Site icon The News Nest

ব্রিগেডে থাকছেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, লিখিত বার্তায় জানালেন ‘অকল্পনীয় যন্ত্রণার’ কথা

buddha

ভোটের আগে ব্রিগেডে প্রথম বাম-কংগ্রেস সভা। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেতে পারছেন না তিনি। কলকাতার বুকে লাল-সমাবেশের কয়েক ঘণ্টা আগে বার্তা দিয়ে জানালেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, নীলবাড়ির লড়াইয়ে জোড়াফুল এবং পদ্মশিবিরকে ঠেকানোর লড়াইয়ে কমরেডদের পাশে না থাকার যন্ত্রণাও ভাষায় ব্যক্ত করতে পারবেন না তিনি।

রবিবার ব্রিগেডের মাঠে বুদ্ধবাবুর উপস্থিতি নিয়ে নিয়ে শনিবার রাত পর্যন্ত দোলাচলে ছিল বাম-কংগ্রেস। অশক্ত শরীরে বুদ্ধদেব না আসতে পারলে, তাঁর লিখিত বক্তব্যটুকু অন্তত যাতে বামজনতার কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করতে দুই শিবিরের তরফেও চেষ্টায় কোনও ত্রুটি ছিল না। কিন্তু রাতে বিবৃতি দিয়ে বুদ্ধদেব জানালেন, শারীরিক কারণেই কমরেডদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না তিনি।

এ দিন রাতে বুদ্ধদেবের তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তাতে বলা হয়, ‘‘ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। শুনে বুঝতে পারছি, বহু মানুষ সমাবেশে আসবেন এবং অনেকে এসেও গিয়েছেন। বড় সমাবেশ হবে। এ রকম একটা বৃহৎ সমাবেশে যেতে না পারার মানসিক যন্ত্রণা বোঝানো যাবে না। মাঠে ময়দানে কমরেডরা লড়াই করছেন, আর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে চলছি আমি। মাঠে-ময়দানে মিটিং চলছে, আর আমি গৃহবন্দি, যা কোনও দিন কল্পনাও করতে পারিনি। সমাবেশের সাফল্য কামনা করছি।’’

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজ্যের ও কেন্দ্রের দুই শাসকদল। ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা নেয় জোটশিবিরও। সমাবেশ থেকে বেশকিছু চমক দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় আলিমুদ্দিন ও বিধানভবন। জোট শিবিরের ঐক্যের চিত্রটা তুলে ধরাই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি, ব্রিগেডে কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সামনে সর্বভারতীয়স্তরের বেশ কয়েকজন নেতাকে হাজির করে চমক দেওয়ার চিন্তাভাবনা চালাচ্ছিল বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। যুবসমাজ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের আকর্ষণ করতে চলছিল বিভিন্ন পরিকল্পনা।

আরও পড়ুন: ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হলেই তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করতে পারেন মমতা

রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চে বাম, কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নেতারা হাত ধরাধরি করে দাঁড়ালেও ঐক্যের ফাটল থেকেই যাবে। শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় কথা বলেন তিনপক্ষের শীর্ষ নেতৃত্ব। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করেও আসন সমঝোতা নিয়ে চলতে থাকা বিবাদ মেটাতে ব্যর্থ হল আলিমুদ্দিন। এদিন আলিমুদ্দিনে বৈঠকে বসে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কংগ্রেস ও আইএসএফ দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় জোটপ্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলে খবর। ব্রিগেড সমাবেশের পরে ফের কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের মধ্যেকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। দুই দলের দ্বন্দ্ব যে স্পষ্ট এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন অধীর চৌধুরী ও মহম্মদ সেলিমের মত জোটের শীর্ষনেতৃত্ব। সমাবেশের পরে ফের বৈঠক হবে বলে জানান তাঁরা।

চমক না থাকলেও ব্রিগেডের বক্তা তালিকা চূড়ান্ত করে জোট শিবির। সভাপতিত্ব করবেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সিপিএমের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখার কথা সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র ও সংখ্যালঘু নেতা মহম্মদ সেলিমের। কংগ্রেসের পক্ষ বক্তা তালিকায় রয়েছেন ছত্রিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও অধীর চৌধুরীর। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট জোটে যোগ দেওয়ায় তাঁদের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন পীরজাদা আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকি। এছাড়াও বাম শরিকদের পক্ষ থেকে একজন করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। তবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে কে বক্তব্য রাখবেন রাত পর্যন্ত তা নিয়ে দ্বিধায় আলিমুদ্দিন।

এছাড়া ব্রিগেডে উপস্থিত থাকবেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও অনীক দত্ত এবং অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।

আরও পড়ুন: ‘বাংলার মেয়ে নন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফুফু, আর রোহিঙ্গাদের খালা’ নাম না করে খোঁচা শুভেন্দুর

Exit mobile version