Site icon The News Nest

ফের রক্তে ভাসল মায়ানমার, চলল গুলি, নিহত কমপক্ষে ৩৯

myanmar firing anandabazar

মায়ানমারের হ্লাইনথায়া শহরে চিনের অর্থে চলা বেশ কয়েকটি কারখানায় রবিবার আগুন লাগে। এর পরই অন্তত ২২ জন সেনা অভ্যুত্থান প্রতিবাদকারীকে হত্যা করেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। রাজনৈতিক বন্দিদের সহযোগী এক সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, শহরের অন্যত্র আরও ১৬ জন প্রতিবাদকারীকে হত্যা করা হয়েছে। এক জন পুলিশকর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে নির্বাচিত জননেত্রী আন সান সু কি-র বিরুদ্ধে ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর, সে দেশে সবচেয়ে রক্তাক্তময় দিন ছিল রবিবার।

রবিবারের ঘটনা সম্পর্কে চিনের দূতাবাসের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতী চিনের অর্থে পরিচালিত কাপড়ের কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এই ঘটনায় বহু চিনাকর্মী আহত হয়েছেন। কারখানার ভিতরেও আটকে পড়েছেন অনেকে। ইতিমধ্যেই চিনের তরফে মায়ানমারে আটক চিনা কর্মীদের ও সম্পত্তি রক্ষা করার অনুরোধ করা হয়েছে। গোটা ঘটনাকে “অতি ভয়ঙ্কর” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যদিও চিনের এই অনুরোধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মায়ানমারের জনতা। তাঁদের দাবি, সেনা অভ্যত্থানের পিছনে চিনা মদত রয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানা থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখার পরই আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে সেনাবাহিনী। যদিও সেনা পরিচালিত স্থানীয় সংবাদ চ্যানেলে বলা হয়েছে, চারটি কাপড়ের কারখানা ও একটি সার কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থানে দমকল পৌঁছনোর চেষ্টা করলে প্রায় দুই হাজার মানুষ বাধা দেয়। এরপরই কঠোর পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।

আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু ফরাসি ধনকুবের ও রাফাল প্রস্তুতকারক অলিভিয়ার দাসোর

যদিও প্রতিবাদীকারীদের উপর সেনার গুলি চালনার ভয়াবহতা উঠে এসেছে এক চিত্র সাংবাদিকের বক্তব্যে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিত্র সাংবাদিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, ‘‘ভয়ঙ্কর লাগছিল। চোখের সামনে দেখছি লোকদের গুলি করে মারা হচ্ছে। এই ভয়াবহ দৃশ্য আমারক স্মৃতি থেকে কোনওদিন মুছবে না।’’ এই হিংসার পরই হ্লাইনথায়া এবং ইয়াঙ্গনের অন্য এলাকায় মার্শিয়ান আইন জারি করা হয়েছে। যদিও আগুন লাগানোর ঘটনার দায় এখনও কোনও গোষ্ঠী নেয়নি। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার মতে এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক বন্দিদের সাহায্যকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর এখনও অবধি কমপক্ষে ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার অবধি ২১৫০ জনেরও বেশি মায়ানমারবাসীকে আটক করা হয়েছে। মুক্তি দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩০০ জনকে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমার (Myanmar) দখল নেয় সে দেশের সেনাবাহিনী। আটক করা হয় নোবেলজয়ী জননেত্রী আন সান সু কি(Aung San Suu Kyi)-কে। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের আমদানি-রফতানি আইন ভঙ্গ ও জাতীয় দুর্যোগ আইনের ২৫ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করেছে জান্তা বাহিনী। এরপরই সেনা অভ্যত্থানের বিরুদ্ধে ও জননেত্রীর মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয় মায়ানমার।

আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলনের আঁচ এবার গ্র্যামি-তেও, সমর্থনের বার্তা দিলেন ‘সুপারওম্যান’

Exit mobile version