Site icon The News Nest

লকডাউনে আর্থিক সঙ্কট, মা-ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু পাটুলির কানুনগো পার্কে

বন্ধ বাড়ি থেকে ছাড়ছিল দুর্গন্ধ। ওই বাড়ির সদস্যদের ডাকাডাকি করেও মেলেনি সাড়া। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীরা পাটুলি থানায় খবর দেন। খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দরজা ধাক্কা দিতে ভিতরে ঢুকেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশকর্মীদের (Police)। বন্ধ ওই বাড়ি থেকে একে একে মা ও ছেলের পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কীভাবে তাঁদের মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশের অনুমান, আর্থিক অনটনের কারণেই আত্মহত্যা করেছেন প্রৌঢ়। তবে বৃদ্ধার মত্যু কী ভাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।কানুনগো পার্কের দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা স্নেহময় মিত্র এবং তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী। তাঁদের একমাত্র ছেলে শুভময় অবিবাহিত। স্নেহময়ের মৃত্যুর পর মাকে নিয়ে থাকতেন শুভময়। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, শুভময়ের বাড়ি থেকে পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি মা-ছেলের। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে।

পুলিশ সূত্রে খবর,ঘরে ৮৮ বছরের মঞ্জুশ্রীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর দেহে পচন শুরু হয়ে গিয়েছিল। তা থেকে পুলিশের অনুমান বেশ কয়েক দিন আগে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। দেহে আপাত ভাবে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। পাশের ঘরেই গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায় শুভময়কে।

আরও পড়ুন: বিজেপির মতো অশুভ শক্তির বিনাশে পৃথিবীতে আসেন মা দুর্গা! জাগো বাংলা-র শারদ সংখ্যায় লিখলেন তৃণমূল নেত্রী

মিত্র পরিবারের প্রতিবেশী শঙ্করানন্দ গুহ পুলিশকে জানিয়েছেন, শুভময়ের বাবার লেক মার্কেটে ভাড়ায় নেওয়া একটি বইয়ের দোকান ছিল। স্নেহময়ের মৃত্যুর পর ওই দোকান চালাতেন শুভময়। দোকানটিই ছিল তাঁদের একমাত্র রোজগারের রাস্তা। কয়েক মাস আগে সেই দোকানের দখল হারান শুভময়। তার পর থেকেই চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েন তিনি। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দোকান হারিয়ে শুভময় কিছু দিন পুরসভার চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসাবেও কাজ করেন।

শুভময়ের মা দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ। পুলিশের অনুমান আর্থির সঙ্কট থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন শুভময়। ঘরে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ৭ দিনের মধ্যে মা-ছেলেকে দেখা যায়নি। পুলিশের অনুমান অন্তত ৩-৪ দিন আগে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান মায়ের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তার পরেই আত্মহত্যা করেন শুভময়। তবে এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ময়নাতদন্ত হলে স্পষ্ট হবে মঞ্জুশ্রীর মৃত্যু স্বাভাবিক কি না। কারণ এ রকম অনেক ক্ষেত্রেই অবসাদগ্রস্ত মানুষরা কাছের মানুষকে খুন করে নিজেরা আত্মহত্যা করেন।” সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: দোতলা বাস ফিরে পেল কলকাতা! সপ্তমী থেকে নামছে রাজপথে, জেনে নিন কোন রুটে মিলবে পরিষেবা

Exit mobile version