Site icon The News Nest

৯ দিনের শাবককে মেরে খেল মা চিতা! বর্ধমান জুলজিক্যাল পার্ক কর্তৃপক্ষের দাবিতে শোরগোল

zoo

বর্ধমানের জুলজিক্যাল পার্ক ( Bardhaman Zoological Park) থেকে উধাও ন’দিনের চিতা বাঘের শাবক। পশুপ্রেমীদের ধারনা পাচারকারীরা পাচার করে থাকতে পারে প্রাণীটিকে। তবে পার্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, মা চিতাটি খেয়ে নিয়েছে শাবককে। এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে গোটা জেলায়।

বর্ধমানের গোলাপবাগ সংলগ্ন রমনাবাগান মিনি জুকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল আগেই। আকর্ষণ বাড়াতে গত বছরের শেষ দিকে উত্তরবঙ্গ থেকে দুটি চিতাবাঘ ধ্রুব ও কালীকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই রমনাবাগান জুলজিক্যাল পার্কে। পার্কের আকর্ষণ বাড়াতে চিতা যুগলের জন্য প্রবেশ পথের একদম সামনেই তৈরি করা হয়েছিল বিশাল এনক্লোজার। গত মার্চ মাস থেকে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন শুরু হওয়ায় এই পার্কও দর্শকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনও তা বন্ধই রয়েছে। সেই নির্জন পরিবেশে নতুন সন্তানের জন্ম দিয়েছিল কালী। ধ্রুব ও কালীর সন্তান জন্ম হওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলেন অভয়ারণ্যের সঙ্গে যুক্ত সকলেই। ফের জু খুললে ওই শিশু ও তার বাবা মা দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছিল।

আরও পড়ুন: Weather Update: আশ্বিনের সকালে মুখভার আকাশের, শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা

কিন্তু  বেশি স্হায়ী হল না সেই খুশির আবহাওয়া। সেই একরত্তিই যে নেই! গত শনিবার খাঁচা পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রথম এক বনকর্মী লক্ষ্য করেন শিশু চিতা নিরুদ্দেশ। ছুটে আসেন আঞ্চলিক বনাধিকারিক সহ অন্যান্য কর্তারা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে ঘুম ছুটে যায়  বন দফতরের আধিকারিকদের। তবে কি ত্রিস্তরের নিরাপত্তা বলয়ের ফাঁক গলে গায়েব হয়ে গেল ওই শিশু চিতা? প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

আঞ্চলিক বনাধিকারিক দেবাশিস শর্মা বলেন, ওই চিতাটিকে তার মা কালী খেয়ে নিয়েছে। আমরা হয়তো তা ভাবতেই পারছি না কিন্তু পশু সমাজে এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কয়েক মাস আগে অন্য জু তেও এমন ঘটনা ঘটেছে। শিশু চিতাটিকে না পেয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। এরপর কালীর মল পরীক্ষা করা হয়। সে যে তার সন্তানকে খেয়ে ফেলেছে তা মল পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে। মলে মিলেছে সরু হার, লোম। এতেই ধারণা যে, মা চিতাই সন্তানকে খেয়েছে। এবিষয়ে নিশ্চিত হতে হার ও লোম ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।সাধারণত চিতা একসঙ্গে একাধিক সন্তানের জন্ম দেয়। একটি সন্তান প্রসব করা দেখে আমরা অবাকই হয়েছিলাম। হতে পারে প্রসবের পর পরই সে সবার অলক্ষ্যে একটি বা দুটি সন্তান খেয়ে ফেলেছিল।

কেন চিতাবাঘের শাবকটির উপর নজরদারি চালানো হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পশুপ্রেমীরা। তাঁরা এও বলছেন মা চিতাবাঘ শাবককে খেয়ে নিয়েছে এটা বিরলতম ঘটনা। তাই খাবার না পেয়েই কি চিতাবাঘটি তার সন্তানকে মেরে খেয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরও জানতে চাইছেন তাঁরা। পশুপ্রেমীদের অনেকেরই আশঙ্কা, লকডাউনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চিতা শাবকটিকে বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি অভয়ারণ্যের পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। এর আগে এই অভযারণ্যে বাঘ, হরিণ, ময়ূর ও অন্যান্য বেশ কিছু পশুপাখির মৃত্যু হয়েছে। এখানকার যা পরিবেশ, তা মোটেই বন্যপ্রাণীদের রাখার উপযুক্ত নয় বলে দাবি পশুপ্রেমীদের। একই সঙ্গে এই অভয়ারণ্যের কর্মীদের বন্যপ্রাণীদের দেখভালের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ রয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: কলকাতায় রূপান্তরকামীর শ্লীলতাহানি, গ্রেফতার এবং সাসপেন্ড পুলিশ আধিকারিক

 

 

Exit mobile version