Rampurhat clash: Murdered Tmc Leader Bhadu Sheikh's family left village

Rampurhat clash: আর ছেলেদের মরতে দিতে পারিনা, রাতারাতি গ্রাম ছাড়ল ভাদুর পরিবার

ছোট থেকে এই গ্রামেই বড় হয়েছিলেন। পরে রাজনৈতিক নেতা হওয়ার সুবাদে এই গ্রামেই প্রতিপত্তি হয় ভাদু শেখের। সোমবার রাতে রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে সেই তৃণমূল উপপ্রধান ভাদুই বোমার আঘাতে খুন হন। মঙ্গলবার রাতে দেখা গেল, গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে ভাদু শেখের পরিবার।

অন্য দিনের মতো সোমবার রাতেও রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। স্কুটিতে বসে আড্ডায় মত্ত ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়েই হামলা দুষ্কৃতীদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সব সময়ই ভাদু শেখকে ঘিরে থাকতো তাঁর নিজস্ব একটি নিরাপত্তা বলয়। ৮-১০ জন যুবকের একটি দল সব সময় তাঁকে ঘিরে থাকতে। সোমবার রাতেও তারা ছিল।

তবে ভাদুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। কারও সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে থাকা যুবকরা সেখান থেকে কিছুটা সরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে বাইকে চেপে আসা দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় ভাদুর উপর। পরপর বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়া হয় ভাদু শেখকে লক্ষ্য করে। ভাদুর অনুগামীদের লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

তার ঠিক এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরই বগটুই গ্রামে শুরু হয় তাণ্ডব। স্থানীয় সোনা শেখ এবং মণিরুল শেখের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সোনা শেখের বাড়ি থেকে মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার হয় সাত-সাতটি পুড়ে কাঠ হয়ে যাওয়া দেহ। ছিল দুটি শিশুও। বাড়ির দেওয়াল, টিভি, ফ্রিজ, মোটরবাইক সব পুড়ে ছাই। রাতভর আগুনে জ্বলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ঘরগুলি।

মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই থমথমে পরিবেশ গ্রামে। পুলিশ ছাড়া কোনও পুরুষ সদস্য নেই বললেই চলে। ভাদু শেখের এক দাদা নূর আলি বলেন, ‘‘দুই ভাইয়ের এ ভাবে মৃত্যু হবে ভাবিনি। এক বছর আগে বাবরকে খুন করা হয়। মঙ্গলবার ভাদুকেও খুন করল দুষ্কৃতীরা। ওদের ছেলে মেয়েরা অল্প বয়সে বাবাকে হারালো। এ ভাবে আর মরতে চাই না। তাই বাধ্য হয়ে গ্রাম ছাড়ছি। পরিবার নিয়ে অন্যত্র যাব।’’

চার ছেলের জীবন বাঁচাতে মঙ্গলবার সন্ধেয় ভাদু শেখের বাবা মারফত হোসেন তিন ছেলে-সহ পরিবারের ১৬ জনকে নিয়ে গ্রাম ছাড়েন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেখা যায়, সংসারের প্রয়োজনীয় সামগ্রী যন্ত্র চালিত ভ্যানে চাপিয়ে গ্রাম ছাড়ছেন তাঁরা। বছর আটষট্টির মারফত বলেন, ‘‘এক ছেলে গ্রামের বাইরে থাকেন। তাঁকেও বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আর কোনও ছেলেকে এই ভাবে মরতে দেব না। দুই ছেলেকে দুষ্কৃতীরা যে ভাবে খুন করল, গ্রামে যে উত্তেজনার ছবি দেখলাম তাতে গ্রামে থাকার সাহস পরিবারের নেই।’’