মুম্বই: ভোট আবহে মুক্তি পেল আরও এক রাজনৈতিক সিনেমার ট্রেলার। লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা। অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি আজও। ফলে ‘জয় জওয়ান, জয় কিষান’ মন্ত্রের হোতা শাস্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে জনমানসে আজও রয়েছে অসীম কৌতূহল।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শেষে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যস্ততায় তাসখন্দে (বর্তমান উজবেকিস্তানের রাজধানী) ১০ জানুয়ারি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে দুই দেশ। সেখানেই একটি বাড়িতে শাস্ত্রীর রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করেছিল সোভিয়েত রাশিয়া। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাড়িতে ফিরে আসেন শাস্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রদূত টি এন কাউল। সেই অভিশপ্ত রাতে কাউলের নিজস্ব রাঁধুনি জান মহম্মদের হাতের খাবার খেয়েছিলেন শাস্ত্রী। রাত ১১.৩০ মিনিটে জান মহম্মদের এনে দেওয়া এক গ্লাস দুধও খান তিনি। তারপরই রাত ১.৩০ নাগাদ অসুস্থ বোধ করেন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, শাস্ত্রীকে বিষ দেওয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি। গ্রেপ্তার করা হয় শাস্ত্রীর রুশ খানসামা আহমেদ সাতারভকে। এমনকী তাঁর দেহ দেশে ফিরলে দেখা যায় নীল হয়ে গিয়েছে শাস্ত্রীর শরীর। কিন্তু এত কিছু ঘটা সত্ত্বেও অদ্ভুতভাবে ময়নাতদন্তে বাদ সাধেন নন্দা। রহস্যজনকভাবে গাড়ি চাপা পড়ে মারা যান শাস্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও তাঁর দুই ছেলে। শাস্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন প্রয়াত বিশিষ্ট সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার। এছাড়াও শাস্ত্রীর মৃত্যুর অন্যতম সন্দেহভাজন জান মহম্মদকে রাষ্ট্রপতি ভবনে কাজে নিয়োগ করা হয়। ছবিটির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী জানিয়েছেন, শাস্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে শুরু করে জর্জ ফার্নান্ডেজ অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে একটি ছবি করার কথা তাঁর মাথায় আসে। তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষর করেন শাস্ত্রী। তার কয়েক ঘন্টা পরই রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর, না তাঁকে বিষ দেওয়া হয়, এই প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। আমার মনে হয় সত্য সামনে আসা উচিত।
এই ছবির মাধ্যমেই বহুদিন পর ফের বড়পর্দায় ফিরলেন মিঠুন চক্রবর্তী। কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব উঠেছিল তিনি গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ‘দ্য তাসখন্দ ফাইলস’–এ রাজনৈতিক গুরুর ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে।
শুক্রবারই এই ছবির প্রথম পোস্টার প্রকশিত হয়। যেখানে মিঠুন চক্রবর্তীকে অসাধারণ লাগছে। এই ছবিতে অভিনেতাকে দেখা যাবে শ্যাম সুন্দর ত্রিপাঠি নামে এক রাজনৈতিক গুরুর ভূমিকায়। যাঁর জীবনের উদ্দেশ্য হল জয়। নাসিরুদ্দিন শাহ, শ্বেতা বসু, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, বিনয় পাঠক, পল্লবী যোশি, মন্দিরা বেদি এবং অঙ্কুর রাঠির মতো অভিনেতারা ‘দ্য তাসখন্দ ফাইলস’–এ রয়েছেন।
ছবির ট্রেলারে দেখা গিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তীর পাশাপাশি নাসিরউদ্দিন শাহ, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, পল্লবী যোশীর মতো অভিনেত্রীদের৷ যারা গোল টেবিলে বসে নানা প্রশ্ন তুলেছেন শাস্ত্রীজির মৃত্যু সম্পর্কে ৷ কেন ওভাবে মত্যুর পরও পোস্ট মর্টেম হল না, কেন বার বার বলা স্বত্তেও তদন্ত কমিটি বসল না৷ শাস্ত্রীজির ফ্ল্যাস্কে কোনও রকম বিষ মেশানো হয়েছিল কিনা? আর কেউ বা বলেছেন, শাস্ত্রীজি মৃত্যুর আগে নেতাজী সুভাষচন্দ্রের খবর পেয়েছিলেন৷ ভোটের মরশুমেই এই The Tashkent Files ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে৷ এখনও অবধি খবর ১২ এপ্রিল ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা৷ তবে তার আগের সপ্তাহেই অর্থাৎ ৫ এপ্রিল মুক্তি পেতে পারে আরও একটি রাজনৈতিক ছবি নরেন্দ্র মোদীর উপর করা বায়োপিক৷