Site icon The News Nest

WB election 2021: ভরল না অমিত শাহ- স্মৃতি ইরানিদের সভার মাঠ, শুরু চর্চা

amit shah anandabazar

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা বলে কথা। কিন্তু বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের খাতড়া স্টেডিয়ামের মাঠের অর্ধেকের বেশি অংশ সোমবার ফাঁকা থাকল কেন— প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ওই সভায় রোদ থেকে বাঁচতে দর্শকদের জন্য গড়া হয়েছিল তিনটি শামিয়ানা। তার মধ্যে একটি ভরলেও, বাকি দু’টি কার্যত ফাঁকা থাকতে দেখা গিয়েছে এ দিন। গত নভেম্বরে জেলা সফরে আসা শাহের সঙ্গে দলীয় কর্মীদের কার্যত স্রোত দেখা গিয়েছিল। তার চার মাসের মধ্যে কী এমন হল তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।

পুলিশের হিসেবে, এ দিন ওই মাঠে বড়জোর ছ’হাজার মানুষ এসেছিলেন। যদিও বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের দাবি, “অমিতজির সভায় ৩০ হাজার মানুষের ভিড় জমানোর লক্ষমাত্রা নিয়েছিলাম। কিন্তু এ দিন ৬০ হাজার মানুষ এসেছিলেন। তিনটি শামিয়ানাই ভরে যায়। বাইরেও অনেকে ছিলেন।” বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার কটাক্ষ, “আসলে ৬০ হাজার মানুষের জমায়েত কেমন হয়, তা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের ধারণাই নেই।”

২৭ মার্চ প্রথম দফার নির্বাচন। দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বিভিন্ন আসনে ভোট রয়েছে। ভোটের আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাকি। এখানে সভা করতে আসছেন স্মৃতি ইরানি, নিতিন গড়কড়ি, জে পি নাড্ডারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ডেকে এনেও মাঠ ভরাতে পারছে না বিজেপি। তার আগে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিজেপি এসব জায়গায় সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি?

রবিবার দুপুরে শালবনির গোবরুতে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দুর্গামন্দিরের সভা করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সভাস্থলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যখন এসে পৌঁছোন, তখন খুব বেশি ভিড় ছিল না। সভায় অধিকাংশ চেয়ারই ছিল ফাঁকা। ফাঁকা সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

তবে শুধু স্মৃতির সভায় নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং-সহ একাধিক জায়গায় বিজেপির সভায় লোক হচ্ছে না। ঝাড়গ্রামেও এই একই ছবি ধরা পড়েছে। সভায় লোক না হওয়ায় এর আগে অর্জুন সিং, ভারতী ঘোষের মতো রাজ্যস্তরের নেতাদের ফেরত যেতে হয়। সভায় বক্তব্য না রেখেই তারা ফেরত যান।

আরও পড়ুন: তৃণমূল ত্যাগীদের টিকিট, হেস্টিংসে বিজেপি দফতরে বিক্ষোভ, ভাঙা হল ব্যারিকেড

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বিভিন্ন ‘তত্ত্ব’ খাড়া করছেন। প্রথমত, নভেম্বরে বাঁকুড়ায় বিজেপির আয়োজিত বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মালা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়ান শাহ। সে বিতর্ক নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছে। এ দিনও লাগোয়া জেলা পুরুলিয়ার ঝালদায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে সে বিতর্কের কথা শোনা গিয়েছে। ওই বিতর্কের রেশ আদিবাসী সমাজের মনে রেখাপাত করেছে কি না, তা নিয়ে এ দিনের সভার পরে, নানা মহল চর্চা শুরু করেছে।

দ্বিতীয়ত, তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যাওয়া রানিবাঁধ বিধানসভার কিছু নেতাকে নিয়ে দলের পুরনো কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। তার জের সভায় পড়ে থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। শাহের সভা শেষে বিজেপির রানিবাঁধের এক মণ্ডল কার্যকর্তা বলেন, “তৃণমূলে থাকাকালীন যে নেতারা আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালানোয় অভিযুক্ত, এখন তাঁদের অনেকে বিজেপিতে। দলের প্রার্থী ওই নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখায়, অনেকের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। বহু কর্মী তাই সভায় আসেননি।” রানিবাঁধ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ক্ষুদিরাম টুডুর অবশ্য দাবি, “সমস্ত স্তরের কর্মীরা সক্রিয় ভাবে সভায় যোগ দিয়েছিলেন।” বিজেপি জেলা সভাপতি বিবেকানন্দবাবুরও দাবি, “দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে একজোট হয়ে সবাই লড়ছেন। জঙ্গলমহলের মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।

আরও পড়ুন: ৭ কোটিতে তারকা কিনেছে বিজেপি! অভিযোগ শ্রীলেখার, জেলে পাঠানোর হুমকি রিমঝিমের

Exit mobile version