে খুবই দুঃখজনক, অনভিপ্রেত। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভুল বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং এর ফলে জনস্বার্থ বিঘ্নিত হবে’।

আরও পড়ুন: মুখাগ্নির ঠিক আগেই নড়েচড়ে উঠলেন ‘মৃত’ বৃদ্ধা, শোরগোল পাণ্ডবেশ্বরে

Exit mobile version