Site icon The News Nest

শুধু বিরোধী শাসিত রাজ্যে প্রতিনিধি দল! কেন্দ্রকে আক্রমণে ডেরেক-সুদীপ, সঙ্গ দিলেন সিঙ্ঘভি

sudip 700x400 2

কলকাতা: সঙ্কটের মাঝে সঙ্ঘাত এড়িয়ে চলার নীতিই নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের সরকার তথা শাসক দল। কিন্তু বাংলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যে ভাবে আচমকা আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার, তাতে আর থেমে থাকল না রাজনৈতিক চাপানউতোর। কেন্দ্রীয় সরকারকে মঙ্গলবার তীব্র আক্রমণ করল রাজ্যের শাসক দল। সংসদের দুই কক্ষের তৃণমূল দলনেতাই তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে।

৪টি রাজ্যে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মহারাষ্ট্রে দল পাঠানো হয়েছে মুম্বই এবং পুণের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। জয়পুরের পরিস্থিতি দেখার জন্য রাজস্থানে পাঠানো হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে পাঠানো হয়েছে ইনদওরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। আর পশ্চিমবঙ্গে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। অর্থাৎ যে ৪ রাজ্যে প্রতিনিধিদল পাঠানো হল, তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশ শুধু বিজেপি শাসিত। বাকি সব রাজ্যেই বিরোধীদের সরকার। এই বিষয়টিকে তুলে ধরেই আক্রমণ শুরু করেছে তৃণমূল। কেন বেছে বেছে বিরোধী দলগুলির হাতে থাকা রাজ্যগুলিতেই পাঠানো হল কেন্দ্রীয় দল? কেন বিজেপি বা তার শরিকদের হাতে থাকা রাজ্যগুলিতে পাঠানো হল না? প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের।

রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এ দিন কণ্ঠস্বর তুঙ্গে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে। তাঁর প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শনের তালিকায় গুজরাত বা তামিলনাড়ুর একটা জেলাও নেই কেন? উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত বা তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক বলে তাঁর দাবি। তা সত্ত্বেও ওই সব রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল কেন পাঠানো হচ্ছে না? প্রশ্ন ডেরেকের। তাঁর কথায়, ‘‘সব রাজ্য একসঙ্গে মিলে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে একটা সর্বাত্মক লড়াই লড়ছে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, কেন্দ্রীয় সরকার লড়ছে কয়েকটা রাজ্যের বিরুদ্ধে।’’

লোকসভার তৃণমূল দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদল যদি কোনও রাজ্যে আসতে চায়, প্রথা মেনে, যথাযথ ভাবে, তা হলে তাঁরা স্বাগত। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর লেখা চিঠিতে কালকে প্রধানমন্ত্রীকে এই কথা জানিয়েছেন। দিল্লির প্রতিনিধিরা আগে পৌঁছে যাচ্ছেন, তার পরে মুখ্যমন্ত্রী খবর পাচ্ছেন, এটা কখনওই প্রত্যাশিত নয়, এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’

রাজ্যের শাসক দল তথা রাজ্য সরকার বেশ কিছু দিন ধরেই নানা ইস্যুতে সমালোচনা করছে রাজ্যপালের। প্রদেশ কংগ্রেস সে সুরে খুব একটা সুর মেলায়নি। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় স্তরের নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি মঙ্গলবার প্রবল আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে। রাজ্য চালানোর জন্য যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে শত্রুতা করা রাজ্যপালের কাজ নয়— টুইটারে লিখলেন কংগ্রেসের এই আইনজীবী সাংসদ।

এ দিন বেলা ৩টে নাগাদ টুইট করেছেন এ রাজ্য থেকে যাওয়া রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। রাজ্যপাল পদে থেকে সব বিষয়ে যে কথা বলা যায় না, সে কথা এ দিনের টুইটে ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। রাজ্যপাল যদি কিছু বলতেই চান, তা হলে সে কথা ‘সঠিক পদ্ধতিতে’ এবং ‘সরকারি চিঠির মাধ্যমে’ জানানো উচিত বলেই টুইটে লিখেছেন সিঙ্ঘভি।

আরও পড়ুন: রাস্তায় নেমে লকডাউন নিয়ে সচেতনতা প্রচার, গোটা দুপুর চষে বেড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যপালদের কর্মপদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত, তা খুব স্পষ্ট ভাবে নিজের টুইটে এ দিন মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ওই সাংসদ। তিনি লিখেছেন, ‘‘তাঁরা রাজত্ব করেন, কিন্তু শাসন করেন না (রাষ্ট্রপতি শাসন বা সরকার গঠনের সময় ব্যতীত)।’’ সিঙ্ঘভি লিখেছেন, ‘‘তাঁদের (রাজ্যপাল) উচিত সত্যিকারের বন্ধু, পরামর্শদাতা এবং পথপ্রদর্শক হওয়া, যাঁরা সরকার চালানোর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হওয়া নয়।’’

দেশের অন্যান্য রাজ্যের রাজ্যপালদের কথা ভেবে যে এই টুইট তিনি করেননি, তা-ও সিঙ্ঘভি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। নিজের টুইটে এ দিন তিনি যে হ্যাশট্যাগগুলি ব্যবহার করেছেন, সেগুলির মধ্যে ‘ধনখড়’ কথাটিও রয়েছে।

রাষ্ট্রপতি শাসন বা সরকার গঠনের সময় ব্যতীত অন্য সময়ে রাজ্যপালের কাজ শুধু শোভাবর্ধন করা, এমন ইঙ্গিতই দিলেন টুইটে। পশ্চিমবঙ্গে আচমকা কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর সিদ্ধান্তকেও কটাক্ষ করেছেন সিঙ্ঘভি। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এই ‘বিশেষ স্নেহ’ কেন? শ্লেষের সুরে প্রশ্ন ছুড়েছেন কংগ্রেস সাংসদ।

আরও পড়ুন: ত্রুটিপূর্ণ কিট, সারা দেশে র‌্যাপিড টেস্ট বন্ধ করল আইসিএমআর

Exit mobile version