Site icon The News Nest

পর্ণশ্রীতে মা এবং কিশোর ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য

behala

বেহালা পর্ণশ্রীতে জোড়া মৃত্যু। মা ও ছেলের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে মা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলা প্রাক্তন নৌ-সেনা আধিকারিকের স্ত্রী। ঘরের ভিতর একই হুক থেকে ঝুলিন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে ওই মহিলা এবং তাঁর ১২ বছরের ছেলের দেহ। স্ত্রী এবং ছেলের এমন মর্মান্তিক পরিণতি প্রথমে দেখতে পান প্রাক্তন নৌ-সেনা আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমার। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান আত্মঘাতী হয়েছেন মা ও ছেলে। কিন্তু কেন এমন মারাত্মক সিদ্ধান্ত তাঁরা নিলেন তা স্পষ্ট নয়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, ৫৩৪ পর্ণশ্রী পল্লির একটি চারতলা বাড়ির একতলার ফ্ল্যাটে বছর দেড়েক আগে স্ত্রী রূপা কুমার এবং ছেলে শানকে নিয়ে ভাড়া আসেন বীরেন্দ্র কুমার নামে এক ব্যক্তি। এক সময়ে নৌবাহিনীতে কাজ করা বীরেন্দ্র অবসরের পরে কলকাতা জিপিও-তে কাজ করেন। আদতে তাঁর বাড়ি বিহারের বাঁকা জেলায়। স্ত্রী রূপা মুঙ্গেরের বাসিন্দা। বীরেন্দ্র পুলিশকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি অফিস থেকে ফিরে কলিং বেল বাজান। কিন্তু কেউ দরজা খোলেননি। বার বার বেল বাজিয়েও দরজা না খোলায় জোরে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন বীরেন্দ্র। শব্দ শুনে পাশের ফ্ল্যাটে থাকা বাড়ির মালিক বেরিয়ে আসেন। চিৎকার ছুটে আসেন পড়শিরা এবং ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার।

আরও পড়ুন: করোনায় দর্শকহীন হল! বন্ধই হয়ে গেল মেনকা, প্রিয়া, প্রাচী, জয়ার মতো সিঙ্গল স্ক্রিন

দরজা না খোলায় সকলে মিলে ধাক্কা দিতে থাকেন। তাতে ভিতর থেকে লাগানো ছিটকিনি এবং তালা খুলে যায়। ঘরে ঢুকে সকলে সিলিংয়ের একটি হুক থেকে রূপা এবং শানের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পড়শিরাই দেহ দু’টি নামিয়ে আনেন। এক প্রতিবেশী জোসেফ জানিয়েছেন, দু’জনের দেহে সাড় ছিল না। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে থানায় খবর দেন।

অ্যাম্বুল্যান্সেরও খোঁজ করতে থাকেন। ততক্ষণে বাকিরা মিলে গাড়ি ঠিক করে রূপা ও শানকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। জোসেফ পুলিশকে জানিয়েছেন, খুবই শান্ত স্বভাবের ছিলেন রূপা। বুধবার রাতে বা ঘটনার দিন সকালেও কেউ ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনও চিৎকার শুনতে পাননি। তবে স্ত্রী এবং ছেলের দেহ উদ্ধারের পরে বীরেন্দ্র কাঁদতে কাঁদতে তাঁর মাকে দোষারোপ করছিলেন বলে জানিয়েছেন জোসেফ।

পুলিশ জানিয়েছে, সুইসাইড না পাওয়া গেলেও একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশের দাবি, সেখানে দেখা গিয়েছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সেভাবে বনিবনা ছিল না। একে অন্যকে বিশ্বাসও করতেন না। এদিকে পুলিশ প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পেরেছে যে মা ও ছেলে একে অন্যকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারতেন না। পারিবারিক কোনও গন্ডগোল বা অশান্তির জেরে মা ও ছেলে এমন সাংঘাতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিশদে তথ্য জানতে রূপার মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, বীরেন্দ্রর অভিভাবকরা চাইতেন দম্পতির আরও সন্তান হোক। যদিও দম্পতি তা চাইতেন না। এই বিষয়ে পারিবারিক গোলমাল চলছিল কিনা, তা জানতে গৃহকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: দল ভাঙানোর যে রাজনীতি মমতা আমদানি করেছিলেন,তার শিকার এবার নিজেই: সুজন

Exit mobile version