লাগাতার আক্রমণের পর এবার অসহযোগিতার নজির দেখাল বিপ্লব দেবের সরকার। এবার ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে প্রশাসনের চরম দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল। এমনকী মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই চরম অসহযোগিতা ও দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেত্রী সায়নী ঘোষ। এই ঘটনার পর তিনি ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘ত্রিপুরার নামী হোটেলে ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াই ঘণ্টার উপর পাওয়ার কাট করে মিটিং করতে দেওয়া হয়নি আমাদের। এমনকী হোটেলকর্মীরা আমাদের এসে কথা বলতেও বাধা দেয়। বলা হয় রাজনীতি নিয়ে কোনও আলোচনা করা যাবে না।’
মঙ্গলবার একটি বিবৃতি পেশ করে সায়নী (Saayoni Ghosh)জানান, ত্রিপুরায় এসে বিজেপির গণতন্ত্রের যে বহর দেখলাম তাকে স্বৈরাচার বললে স্বেচ্ছাচারীর অপমান করা হয়! আমরা ত্রিপুরায় যে ‘স্বনামধন্য’ হোটেলে রয়েছি সেখানে বেশ কয়েকদিন ধরে স্বৈরাচারকে তুঙ্গে তুলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি নামে এই দলটি! হোটেল কর্তৃপক্ষকে উপর থেকে এমনই লজ্জাজনক চাপ তারা দিচ্ছে যে সেখানে কোনওরকম আলোচনার জন্য ৪-৫ জন মিলে আমরা বসতেও পারছি না।”
সায়নীর (Saayoni Ghosh)দাবি, ৪-৫ জন এক সঙ্গে খেতে বসতে গেলেও আটকে দিচ্ছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। খাবারের অর্ডার দেওয়া হলে জোর করে পুরোটাই বাতিল করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সায়নী। উদাহরণ স্বরূপ তিনি জানান, “মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ধরে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়, সাদা বাংলায় বললে সকলেই বুঝবেন, কোনও নামি রেস্তোরাঁতে এই ধরনের ঘটনা খুব একটা স্বাভাবিক না! আজ রেস্তোরাঁতে খেতে গিয়ে চা ও কফি অর্ডার করা হয়েছিল, সঙ্গে কয়েকজন মিলে আলোচনা চলছিল, সেখানে বিজেপি থেকে চর মোতায়ন করা হয়েছিল, এবং তারা এসে এ কথাও বলে যে আমরা নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা করতে পারবো না!”
This is how @AITCofficial workers were treated in hotels and restaurants in #Tripura.
Every attempt is being made to silence us, corner us and prevent us from reaching out to the people of Tripura. Shameful!@BjpBiplab time to start counting your days as CM of Tripura! pic.twitter.com/kEmN3cBMPO
— AITC Tripura (@AITC4Tripura) August 17, 2021
আরও পড়ুন: হিমন্ত গড়েও ‘খেলা শুরু’,সনিয়াকে চিঠি লিখে কংগ্রেস ছাড়লেন সুস্মিতা দেব, তৃণমূল যোগের জল্পনা
সায়নীর কথায়, “ভারতীয় সংবিধানে যে বাক স্বাধীনতা নামক বিষয়ের আলাদা করে উল্লেখ রয়েছে বিজেপির হয়তো সেটা কখনই বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। ভারতবর্ষের যে কোনও জায়গা থেকে যে কোনও মানুষ স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক চর্চা করতে পারেন, গণতন্ত্রের গলা টিপে বিজেপি যে স্বৈরাচার ত্রিপুরাতে চালাচ্ছে সেটা তাদের এই লজ্জাজনক ব্যবহার মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে নিশ্চিত! আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষকে কোনো রকম দোষ দিচ্ছি না, বিজেপির তরফ থেকে তাদের অফিসিয়াল মেইল করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল যাতে কোনওরকম সংগঠন ত্রিপুরায় গড়ে তুলতে না পারে।”
সায়নীর দাবি, “ফোন করে, অফিসিয়াল ই-মেইল করে রীতিমত হুমকি দেওয়া হচ্ছে আমাদের কোণঠাসা করে দেওয়ার জন্য। এই ধরনের নিষ্ঠুরতা যে গণতন্ত্রের লজ্জাজনক খুন সেটা আলাদা করে বলে দিতে হয় না। আমাদের সমস্ত কথা শোনার জন্য হোটেলে সকলে রীতিমতন তৎপর, কোনওরকম ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতার তোয়াক্কা না করে এই ভাবেই নিজেদের মত করে ত্রিপুরায় স্বৈরাচার বজায় রাখতে চাইছে বিজেপি। তারা যখন পশ্চিম বাংলায় এসে প্রচারের নামে মন্ডা মিঠাই খেয়ে গেছিলেন, দিনের পর দিন থেকে গেছিলেন, তখন কিন্তু তাদের রাজনৈতিক প্রভাব আটকে দিতে আমাদের তাদের মুখ থেকে খাবার ছিনিয়ে নিতে হয় নি! আর আজ তারা সেটা করতেও দ্বিধা বোধ করলেন না। মানসিকতা এবং মানবিকতার ফারাকটা বড় বেশি স্পষ্ট হয়ে গেল না এই ভাবে?!”
যুবনেত্রীর দাবি, ত্রিপুরা বিজেপির লজ্জা হওয়া উচিত। ‘অতিথি দেব ভবঃ’ বিপ্লব দেবের রাজ্যে নর্দমায় বইছে। একইসঙ্গে সায়নীর হুঁশিয়ারি, যতই যাই করুক, সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করলেও আটকানো যাবে না। ত্রিপুরায় রবিবার মহিলা সাংসদদের উপর হামলার পর এবার যুবনেত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় উত্তাল ত্রিপুরা।
আরও পড়ুন: সুস্মিতা দেব দল ছাড়তেই গণ ইস্তফা কংগ্রেসে, এবার বরাক উপত্যকায় ঘাসফুলের দোলা