ঘূর্ণিঝড় ইয়াস কেড়েছে ঘরবাড়ি। সর্বস্ব ভেসে গেছে জলে। এখন জীবনটুকু সম্বল। দলে দলে মানুষ চলেছেন শহরের দিকে। বোঁচকায় বাঁধা সংসার। ভিটেহারা মানুষের সঙ্কটের এই ছবিই বারবার উঠে আসছি সুন্দরবনের।
জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। সঙ্গে ইয়াস, দোসর ভরা কটাল। বাঘ, কুমিরের সঙ্গে বাস করতে আর ভয় পান না সুন্দরবনবাসী। তবে ইয়াস, কটালের জোড়া ফলায় এখন বিধ্বস্ত তাঁরা। ইয়াস, কটালের জলের তোড়ে এখনও প্লাবিত সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাঁধ ভেঙে, বাঁধ উপচে ঢোকা নোনা জলে ডুবেছে নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমার চাষ জমি। সমস্ত সবজি কার্যত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার জেরেই মাথায় হাত কৃষকদের।
আরও পড়ুন: পূর্ব বর্ধমানে বাজ পড়ে মৃত ৪, আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস জেলা প্রশাসনের
নদী বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকেছে একের পর এক গ্রামে।যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খাবার নেই, জল নেই। প্রকৃতির রুদ্ররূপ থেকে রেহাই পায়নি কেউ। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর গ্রামে পানীয় জল ও খাবারের ভয়ঙ্কর আকাল দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় খালি হয়ে গেছে — গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়া, পাখিরালয়, আরামপুর, রানিপুর, বাকবাগান, দয়াপুরের মতো এক একটা গ্রাম।
প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে খোলা হয়েছে কমিউনিটি কিচেন ও ত্রাণ শিবির । কিন্তু সর্বস্তরে মেটানো যাচ্ছে না পানীয় জলের সংকট ৷ এদিকে গভীর নলকূপগুলি এখনও ডুবে রয়েছে নোনা জলের তলায় । প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্যোগ কবলিত গ্রামবাসীদের জল ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হলেও বহু মানুষ এখনও ন্যূনতম ত্রাণ পায়নি ৷ অনেকেই বাঁধের উপরে ত্রিপল টাঙিয়ে জীবন কাটচ্ছেন । তবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও ৷ বহু সংগঠনের পক্ষ থেকে দুর্গম এলাকায় পানীয় জল ও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে । সেভাবেই সন্দেশখালি
এলাকায় ত্রাণ পৌঁছ দিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নব- দিগন্ত। নব-দিগন্ত পরিবার ও ডাঃ নুরুল সাহেবের সহযোগিতায় সাধ্যমত ত্রাণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আতাপুর মনিপুর গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী কিছু গ্রামের অসহায় মানুষজনের মধ্যে শুকনো খাবার,জল, ঔষধ ও স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাজ পড়ে একদিনে রাজ্যে মৃত বেড়ে ২৬! পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন্দ্রের