Site icon The News Nest

স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে গাড়িচালককে বিয়ে , অভিযোগ অস্বীকার বিজেপি বিধায়কের

chandana bauri scaled

বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ উঠল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর গাড়ির চালককে বিয়ে করেছেন চন্দনা। সেই মর্মে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিযুক্ত গাড়িচালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর স্ত্রী রুম্পা কুণ্ডু। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চন্দনা। স্বামী শ্রবণের সঙ্গে পারিবারিক গোলমালকেই রাজনৈতিক উদ্দেশে অন্য কারণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এ নিয়ে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘রুম্পা কুণ্ডু একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় তদন্ত ও পদক্ষেপ করব।’’

বিধানসভার টিকিট পাওয়ার পর থেকেই সকলের নজরে ছিলেন চন্দনা বাউরি। কারণ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া চন্দনাকে ভোটের ময়দানে দেখে কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন সকলে। তবে দলের ভরসার সম্মান রেখেছিলেন তিনি। মানুষের স্বার্থে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে ঝড়-জল উপেক্ষা করে মানুষের কাছে পৌঁছেছিলেন তিনি। ভোটে জিতেওছেন। এরপরই স্বপ্ন দেখেছিলেন সংসার ও এলাকার মানুষদের নিয়ে সুস্থ জীবনযাপনের। কিন্তু গাড়ি চালকের সঙ্গে সম্পর্কই পালটে দিল শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউরির জীবন। ব্যাপারটা ঠিক কী? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে পালটাতে থাকে চন্দনার জীবনযাত্রা। অল্প সময়ের মধ্যে নিজের গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বিধায়ক।

জানা গিয়েছে, স্বামী ও দুধের সন্তানের কথা চিন্তা না করেই বুধবার রাতে লুকিয়ে বিবাহিত প্রেমিক কৃষ্ণকে বিয়ে করেন চন্দনা। তারপর এক সঙ্গেই ছিলেন তাঁরা। কোনওভাবে বিষয়টি জানতে পারেন চন্দনার প্রথম স্বামী। কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে গঙ্গাজলঘাঁটি থানায় যান তিনি। তবে অভিযোগ দায়ের করেননি। এরপরই চন্দনা ও কৃষ্ণের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তাঁদের ডেকে পাঠায় থানায়। বৃহস্পতিবার নবদম্পতি থানায় যান। এদিকে কৃষ্ণের স্ত্রীও পুলিশের দ্বারস্থ হন। জানা গিয়েছে, এরপরই প্রথম স্বামীর সঙ্গে চন্দনাকে বাড়িতে ফেরত পাঠায় পুলিশ।

বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে চন্দনার বিরুদ্ধে। গাড়িচালক কৃষ্ণর স্ত্রী রুম্পার দাবি, বুধবার রাতে চন্দনা এবং কৃষ্ণা বিয়ে করেছেন। পুলিশের একাংশের দাবি, বিবাহের বিষয়টি নাকি পুলিশের কাছে চন্দনা স্বীকার করেছেন। যদিও চন্দনার দাবি, তিনি একেবারেই তা বলেননি। পুলিশের একাংশের ওই দাবি অসত্য। প্রসঙ্গত, চন্দনা এবং কৃষ্ণ দু’জনেই নিজের নিজের জীবনে বিবাহিত। তাঁদের সন্তানও রয়েছে। অভিযোগ পেয়ে গঙ্গাজলঘাটি থানার পুলিশ চন্দনা ও কৃষ্ণর বিরুদ্ধে ৪৯৮-এ ধারায় বধূ নির্যাতনের মামলা রুজু করেছে।এ ছাড়াও,৫০৬ ধারায় দু’জনের বিরুদ্ধেই ভয় দেখানোর অভিযোগও আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ২০২২ থেকেই নিষিদ্ধ হচ্ছে প্লাস্টিক, ইয়ার বাডস থেকে আইসক্রিম স্টিক সবই বাতিলের খাতায়!

এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন দলের নেতা-কর্মীরা। নেত্রীর এহেন আচরণ মেনে নিতে পারছেন না কেউ। যদিও বিষয়টি ভিত্তিহীন বলেই দাবি  চন্দনার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে।স্বামীর সঙ্গে সামান্য ঝামেলা হয়েছিল তাঁর। সেই ক্ষোভেই পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁর স্বামী। যদিও বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার দ্বিতীয় বিবাহের ঘটনাটি সত্য বলে জানিয়েছন।

বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও চন্দনার দল বিজেপির স্থানীয় নেতা রাজু তেওয়ারি আবার দাবি করেন, গাড়িচালক কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে চন্দনার। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার যুব সম্পাদক বলেন, ‘খবর পেলাম, ওঁনার ড্রাইভারের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। কৃষ্ণ বলে একজনের সঙ্গে হয়ত অনেকদিনের সম্পর্ক ছিল। তাঁদের মানসিকতা এরকম হয়ত। তাই হয়ত এরকম করেছেন। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। দলের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। এটা ব্যক্তিগত বিষয়। হয়ত মানুষের মনে একটা বিষয় হবে। তবে আমার মনে হয় না, এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক আছে।’

আরও পড়ুন: রাজ্যে ‘ভোট পরবর্তী অশান্তি’ মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

Exit mobile version