Site icon The News Nest

Bangladesh: ‘বরিষ ধরার মাঝে শান্তির বারি’…শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় ঢাকায় শেষ হল মঙ্গল শোভাযাত্রা

mongol shobhajatra 3

শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাহারি রঙের পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরে এতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। শুক্রবার সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবার চারুকলায় গিয়ে শেষ হয়।

ইউনেস্কো কর্তৃক ‘মানবতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান ছিলরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বরিষ ধরার মাঝে শান্তির বারি’ গানটি।  বাংলা বর্ষবরণে ওপার বাঙালির নানা আয়োজনের মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা অন্যতম। গত তিন দশক ধরে প্রতি বছরই পয়লা বৈশাখে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হচ্ছে। ২০১৬ সালে ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায় এই শোভাযাত্রা।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রধান আকর্ষণ মায়ের কোলে শিশু এবং নীলগাই। মায়ের কোলে সন্তান যেমন নিরাপদ প্রতীকীভাবে বৈশ্বিক শান্তির বার্তা রয়েছে সেখানে। এ ছাড়া বিপন্ন হারিয়ে যাওয়া প্রাণীদের প্রতীকী হিসেবে রাখা হয়েছে নীলগাই। এ ছাড়াও আছে বাঘ, ময়ূর, ভেড়া ও হরিণ, পায়রা। বাঙালির বর্ষবরণে অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয় সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান ও চারুকলার শিক্ষার্থীদের ফান্ড রাইজিংয়ের ওপর নির্ভর করে আয়োজন করা এটি। গত ১৯ মার্চ থেকে ফান্ড রাইজিং ক্যাম্পেইন শুরু হয়।

এর আগে, ভোরের নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে আহির ভৈরব সুরে সারেঙ্গি বাদনের মধ্য দিয়ে রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই যাত্রা শুরু হয় নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয় পহেলা বৈশাখ।

আরও পড়ুন: Joe Biden: রমজানের শুভেচ্ছাবার্তা জানালেন বাইডেন, সংহতি জানালেন উইঘুর-রোহিঙ্গাদের প্রতি

এদিকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন।

বৈশাখী উদযাপনের ইতিহাস কয়েকশ বছরের পুরনো হলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের পহেলা বৈশাখে যশোরে। তখন দেশে ছিল সামরিক শাসন। উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি উপস্থাপনের মাধ্যমে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। আর সেই শোভাযাত্রায় অশুভের বিনাশ কামনা করে শুভশক্তির আগমনের প্রার্থনা করা হয়। এর উদ্যোগ নিয়েছিলেন চারুশিল্পী মাহবুব জামাল শামিম।  তবে শেষ পর্যন্ত যশোরে সীমাবদ্ধ থাকেনি মঙ্গল শোভাযাত্রা।

১৯৮৯ সালে পহেলা বৈশাখে ঢাকার চারুকলা থেকেও শুরু হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুরুতে এর নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ ছিল। তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থাকে মাথায় রেখেই এমনটা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হিসেবেই পরিচিত হয়। সেই শোভাযাত্রার মূলভাব ছিল অগণতান্ত্রিক শক্তির বিনাশ।

আরও পড়ুন: Dalai Lama: নাবালককে ঠৌঁটে চুম্বন, জিভ চুষতে বললেন দলাই লামা, ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই জোর বিতর্ক

Exit mobile version