পুলওয়ামা হামলার আগে দিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল চিঠি, কী জানিয়ে ছিলেন আধিকারিকরা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নয়াদিল্লি: মোদী জমানায় বারবার ঢাকঢোল পিটিয়ে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে যে,নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্র কোন রকম আপস করবে না। অথচ সিআরপিএফ -এর চিঠির ছত্রে ছত্রে ধরা পরল ক্যাম্পগুলির দুর্দশার ছবি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী, পুলওয়ামা হামলার আগে দিল্লি সদর দফতরে একগুচ্ছ চিঠি পাঠিয়েছিল সিআরপিএফ আধিকারিকরা। যাতে নিজেদের বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছিল। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত একাধিকবার সিআরপিএফ- এর এক আধিকারিক সেনাবাহিনীর সদর দফতরে চিঠি পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ শিবিরের অবস্থার সার্বিক উন্নয়নের জন্য আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। সিআরপিএফ এর আইজি রঞ্জিশ রাই-এর পক্ষ থেকে শেষ চিঠিটি পাঠানো হয়েছে ২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর, পুলওয়ামা হামলার মাস দুয়েকেরও কম সময় আগে। তাতে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছিল প্রশিক্ষণ ক্যাম্পগুলির দুরবস্থার কথা। সন্ত্রাস মোকাবেলা করতে যে পরিকাঠামো লাগে এই প্রশিক্ষণ ক্যাম্পগুলিতে তা নেই।জানানো হয়েছিল, ক্যাম্পগুলিকোন স্থায়ী কাঠামো নেই। ফায়ারিং রেঞ্জ কিংবা সুরক্ষিত ওয়াল নেই। এই পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে কিভাবে জঙ্গি মোকাবিলায় উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সিআরপিএফ দের সেই প্রশ্ন তোলে হয়েছে ওই চিঠিতে।অথচ দেশে রক্ষায় সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করে এই সিআরপিএফ।জঙ্গি হানা হোক বা দাঙ্গা- সবার আগে পাঠানো হয় আধাসামরিক বাহিনীকেই। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ চালাতে গেলে আধুনিক যন্ত্রপাতির দরকার। যা ওই ক্যাম্পগুলিতে নেই বললেই চলে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে,যদি প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েই এমন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় জওয়ানদের,তাহলে জঙ্গী মোকাবিলা করা কি ভাবে সম্ভব?

রঞ্জিশ রাই সিআরপিএফ -এর ১৭৫ একর জায়গা জুড়ে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশের সিআইএটি স্কুলের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯২ সালের গুজরাত ক্যাডারের আইপিএস আধিকারিক। ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত তিনি উত্তর পূর্ব ভারতের সিআরপিএফ আইজি হিসেবে দায়িত্বে বহাল ছিলেন। পরে অন্ধ্রপ্রদেশের চিতুরের দায়িত্বে থাকাকালীন রাই সেচ্ছাবসরের জন্য আবেদন করলে খারিজ হয়ে যায় তা। এরপর নিয়ম বহির্ভূত ভাবে দায়িত্ব হস্তান্তরের ‘অপরাধে’ গত ডিসেম্বরে রঞ্জিশ রাইকে সাসপেন্ড করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সেনাবাহিনীর সদর দফতরে পাঠানো চিঠিতে রঞ্জিশ রাই উল্লেখ করেন, কাশ্মীর এবং উত্তরপূর্ব ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠানো জওয়ানদের সিআরপিএফ স্কুলে খুবই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ‘থিয়েটার স্পেসিফিক’ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।রাই তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, সাধারণত যে পিআই প্রশিক্ষণ জওয়ানদের দেওয়া হয়ে থাকে, তা একেবারে প্রাথমিক স্তরের। তুলনায় সিআইএটি প্রশিক্ষণ সন্ত্রাসবাদী হামলা মোকাবিলার ক্ষেত্রে অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। “নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার মতো প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা সিআরপিএফ -এর নেই”, চিঠিতেই জানিয়েছিলেন রঞ্জিশ রাই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে যোগাযোগ করা হলে সিআরপিএফ  এর পক্ষ থেকে রঞ্জিশ রাইয়ের চিঠির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। জানানো হয়েছে দেশ জুড়ে থাকা সিআইএটি কেন্দ্রে প্রায় ২০ ধরনের কোর্স করানো হয়। এই খবর সামনে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ মোদী সরকার সবটাই নির্বাচনের চোখে দেখে। জাতীয় নিরাপত্তা তাদের কাছে কেবলই একটা নির্বাচনী ইস্যু। সেই কারণেই সব দায় পাকিস্তানের ঘাড়ে চাপিয়ে গেরুয়া ভোট ইভিএমে তুলতে মরিয়া বিজেপি।একথা স্পষ্ট যে,সিআরপিএফ প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থার এই ছবি না বদলালে জওয়ানদের সন্ত্রাস মোকাবেলায় উপযুক্ত করে তৈরি করা খুব একটা সহজ হবে না।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest