Site icon The News Nest

নিজের জায়গা ধরে রাখতে মরিয়া দিলীপ, নতুনদের ডানা ছাঁটার আর্জি নড্ডার কাছে

dilip 1 scaled

বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নতুনরা যেন সংগঠনে বড় দায়িত্ব না পান তা নিশ্চিত করতে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে আর্জি জানালেন দিলীপ ঘোষ। একই সঙ্গে দলে ‘বেসুরো’ নেতাদের বিরুদ্ধেও তিনি সরব হয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে বিভিন্ন বিজেপি নেতা দলবিরোধী মন্তব্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের পরেও কয়েকজন সরব। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে বিজেপি রাজ্য সভাপতির সঙ্গে রবিবার মুখোমুখি বৈঠকে বসেন নড্ডা। সেখানেই তিনি অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৭৭-এ আটকে যেতেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল, দলবদলুদের বেশি গুরুত্ব দেওয়ার খেসারত দিতে হল? সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হয় যখন নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা একঝাঁক নেতা ফের একবার তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই ছত্রভঙ্গ হয়েছে দল। এই আবহে দলের হাল হকিকত নিয়ে আলোচনা করতে দিলীপ ঘোষকে দিল্লিতে তলব করেছেন জেপি নড্ডা। আর সেখানেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে দিলীপ ঘোষ আর্জি জানালেন যাতে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নতুনদের হাতে সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তুলে না দেওয়া হয়। দিলীপ সংবাদমাধ্যমকে এই বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই প্রকাশ্যে অনেক কথা বলছেন, যা বলা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে আমি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। এ ধরনের মন্তব্য দলের পুরনো কর্মীদের মনোবলে আঘাত করছে।’ তবে এই অভিযোগ ঠিক কার বিরুদ্ধে করেছেন সে ব্যাপারে দিলীপ কারও নাম উল্লেখ করেননি।

নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকে রাজ্য বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আগে বিজেপিতে ঝাঁকে ঝাঁকে তৃণমূল নেতাদের যোগ। যে সে নয়। তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, সোনালী গুহর মতো বহু নাম রয়েছএ তালিকায়। প্রত্যেকের মুখেই শোনা যায় তৃণমূলে থেকে কাজ না করতে পারার সুর। তবে এখন এদের অধিকাংশের মুখে ‘ভুল বুঝে দল বদল’-এর সুর। এই সব বেসুরো নেতাদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে? এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি রয়েছে। কী ব্যবস্থা নেবে, কাদের বিরুদ্ধে নেবে তা দলের উচ্চ নেতৃত্ব ঠিক করবেন।’

আরও পড়ুন: Mukul Roy: পিএসি-র চেয়ারম্যান হলেন মুকুল রায়ই

দিলীপ‌ের এই দিল্লি সফর নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক রদবদলের সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। সোমবার এ বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না করে দিলীপ বলেন, “দল আমাকে এই পদে বসিয়েছে। দায়িত্ব পালন করছি। দল যতদিন বলবে থাকব। এর পরে দল যা দায়িত্ব দেবে সেটাই সামলাব।” সম্প্রতি রাজ্যের দুই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ গিয়েছেন। তাঁদের কি সাংগঠনিক দেওয়া হবে? এর জবাবে দিলীপ বলেন, “ওঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তাই ওঁদের বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটি নেবে।”

দিলীপ প্রকাশ্যে না বললেও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি এমন আর্জিও জানিয়েছেন যে, দলে আগামী দিনে কোনও সাংগঠনিক রদবদল হলে সেখানে পুরনোদের বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হোক। কেউ দলে যোগ দিলে বিজেপি-র আদর্শ এবং কর্মপদ্ধতি বোঝার মতো সময় দেওয়া দরকার। তার পরেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত। অতীতে সেটা না করায় দলকে অনেক সময় মূল্য দিতে হয়েছে এবং হচ্ছে বলেও নড্ডার কাছে অভিযোগ করেছেন দিলীপ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারের বৈঠকে নড্ডাকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দিলীপ। নড্ডা তাতে সম্মত হলেও তিনি কবে আসবেন সে ব্যাপারে কোনও দিনক্ষণ দিলীপকে জাননানি।

আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে শুটআউট, ভরসন্ধেয় পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন

Exit mobile version