Site icon The News Nest

মা, বাবা-সহ পরিবারের ৪ সদস্যকে ‘খুন’, মালদহে গ্রেফতার যুবক

malda scaled

মা, বাবা, ঠাকুমা ও বোন, পরিবারের চার সদস্যকে খুন করে মাটির তলায় পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠল ছোটো ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বড় ছেলে। শনিবার একই পরিবারের চারজনের রহস্যজনকভাবে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের কালিয়াচকের পুরাতন ষোলো মাইল এলাকায়। দাদা আরিফের (২১)’‌র অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ভাই আসিফ মহম্মদ (১৯)কে গ্রেফতার করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। পুলিশি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে অভিযুক্ত।

দুই ভাইকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ফলের রসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিল আসিফ। সেই রস খেয়েছিলেন আসিফের পরিবারের সকলে। ওই রস খেয়ে বাবা, মা, ঠাকুমা, বোনের মতো অচৈতন্য হয়েছিলেন আরিফও। পুলিশ জানিয়েছে, ওষুধ মেশানো ফলের রস খেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়ার পর বাবা, মা, বোন এবং ঠাকুমাতে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তার পর বাড়ির মধ্যে মাটির নীচে থাকা জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় দেহ।

২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সে ভাবেই জলের ট্যাঙ্কে পড়েছিল আসিফের মা ইরা বিবি, বাবা জাওয়াদ আলি, বোন আরিফা খাতুন এবং ঠাকুমা আলেকজান খাতুনের দেহ।। শনিবার বিষয়টি সামনে আসার পর উদ্ধার হয়েছে আসিফের পরিবারের লোকের কঙ্কাল। সে গুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনা নিয়ে মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেছেন, ‘‘আসিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরিফকেও আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।’’ কালিয়াচকের পুরনো ১৬ মাইল এলাকার ওই বাড়ির মধ্যে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড জলের ট্যাঙ্ক। সেখান থেকেই কঙ্কালগুলি উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে ভাসছে বাংলা! আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

পুলিশের দাবি, জেরায় আসিফ তাদের জানিয়েছে, টাকার জন্য খুন করেছেন তিনি। নিছকই টাকার জন্য, নাকি অন্য কিছু? সেই তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়েই পুলিশ জানতে পেরেছে যে, আসিফ এক জন দক্ষ হ্যাকার। সাইবার অপরাধের জন্য মাস দুয়েক আগেও তাঁকে আটক করেছিল পুলিশ। বিটকয়েন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বিট কয়েন জুয়ার মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি পরিবারের সদস্যদের কাছে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা দাবি করে আসিফ। তাকে টাকা দেওয়ার জন্য কয়েক বিঘা লিচুবাগান এবং দু’টি লরি বিক্রি করে দেয় তার বাবা। কিন্তু তাতেও আসিফের চাহিদা মেটেনি। ফলে সে আরও টাকা দাবি করে। পরিবারের সদস্যরা সেই টাকা দিতে না পারায় এই খুন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

অ্যাপ বানানোর নামে আসিফ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি কিনেছিল। সূত্রের খবর তাঁর ল্যাপটপে প্রচুর নৃশংস ঘটনার ভিডিও পাওয়া গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে সে নিয়মিত পড়াশোনা করত। দেখা যাচ্ছে, ডার্ক ওয়েবে যে সমস্ত ব্রাউজার ব্যবহার করা হয় তাতে বিটকয়েন ব্যবহার করা যায়। এই বিটকয়েন ভারতবর্ষে ব্যবহার নিষিদ্ধ কিন্তু দেখা যাচ্ছে আসিফ বিটকয়েন ব্যবহার করে বিভিন্ন গেমিংয়ের টাকা। এই কারণেই সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে পুলিশের।

আরও পড়ুন: আকাশের মুখ ভার, এখনই কমবে না বৃষ্টি, বাংলার জেলাগুলির আবহাওয়া পূর্বাভাস

Exit mobile version