স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আগেই সুশান্ত সিংহ রাজপুতের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন সুশান্ত ভক্তরা। এ বার রিয়ার বিরুদ্ধে পটনার রাজেন্দ্রনগর থানায় এফআইআর দায়ের করলেন খোদ সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা কেকে সিং। শুধু রিয়াই নন, বিহার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এফআইআর-এ রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী-সহ পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যের নাম রয়েছে।
পটনা সেন্ট্রাল জোনের আইজিমঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, “রিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা), ৩৪১ এবং ৩৪২(জোর করে ধরে রাখা), ৩৮০ (বাড়ির জিনিস চুরি), ৪০৬ (চুক্তিভঙ্গ) এবং ৪২০ (প্রতারণা) ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ গত শনিবার দায়ের করা হয়েছে এই এফআইআর। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই বিহার পুলিশের চার জনের একটি দল মুম্বই পৌঁছেছে। প্রয়োজনে মুম্বই পুলিশকে মহিলা পুলিশের ব্যবস্থা করার জন্যও জানিয়েছে তারা।
সুশান্তের বাবা,কেকে সিংয়ের দায়ের করা এফআইআরে নাম উল্লেখ রয়েছে রিয়া চক্রবর্তী, তাঁর বাবা ইন্দ্রজিত্ চক্রবর্তী, মা সন্ধ্যা, বোন শ্রুতি, ভাই শৌভিক চক্রবর্তীর। তাঁরা নানাভাবে সুশান্তের উপর মানসিক ও আর্থিক নির্যাতন চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। সুশান্তের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৭ কোটি টাকা সরিয়েছে রিয়া ও তাঁর পরিবার। সুশান্তের এটিএম এবং ক্রেডিট কার্ডের কন্ট্রোল ছিল রিয়ার হাতে। প্রয়াত অভিনেতার দুটি অ্যাকাউন্ট (কোটাক ও মহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক) সম্পূর্ন খালি করেছে রিয়া,সেই টাকা গিয়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে।
আরও পড়ুন: ‘তোমার বাবার পরিচয় বোধহয় জানো না’…ট্রোলের জবাবে নজিরবিহীন কুকথা বিগ-বি’র!
অর্গানিং ফার্মিংয়ে টাকা বিনিয়োগে ইচ্ছুক ছিলেন সুশান্ত, যদিও অভিনেতার এই ইচ্ছায় সায় ছিল না রিয়ার, দীর্ঘ পাঁচ পাতার এফআইআর কপিতে জানিয়েছেন কেকে সিং। দাবি করা হয়েছে, সুশান্তকে হুমকি দিচ্ছিলেন রিয়া,যে তাঁর সমস্ত মেডিকাল সমস্যা সংক্রান্ত প্রেসক্রিপশন মিডিয়ায় ফাঁস করে দেবেন তিনি। সুশান্তের দুটি কোম্পানিতে ডিরেক্টর পদে আছেন রিয়া চক্রবর্তী,একটিতে নাম রয়েছে অভিনেত্রীর ভাইয়েরও। সেই দুটো কোম্পানিতেই মোটা টাকা লগ্নি করেছিলেন সুশান্ত। রিয়ার বিদেশ ভ্রমণের যাবতীয় খরচও মেটাতেন তিনি, বলছে সুশান্তের পরিবার।
১৪ জুন সুশান্তের আত্মহত্যার দুদিন আগেই নাকি সুশান্তের ল্যাপটপ এবং সমস্ত গহনা নিয়ে চলে যান রিয়া। কৃষ্ণা কুমার সিং বলেছেন, সুশান্ত তাঁর একমাত্র ছেলে ছিল। জেনে বুঝে সুশান্তকে পরিবারের কাছ থেকে দূরে রাখতেন। নানাভাবে সুশান্তকে শোষণ করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন রিয়া। এর আগে তাঁকে জেরা করে মুম্বই পুলিশ জানতে পেরেছিল, সাম্প্রতিক ইয়োরোপ টুরে সুশান্তের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেছিলেন রিয়া। অভিনেতার এক দেহরক্ষীকেও বহিষ্কার করেছিলেন তিনি।
গত ১৪ জুন বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানের জন্য এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০ জনকে জেরা করেছে মুম্বই পুলিশ। এঁদের মধ্যে রিয়া ছাড়াও রয়েছেন পরিচালক মহেশ ভাট, সঞ্জয় লীলা বনশালি, করণ জোহর -সহ বলিউডের নামজাদা ব্যক্তিরা। যদিও এই মামলায় কোনওরকম ফাউল প্লে’র সম্ভাবনা দেখছে না মুম্বই পুলিশ। সুশান্ত যে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন তা নিশ্চিত করেছে পুলিশ। যদিও সূত্রের খবর এই ডিপ্রেশন থিয়োরি নিয়ে খুব বেশি সন্তুষ্ট নয় প্রয়াত অভিনেতার পরিবার।
আরও পড়ুন: জোনস পরিবারে এল নতুন সদস্য, মা হলেন ‘গেম অফ থ্রোনস’ খ্যাত সোফি টার্নার