Site icon The News Nest

ঝড়ের গতি ১০০ ছাড়াল, ৫০ বছরে সবচেয়ে বড় দুর্যোগের মুখে কলকাতা?

1122

A woman carries her son as she tries to protect him from heavy rain while they rush to a safer place, following their evacuation from a slum area before Cyclone Amphan makes its landfall, in Kolkata, India, May 20, 2020. REUTERS/Rupak De Chowdhuri - RC2ASG90VGJS

কলকাতা: অবশেষে স্থলভাগে ঢোকা শুরু করল ঘূর্ণিঝড় আমফান। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে বুধবার বেলা ২.৩০ মিনিট থেকে ভূভাগে প্রবেশ শুরু করেছে ঝড়টি। চার ঘণ্টা ধরে চলবে এই প্রক্রিয়া। 

হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের মাথাটি স্থলভাগে ঢোকা শুরু হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ঢুকে পড়বে কেন্দ্রটিও। যার জেরে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঘণ্টায় ১৬০-১৭০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইবে। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বুধবার বেলা ৩.০৫ মিনিটে দমদম বিমানবন্দরে হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৭৬ কিলোমিটার ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

আমফান ভূভাগে প্রবেশের সময় পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও কলকাতায় প্রবল বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। সঙ্গে হতে পারে প্রবল বৃষ্টি। সময় যত কাটবে তত বাড়বে বৃষ্টির তীব্রতা। সন্ধ্যার পর কলকাতার কাছাকাছি আসবে ঘূর্ণিঝড় আমফান। তখন কলকাতায় ঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্থলভাগে প্রবেশের পর দ্রুত শক্তি হারাবে ঝড়টি। 

বিকেল ৪টে নাগাদ কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, শেষ মুহূর্তে আমফানের গতিপথে কোনও পরিবর্তন না হলে ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মধ্যে পড়তে চলেছে মহানগর। আয়লা যখন সুন্দরবনের উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছিল, সেখানে তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫-১৩০ কিলোমিটার। আর কলকাতায় কার্যত আয়লার লেজের ঝাপটা লেগেছিল। কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৯০ কিলোমিটারের আশেপাশে। তবু কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল শহর। আমপান যে তার চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে, তা জানাচ্ছেন আবহবিদরা।

আরও পড়ুন:  আমফানের আতঙ্কের মধ্যেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলা

গত বছরের নভেম্বরে এসেছিল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। বুলবুল উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় তার গতিবেগ ছিল, তবে তার তাণ্ডব সুন্দরবন এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কলকাতায় তার খুব একটা প্রভাব পড়েনি। আবার গত বছর আরও এক ঘূর্ণিঝড় ফণী আছড়ে পড়েছিল ওড়িশার উপকূলে। কলকাতায় তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকলেও সেই বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছিল।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘অত্যন্ত শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড় যদি শেষ মুহূর্তে গতিপথ পরিবর্তন না করে, তা হলে কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। পূর্ব কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।’’

আরও একটি কারণে এই আমফান ভয়ঙ্কর হতে চলেছে। আলিপুরের আবহবিদদের মতে, প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাবে এই ঘূর্ণিঝড়। কলকাতাতেও তার প্রভাব অন্য ঝড়ের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হবে। ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। শহর কলকাতায় অনেক পুরনো বাড়ি রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এবং ভারী বৃষ্টির জেরে বহু বাড়িঘর ভেঙে পড়তে পারে। উপড়ে পড়তে পারে বহু গাছপালা।

অন্য দিকে, আমফানের প্রভাবে ইতিমধ্যেই কলকাতায় প্রচণ্ড বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় কোমর বেঁধে নেমেছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভায় রয়েছেন প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম-সহ অন্যান্য সদস্যরা। প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তারক সিংহকে গোটা বিষয়ের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রবল শক্তি নিয়ে স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ল আমফান,তাণ্ডব শুরু দক্ষিণবঙ্গে, মৃত্যু ২ মাসের শিশুর

Exit mobile version