Site icon The News Nest

হেঁটে ক্লান্ত, ট্রলি ব্যাগের উপরেই ঘুম দুধের শিশুর, টানছেন পরিযায়ী মা!

Baby sleeps on

চন্ডীগড়: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে আচমকাই দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ২৪ মার্চ থেকে তিন দফায় ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে বন্ধ সমস্ত যান চলাচল। পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিজেদের বাড়ি ফিরতে না পারায় বিভিন্ন রাজ্যে অশান্তিও ছড়িয়েছে একাধিকবার। বাধ্য হয়ে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে সরকার। কিন্তু সেই সংখ্যা যে কতটা কম, তা বোঝা গেল আবার।

হৃদয়বিদারক এই দুর্দশার ছবিটি সম্প্রতিই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা দেখে ক্ষোভ ফেটে পড়ছেন নেটিজেনরা।ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ট্রলির উপরে শুয়ে রয়েছে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এক শিশু আর তাঁকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর মা। পাঞ্জাব থেকে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি তো আর কম দূরত্ব নয়। প্রায় ৮০০ কিলোমিটার। বড়রাই যেখানে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ছেন এখানে-ওখানে, সেখানে একটা শিশুর কী দোষ! ফলে ট্রলি ব্যাগের উপরে উঠেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। কষ্ট করে ব্যাগ এবং ব্যাগের উপরে ঘুমনো সন্তানকে নিয়ে টেনে চলেছেন ক্লান্ত মা, গন্তব্য নিজেদের বাড়ি।

জানা গিয়েছে, ওই পরিবার ঝাঁসির বাসিন্দা। স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন শিশুটির বাবা। কিন্তু লকডাউনে জোটেনি ঠিকঠাক খাওয়াও। পাননি শ্রমিক ট্রেনের টিকিটও। তাই পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। আর পথেই ঘুমিয়ে পড়ে শিশুটি। তার বাবা জানিয়েছে, খিদে আর হাঁটার চোটে ঘুম পেয়ে গিয়েছিল শিশুটির। তখন তাঁকে ট্রলির উপর শুইয়ে দেন তাঁর মা। নিজে ক্লান্ত হলেও টেনে চলেছেন সেই ব্যাগ।

আরও পড়ুন: জেনে নিন এক দেশ, এক রেশন কার্ডের অর্থ কী?, কিভাবে আপনি এর সুবিধা পাবেন…

মার্চের শেষ থেকে দেশব্যাপী জারি হওয়া লকডাউনের ফলে চাকরি হারিয়ে খাদ্য-বাসস্থানের অভাবে পায়ে হেঁটে নিজের রাজ্যে ফিরতে বাধ্য হওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের যে কী পরিমাণ অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তার নানা দৃষ্টান্ত গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সামনে এসেছে। সকলে অবশ্য হাঁটছেন না। কেউ কেউ সাইকেলে, কেউ বা ট্রাকে করে পাড়ি দিচ্ছেন দীর্ঘ দীর্ঘ পথ। এই দৃশ্য সেই তালিকায় নয়া সংযোজন।

চলতে চলতে পথে নুইয়ে পড়েছে কত শরীর। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হয়েছে। তবুও থামা নেই। জীবন যায় যাক, বাড়ি ফিরতে মরিয়া পরিযায়ীদের নামতেই হয়েছে পথে।বাস বা ট্রেন চালু করা হলেও যাঁরা এরই মধ্যে পথে নেমে পড়েছেন, তাতে তাঁদের বিশেষ লাভ হয়নি। পাশাপাশি অনেকের কাছেই টিকিটের দাম সাধ্যাতীত।

বৃহস্পতিবারই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে একাধিক কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। কিন্তু তাতেও কি কাটবে ওঁদের দুর্ভোগ? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

আরও পড়ুন: অগস্টেই ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’, দু’মাস বিনামূল্যে খাদ্যশস্য ৮ কোটি পরিযায়ীদের : নির্মলা

Exit mobile version