আখলাক হত্যার অভিযুক্তরা ‘দলের সম্পদ’, সামনে রেখে ভোট প্রচার যোগীর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

লখনউ: ২০১৫ সালে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গোমাংসের গুজবের জন্য একদল উন্মত্ত জনতার হাতে খুন হতে হয়েছিল মহম্মদ আখলাক নামে এক মুসলিমকে। সেই অভিযুক্তদেরই রবিবার যোগী আদিত্যনাথের সভায় দেখা গেল। ওই জনসভার প্রথম সারিতেই বসেছিল তারা।জানা গিয়েছে, ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লোকসভা নির্বাচনে দাদরি কাণ্ডের এই অভিযুক্তরাই বিজেপির প্রচার করবে। হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকা অভিযুক্তদের এমন গুরুত্ব দেওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই স্থানীয় সংখ্যালঘুরা আতঙ্কিত।রবিবার যোগী আদিত্যনাথ তাঁর ভাষণে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবকা সাথ সবকা বিকাশের উপর জোর দিয়েছেন। অথচ অন্যেরা কেবলমাত্র সংখ্যালঘু তোষণ করে চলেছিল এতদিন।

মর্মান্তিক সেই হত্যাকাণ্ডের কথা মনে পড়লে আজ শিউরে ওঠেন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।বাড়ির ফ্রিজে গরুর মাংস রাখার মিথ্যে অভিযোগে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় ৫০ বছরের আখলাককে। তাঁর আর এক পুত্র দানিশ মারাত্মকভাবে জখম হন। অস্ত্রোপচার করতে হয় বারবার। একসময় চিকিৎসকরা তার প্রাণসংশয়ের কথা শুনিয়েছিলেন। আখলাকের আর এক পুত্র ভারতীয় বায়ুসেনায় কর্মরত। হত্যার অন্যতম অভিযুক্ত বিজেপি নেতা সঞ্জয় রানার ছেলে বিশাল সিংয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। সেই সময় পুলিশ জানিয়েছিল মন্দির থেকে যে গণ উস্কানি দেওয়া হয় তা শুরু করেছিলেন এই বিশাল সিং-ই। যদিও যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অভিযুক্তরা প্রত্যেকে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। ১৭ জন মূল অভিযুক্ত বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।রবিবার নিজের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে যোগী আদিত্যনাথ স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, এসব খুনের অভিযোগকে পাত্তাই দেবেন না তিনি। উল্টে অভিযুক্তদের দেওয়া হবে বাড়তি সম্মান! তাদের সামনে রেখে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন যে, এরাই তাঁর দলের সম্পদ।

ভোট প্রচারে বারবার উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে আসলে সেই পুরনো মেরুকরণের কথায় ঘুরেফিরে শুনিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। ওইদিন যোগী বলেন সপা এবং বসপা জমানায় কেবল তাদের পারিবারিক উন্নয়ন হয়েছে,জনগণের নয়। মোদী জমানায় এবং বিশেষ করে তাঁর আমলে উত্তরপ্রদেশে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে। একই সঙ্গে যোগীর দাবী,কঠোরভাবে দাঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন তিনি। সে কারণেই এখন আর উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গা হয় না. মহিলারা নিরাপদে থাকে আগে। সংখ্যালঘুদের তোষণ করে পরিস্থিতি অন্য রকম তৈরি করা হয়েছিল, যাতে আহত হয়েছিল সংখ্যাগুরুরা। মোদী সরকার উন্নয়নের জাত-পাত-ধর্ম দেখেনি।

রাজনৈতিক মহলের মতে,ইউপির মুখ্যমন্ত্রী ভালই জানেন উন্নয়নের কথা দিয়ে আর চিঁড়ে ভিজবে না। সে কারণেই আখলাক হত্যার অন্যতম অভিযুক্তকে মিছিলের সামনে রেখে প্রচার করতে হলে।তিনি বুঝিয়ে দিলেন মেরুকরণ ছাড়া বিজেপির কোন উপায় নেই। তাছাড়া যোগী আদিত্যনাথ নিজেকে হিন্দুত্বের পোস্টার বয় হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। গেরুয়া শিবিরের এটাই ঘরানা। এটা যেন একটা রিলে দৌড়। আদবানির পর মোদী,তারপর যোগী। কেন্দ্রমুখী হলেই প্রবল হিন্দুত্ব খানিকটা নরম হিন্দুত্ব হয়ে যাবে। শেষ দিকে আদবানি ও নরম হিন্দুত্বে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন। এখন মাঝেমধ্যেই নরেন্দ্র মোদীকে নরম হিন্দুত্বের অনুশীলন করতে দেখা যায়। কিন্তু যোগী এখনও সে জায়গায় পৌঁছাননি। সেই কারণে নিরন্তর তাঁকে গরম হিন্দুত্বের অনুশীলন ব্যস্ত থাকতে হয়। একই সঙ্গে আরএসএস ভক্তদের সমস্ত ভোট ঝুলিতে তোলার দায়িত্ব নিতে হয়।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest