Site icon The News Nest

কৃষক নেতার কান্নায় প্রাণ ফিরল আন্দোলনের, ফের সীমান্তমুখী ঘরে ফেরা অন্নদাতারা, পিছু হটল যোগীর পুলিশ

farm

শুক্রবার সকালের গাজিপুর সীমান্ত।

রাতেই গাজিপুর সীমান্ত খালি হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) মুখপাত্র রাকেশ তিকাইতের আবেগপ্রবণ ভাষণের পরই পালটে গেল পুরো ছবিটা। হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে আরও কৃষক গাজিপুর সীমান্তে এসে জড়ো হচ্ছেন। আবারও গতি পাচ্ছে আন্দোলন। সেই পরিস্থিতিতে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।

প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় তাণ্ডবের পর থেকেই চাপে কৃষক আন্দোলনের নেতারা। উত্তরপ্রদেশ-দিল্লির গাজিপুর সীমানা থেকে কৃষকদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল যোগী প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই প্রচুর পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করা হয় সেখানে। আন্দোলনকারীদের একাংশ যখন রণে ভঙ্গ দিয়ে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন পরিস্থিতি বদলে দিল ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের (বিকেইউ)-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েতের একটি সাংবাদিক বৈঠক। সেখানে আবেগতাড়িত কৃষক নেতা কেঁদে ফেলেন।

সেই ভিডিয়ো মুহূর্তে ছড়িয়ে যায় ইন্টারনেটে। কাঁদতে কাঁদতে প্রবীণ কৃষক নেতার আকুতি বদলে দেয় পরিস্থিতি। পুলিশকে উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা ফের জড়ো হতে থাকেন ধর্না চালানোর জন্য। রাকেশের এই কান্না দেখে রাতেই উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আরও কৃষক এসে যোগ দেন গাজিপুরে। সেই পরিস্থিতিতে রাতেই আন্দোলনস্থল থেকে সরে যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং পিএসি।

প্রজাতন্ত্র দিবসে হিংসার ঘটনায় রাকেশ টিকায়েত-সহ একাধিক কৃষক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের এই নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আত্মসমর্পণ করবেন না। রাকেশ বলেছেন, ‘‘দরকারে আত্মহত্যা করব। কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করব না।’’ আন্দোলন ভেস্তে দিতে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির গুণ্ডারা এসেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। নিজেই গাজিপুর সীমানায় হাতে লাঠি নিয়ে ঘোরা একটি ছেলেকে ধরে চড় মারেন। দাবি করেন, ওই ব্যক্তি সংগঠনের কেউ নয়। এঁদের জন্যই আন্দোলন গতি হারাচ্ছে। সেই ভিডিয়ো-ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: বিশ্ববাজারে সস্তা তেল, দেশে ৮০ পেরিয়ে গেল ডিজেল, পেট্রল ৮৮-র দিকে

বৃহস্পতিবার রাতের মতোই টানটান শুক্রবার সকালের গাজিপুর। ইতিমধ্যেই বিশাল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছেন সেখানে। আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধরিও এসেছেন রাকেশ টিকায়েত এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে। কান্নার রেশ ছেড়ে চনমনে দেখাচ্ছে রাকেশকেও। গাজিপুরের প্রতিবাদস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা এখান থেকে সরছি না। আমাদের ইস্যু নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলব। আমি আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ থাকার আবেদন জানাচ্ছি।’’ সকালের দিকে আন্দোলনস্থল থেকে ‘জয় জওয়ান, জয় কিষান’, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান তোলা হয়।

আন্দোলনস্থলে উপস্থিত কৃষকরাও বলেন, “নোটিশ দিয়ে আন্দোলন শেষ করা যায় না। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া অবধি আন্দোলন চলবেই।” আন্দোলনস্থল ফাঁকা করাতে বিকেল থেকে সীমান্তে উপস্থিত পুলিশরাও ভোররাতে পিছু হটেন। সকাল হতেই আন্দোলনকারীরা “জয় জওয়ান, জয় কিষাণ” ও “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” স্লোগান দিতে থাকেন। আজ সকাল ১১টায় উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে মহা পঞ্চায়েতের ডাক দিয়েছেন রাকেশ তিকাইত। সেখানে যোগ দিতে আসছেন হাজার হাজার কৃষক।

আরও পড়ুন: অমিত শাহ ও হিন্দু দেবদীবের নিয়ে রসিকতা! জামিন পেলেন না Munawar Faruqui

Exit mobile version