Site icon The News Nest

প্রণবের আত্মকথা ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস’ ঘিরে প্রকাশ্য টুইট-যুদ্ধে পুত্র অভিজিৎ ও কন্যা শর্মিষ্ঠা

pranab mukherjee rss event

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বই নিয়ে রীতিমতো সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পুত্র ও কন্যা। তাঁর অনুমতি ছাড়া বাবার লেখা শেষ বইয়ের প্রকাশ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন পুত্র অভিজিৎ। পালটা বই প্রকাশের ক্ষেত্রে অহেতুক বাধা প্রদান না করার আর্জি জানালেন কন্যা শর্মিষ্ঠা। সঙ্গে কড়া ভাষায় জানালেন, সস্তা প্রচারের জন্য কেউ যেন বইয়ের প্রকাশ আটকানোর চেষ্টা না করেন।

গত শুক্রবার প্রণববাবুর লেখা শেষ বই ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ার্স’-এর কিছু অংশ প্রকাশ করেছে প্রকাশক সংস্থা রুপা। আত্মজীবনীমূলক বইয়ের সেই অংশে ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নিশানা করেছিলেন প্রণববাবু।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ওই বইয়ের সারাংশ থেকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসের কয়েক জন সদস্য তত্ত্বগত ভাবে মনে করেন যে ২০০৪-এ আমি প্রধানমন্ত্রী হলে ’১৪-র লোকসভায় ভরাডুবির হাত থেকে বেঁচে যেত দল। যদিও আমি তা মনে করি না। আমার মতে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই দলীয় নেতৃত্ব রাজনৈতিক লক্ষ্য হারিয়েছিল। এক দিকে, সনিয়া দল চালাতে অপারগ ছিলেন। অন্য দিকে, সংসদে দীর্ঘ দিন অনুপস্থিতির কারণে সংসদদের থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ঘুচে গিয়েছিল’।

সেই বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের তরফে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। একইসঙ্গে বইয়ে নিজের মত হিসেবে প্রণববাবু জানিয়েছিলেন যে প্রথম দফায় স্বৈরতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রশাসন চালিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময় রাষ্ট্রপতি ভবনে ছিলেন প্রণববাবু।

আরও পড়ুন: কৃষকদের ভুল পথে চালিত করছে বিরোধীরা, চাপের মুখে ‘ষড়যন্ত্র’ তত্ত্ব খাড়া প্রধানমন্ত্রীর

কিন্তু মঙ্গলবার অভিজিৎ দাবি করেন, বইয়ের যে অংশ সামনে আনা হয়েছে, তা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। প্রকাশক কমিশ মেহরাকে টুইট করে অভিজিৎ বলেন, ‘যেহেতু আমার বাবা আর নেই, তাই ছেলে হিসেবে প্রকাশের আগে বইয়ের শেষ খণ্ডের বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখতে চাই। আমার বিশ্বাস যে বাবা বেঁচে থাকলে উনিও তাই করতেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি খুঁটিয়ে না দেখা পর্যন্ত আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া অবিলম্বে (বই) প্রকাশ বন্ধ করার আর্জি জানাচ্ছি।’

অভিজিতের এই বক্তব্যের সঙ্গে প্রণব-কন্যা যে সহমত নন, তা স্পষ্টই জানিয়েছেন। টুইটারেই দাদাকে তোপ দেগে তাঁর মন্তব্য, ‘লেখকের মেয়ে হিসেবে দাদাকে অনুরোধ, বাবার লেখা শেষ বইপ্রকাশে অহেতুক বাধা তৈরি করবেন না। অসুস্থ হওয়ার আগেই ওই বইের পাণ্ডুলিপি শেষ করেছিলেন তিনি (প্রণব)’।

শর্মিষ্ঠার দাবি, ‘(বইয়ের) শেষ খসড়ায় আমার বাবার হাতেলেখা নোট এবং মন্তব্য ছিল, যা মান্য করা হয়েছে।’ ওই বইয়ের কংগ্রেসের ভরাডুবি প্রসঙ্গে যে মতামত ব্যক্ত করেছেন প্রণব, তা নিয়েও নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন শর্মিষ্ঠা। তিনি লিখেছেন, ‘যে মতামত প্রকাশ করেছেন (প্রণব), তা তাঁর নিজস্ব। এবং এ নিয়ে সস্তা প্রচারের উদ্দেশ্যে বইয়ের প্রকাশনা বন্ধ করার চেষ্টা করা কারও উচিত নয়। এতে প্রয়াত বাবাকে অশ্রদ্ধাই করা হবে’।

অভিজিতের মতামতকে প্রকাশ্যেই খণ্ডন করা ছাড়াও তাঁকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি শর্মিষ্ঠা। টুটটারে তিনি অভিজিতের ভুল ধরিয়ে লিখেছেন, ‘প্রসঙ্গত দাদা, বইয়ের নামটা দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস, দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোয়ার্স নয়’।

আরও পড়ুন: দল বদলের জল্পনা জিইয়ে রেখে হলদিয়ায় ‘দলতন্ত্র’- র বিরুদ্ধে সোচ্চার শুভেন্দু

Exit mobile version