Site icon The News Nest

অভিনব কায়দায় কলকাতার ৩টি এটিএম কাউন্টার থেকে গায়েব ৪০ লক্ষ টাকা!

Atm

এ বার এক অভিনব কায়দায় এটিএম থেকে টাকা লুঠ করছে প্রতারকরা। সেটা খাস কলকাতাতেই! জানা গিয়েছে, এটিএম না ভেঙেই ৯ দিনে কলকাতার ৩টি এটিএম কাউন্টার থেকে গায়েব ৪০ লক্ষ টাকা গায়েব করে দিয়েছে প্রতারকরা।

এটিএম মেশিন অটুট, কোথাও কোনও আঁচড়ের দাগ নেই। অথচ এটিএম যন্ত্রের ভিতর থেকে রহস্যজনকভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা উধাও। সম্প্রতি কাশীপুর, নিউমার্কেট, যাদবপুর-সহ কয়েকটি এলাকায় ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা গায়েবের ঘটনা ঘটেছিল। শনিবারই সামনে এসেছিল সেই খবর। কীভাবে চুরি? এরপরই তদন্তে নামেন লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দারা। আর তাতেই হাতে এল চমকপ্রদ তথ্য। আসলে গোটা ঘটনার পিছনেই রয়েছে উন্নততর প্রযুক্তি। একধরনের গ্যাজেটের সাহায্যেই এটিএম মেশিন না ভেঙেই লক্ষ লক্ষ টাকা বের করে নিয়েছে জালিয়াতরা।

মে মাসের ১৪ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে, গত ৯ দিনে উত্তর কলকাতার কাশীপুর, মধ্য কলকাতার নিউমার্কেট ও দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর এলাকায় তিনটি এটিএম থেকে ৩৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এ ভাবেই গায়েব করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুরো ঘটনায় তদন্তে নেমেছে লালবাজারের গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রে খবর, নিউমার্কেটের একটি এটিএম থেকে ১৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, যাদবপুরের একটি এটিএম থেকে ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ও কাশীপুরের একটি এটিএম থেকে ৭ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে ত্রাণ’ নিয়ে যাচ্ছে রাজ্য, আপাতত বরাদ্দ ১০০০ কোটি, জানালেন মমতা

প্রাথমিক সন্দেহে গোয়েন্দাদের অনুমান, কাউন্টারে ঢুকেই প্রথমে এটিএমের ‘হুড’ বা উপরের আবরণ খুলে নিচ্ছে জালিয়াতরা, যা একমাত্র বিশেষজ্ঞরাই পারেন। এরপর এটিএমের কম্পিউটারের পিছন দিকে থাকা ‘কেবল’এ বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে একটি ডিভাইস বা ‘সংক্রামিত ইউএসবি ড্রাইভ’। এই কেবিলটিই মেশিনের সঙ্গে ব্যাংকের সার্ভারকে যুক্ত করে। এরপর ওই ড্রাইভ বসানোর পর ল্যাপটপের সাহায্যেও করা যেতে পারে জালিয়াতি। ডিভাইস বা ড্রাইভের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার, যা আসলে ‘ম্যালওয়্যার’ তা এটিএমের কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হচ্ছে। ‘রিবুট’ হচ্ছে এটিএমের কম্পিউটার। গোয়েন্দাদের পরিভাষায়, এই ম্যালওয়্যারটিকে বলা হয় ‘ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক’। কারণ এর সাহায্যেই এটিএমের সঙ্গে ব্যাংকের সার্ভার বা সুইচের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে এটিএমটির ‘মস্তিষ্কে’র দখল নিচ্ছে জালিয়াতরা। অর্থাৎ যে রাস্তা ধরে ব্যাঙ্কের সার্ভারের কাছ থেকে এটিএম ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ পদ্ধতিতে যোগাযোগ করে বা নির্দেশ নেয়, সেই রাস্তাটিই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

এরপর ওই ম্যালওয়ারের মাধ্যমে এটিএম পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে জালিয়াতরা। গোয়েন্দাদের ধারণা, এটিএম থেকে টাকা তুলতে এই ম্যালওয়্যারই একটি ‘কোড’ তৈরি করছে, যা এটিএমে থাকা জালিয়াত তার গ্যাংয়ের অন্যদের কাছে পাঠাচ্ছে। ওই গ্যাংয়ের সদস্যরা ওই ‘কোড’টিকে ‘পিন’ বা পাসওয়ার্ডে পরিবর্তন করছে। এরপর সেই বিশেষ ‘পিন’ বা পাসওয়ার্ড এটিএমের কম্পিউটারে প্রয়োগ করলেই বেরিয়ে আসছে টাকা।

এর আগে দিল্লিতেও একইভাবে এটিএম জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছিল। গোয়েন্দারা সেই বিষয়টিও মাথায় রাখছেন। তবে এই ঘটনায় যে সংস্থা এটিএম মেশিনগুলির দায়িত্বে তাদেরও কিছুটা দায় বর্তাচ্ছে। যে ব্যাংকের ওই এটিএম, সেই বেসরকারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংস্থাকে বারংবার এটিএম মেশিনগুলি পরিবর্তন করতে বললেও, তা শোনা হয়নি। পাশাপাশি চলতি মাসের ১৪ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে ঘটনাগুলি ঘটলেও বেশ কয়েকদিন পর অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে খবর।

আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফের অসুস্থ মদন মিত্র

Exit mobile version