ভ্যাটিকান সিটি: চিন ছাড়িয়ে ইউরোপেও থাবা বসিয়েছে করাল করোনা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বিশ্ব পর্যটনে পড়েছে গভীর প্রভাব।
আরও পড়ুন: আইসক্রিম খেলে করোনা হবে? জেনে নিন ছড়িয়ে পড়া এই খবরের সত্যি-মিথ্যে
চিনের পর, করোনা-পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ইটালিতে। সেখানে এক দিনেই ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে ১০ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ১৫০ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের এক সদস্যও। উহানে অবশ্য এই প্রথম নতুন করে কোনও সংক্রমণের খবর নেই বলেই জানিয়েছে চিনা সরকার। তবে বেজিংয়ে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
যেন মড়ক লেগেছে ইতালিতে। সংক্রমণ লাগামছাড়া। ঘরে ঘরে মিলছে ভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ। মৃত্যু হচ্ছে শয়ে শয়ে। শুধু সোমবারেই করোনা আক্রান্ত ৩৪৯ জনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত করা হয়েছিল ইতালিতে। বুধবার সব রেকর্ড ভেঙে গেল। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হল সংক্রামিত ৪৭৫ জনের। ভাইরাস পজিটিভ ৩৫,৭১৩। বন্ধ দোকানপাট, বাজার-রেস্তোরাঁ। খাঁ খাঁ করছে রাস্তাঘাট। ঘরবন্দি আতঙ্কি মানুষ। বন্ধ বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শেষকৃত্য। মর্গে জমছে মৃতদেহের স্তূপ। করোনার হানায় ছন্দ হারিয়েছে ভ্যাটিকান সিটি।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের জেরে পিছিয়ে গেল ICSE, ISC, JEE-Main পরীক্ষা
বার্গামো শহরের মেয়র জর্জিও গোরি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করেছেন সমস্ত গোরস্থান বন্ধ করে দেওয়ার কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এমনটা ঘটেছে এই প্রথমবার। তবে কফিনগুলি নিয়ে নিরাপদে রাখা হবে চার্চের বিশেষ ব্যবস্থায়। সৎকার করতে গেলে দেহ থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এর ফলে যে মানুষের ভিড় হবে, তাঁরাও প্রভাবিত হতে পারেন। এমন বিপদ এড়ানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, প্রতিদিন একের পর এক বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। কিন্তু সেই অনুযায়ী জায়গার সংকুলান হচ্ছে না মর্গে। তাই দেহগুলি নিরাপদে রাখার জায়গা নেই। মর্গে বাড়ছে মৃতদেহের স্তূপ। স্বাস্থ্যকর্তাদের, দাবি রোগীর তুলনায় হাসপাতালের সংখ্যা বেশ সীমিত ইতালিতে। হাসপাতালের বেডে রোগীদের রাখারও পর্যাপ্ত জায়গা নেই।
সংক্রমণ এমন ভাবে বেড়ে চলেছে যে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে দেশের দেশের উত্তরাংশের একটা বড় অংশকে কোয়ারেন্টাইন করার ব্যবস্থা করেছে সরকার। বন্ধ স্কুল-কলেজ, দোকান, বাজার, সিনেমা হল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, জিম-বার। বাড়ির বাইরে পা রাখাও একপ্রকার নিষিদ্ধ। সংক্রমণ এড়াতে আপাতত তিন সপ্তাহ গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হবে জনসাধারণকে। সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করলেই হবে জেল বা মোটা টাকা জরিমানা।