Site icon The News Nest

বদায়ুন ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে গ্রেফতার প্রধান অভিযুক্ত মন্দিরের পুরোহিত সত্যনারায়ণ

badyun

বদায়ুন গণধর্ষণকাণ্ডে (Budaun Gang Rape) গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যনারায়ণ (Satyanarayan)। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিস। বাইকে চড়ে পালাবার সময়ই সত্যনারায়ণকে গ্রেফতার করে পুলিস। তার আগেই বুধবার সত্যনারায়ণের ২ শিষ্যকে গ্রেফতার করেছিল পুলিস।

বেশ কয়েকদিন ধরে অধরা ছিল প্রধান অভিযুক্ত। তার বিষয় খবর দিতে পারলে ৫০ হাজার টাকার অর্থমূল্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করে পুলিশ। তারপরেই কাজ হয়। বৃহস্পতিবার রাতে পুরোহিত যখন গ্রাম ছাড়তে যায় তখনই স্থানীয়রা খবর দেয় পুলিশকে।

গত রবিবার গত রবিবার নির্ভয়া-কাণ্ডের স্মৃতি উস্কে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুন জেলার উঘৈতি থানা এলাকায় ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়া ৫০ বছরের এক মহিলাকে গাড়িতে তুলে নৃশংস অত্যাচার চালান অভিযুক্তরা। ধর্ষণের পর তাঁর যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে ভেঙে দেওয়া হয় পাঁজরের হার। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর পা-ও। তার পর রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তায় মহিলার দেহ ফেলে চলে যান অভিযুক্তরা। তারা বলে যে মন্দিরের ধারে নালায় পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার। কিন্তু সেই কথায় সন্তুষ্ট না হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় মহিলার বাড়ির লোক।

তড়িঘড়ি নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও পুলিশ সময় থাকতে পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবারের। ময়নাতদন্ত ঘিরেও গড়িমসির অভিযোগ সামনে এসেছে। মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে মহিলার দেহটি বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তাঁর পরিবারের লোকজন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত বাড়ির উঠোনে খাটিয়াতেই রাখা ছিল তাঁর দেহ। যে হলুদ চাদরে দেহটি ঢাকা ছিল, রক্তে ভিজে গিয়েছিল সেটিও। পা-ও ভাঙা অবস্থায় ঝুলছে। অভিযোগ, নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে আঘাত করা হয়। ভারী কিছু দিয়ে বার বার বুকের উপরও আঘাত করা হয়। যার জেরে প্রৌঢ়ার পাঁজরের হাড়ও ভেঙে যায়।

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া থামল ৩৩৮ রানে,কম ইনিংস খেলে কোহলিকে ছুঁলেন স্মিথ

সেই অবস্থায় গ্রামের লোক ওই নির্যাতিতাকে দেখতে ভিড় করলেও পুলিশের টিকি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করে নির্যাতিতার পরিবার। বিষয়টি চাউর হতে বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে দেহটি নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। কর্তব্যে অবহেলার জন্য ইতিমধ্যেই উঘৈতি থানার এসএইচও-কে সাসপেন্ড করা হয়েছে।পরিবারের লোকদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিয়েছে প্রশাসন।

মৃতার ছেলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, প্রায় রোজই ওই মন্দিরে পুজো দিতে যেতেন তাঁর মা। রবিবারও বিকেল ৫টা নাগাদ পুজো দেওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন নির্যাতিতা। এরপর রাতে সাড়ে ১১টা নাগাদ অভিযুক্তরা তাঁর রক্তাক্ত দেহ বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।জানা গিয়েছে, প্রধান অভিযুক্ত আদতে বেরেলির বাসিন্দা। সাত বছর আগে বদায়ুনে আসে সে এবং ওই মন্দিরে থাকতে আরম্ভ করে।

নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর বৃহস্পতিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য চন্দ্রমুখী দেবী মন্তব্য করেন, ‘‘সন্ধ্যাবেলা একা ওই মহিলা না বেরোলে এমন ঘটনা ঘটত না।’’ যাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তুঙ্গে। চন্দ্রমুখী দেবী বৃহস্পতিবার বদায়ূঁ যান নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। চন্দ্রমুখী আরও বলেছিলেন, ‘‘উনি যদি ওই সময় না বেরোতেন, তা হলে এমন ঘটনা ঘটত না। উনি চাপে ছিলেন। কিন্তু একজন মহিলার সব সময় বিবেচনা করে দেখা উচিত, কখন তিনি বেরোবেন। সন্ধ্যাবেলা উনি যদি না বেরোতেন কিংবা বেরোলেও পরিবারের কোনও সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন, তা হলে হয়তো ওঁকে বাঁচানো যেত।’’

জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যের মুখে এই মন্তব্য শোনার পর বিতর্ক তৈরি হয় দেশ জুড়ে। যা সামলাতে তড়ঘড়ি ময়দানে নামতে হয় কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে। তিনি টুইট করেন, ‘আমি জানি না কেন এবং কী ভাবে কমিশনের ওই সদস্য এমন মন্তব্য করলেন। একজন মেয়ের নিজের ইচ্ছামতো যেখানে খুশি, যখন খুশি যাওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। আমরা একটা সমাজে বাস করি। মেয়েদের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের কাজ’।

তবে জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্টেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে যোগীরাজ্যের পুলিশকে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ দায়ের থেকে ময়নাতদন্ত—সর্বত্রই পুলিশি গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। যার সঙ্গে অনেকেই মিল পাচ্ছেন হাথরস-কাণ্ডের।

আরও পড়ুন: ‘কাউকেই ঠকাতে পারব না’, একই মণ্ডপে দুই প্রেমিকাকে বিয়ে বস্তারের যুবকের

 

 

Exit mobile version