গণতন্ত্রে বামপন্থা একান্ত জরুরী, দরকার আরও কানহাইয়া কুমারদের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নিউজ কর্নার : গণতন্ত্রে বামপন্থীদের বেঁচে থাকা একান্ত ভাবে জরুরী। শরীরে উপকারী ভাইরাসের মতোই বামপন্থীরা একান্ত আবশ্যক।বাংলায় ৩৪ বছর ধরে সিপিএমকে দেখে অনেকেই বামপন্থীদের সম্পর্কে আস্থা হারিয়েছেন। তাঁরা বামপন্থা এবং সিপিএমকে গুলিয়ে ফেলেছেন। প্রকৃত বামপন্থীরা কখনোই ক্ষমতালোভী হবেন না। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের নেশা তাদের মত্ত করে তুলবে না। তারা বামপন্থাকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে জনকল্যাণে কাজে লাগাবেন।তা করতে গিয়ে যে কখনও বাড়াবাড়ি হয়ে যেতেও পারে।।শিক্ষিত মানুষ খানিকটা এই ভাবেই বামপন্থীদের দেখেছিলেন।কিন্তু ৩৪ বছর বাংলায় যদি আঁকড়ে থেকে সিপিএম বুঝিয়ে দিয়েছিলো তারা সিপিএম।তাদের দেখে বহু বামপন্থী হতাশা চেপে রাখেননি।উপায় না থাকায় কাস্তে প্রতীকে ভোট দিয়েছিলেন অবশ্য।

সিপিএমের শেষদিকে ‘লাল নেতাদের’ বাহ্যিক আচরণ এ কোথাও বামপন্থার ছবি স্পষ্ট ছিল না। মনে হতো দক্ষিণপন্থী দলের গায়ে লাল পতাকা দিয়ে মোড়া হয়েছে। নেতাদের হাবভাব চালচলন দেখে স্পষ্ট হয়ে যেত এ যেন কংগ্রেসে ছেড়ে যাওয়া একটি অংশ। এসব থেকে বামপন্থীদের সম্পর্কে জনগণের ধারণা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমার্থক হয়ে ওঠে ।এখন এই বাংলার সিপিএম বামপন্থার প্রকৃত রূপ চেনাতে চাইলে কেউ তা গ্রহণ করতে চাইছে না।ফলে জনগণের সঙ্গে ঠিক কেমন আচরণ করা উচিত দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে তাদেরসিপিএমের শেষদিকে ‘লাল নেতাদের’ বাহ্যিক আচরণ এ কোথাও বামপন্থার ছবি স্পষ্ট ছিল না। মনে হতো দক্ষিণপন্থী দলের গায়ে লাল পতাকা দিয়ে মোড়া হয়েছে। নেতাদের হাবভাব চালচলন দেখে স্পষ্ট হয়ে যেত এ যেন কংগ্রেসে ছেড়ে যাওয়া একটি অংশ। এসব থেকে বামপন্থীদের সম্পর্কে জনগণের ধারণা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমার্থক হয়ে ওঠে ।এখন এই বাংলার সিপিএম বামপন্থার প্রকৃত রূপ চেনাতে চাইলে কেউ তা গ্রহণ করতে চাইছে না।ফলে জনগণের সঙ্গে ঠিক কেমন আচরণ করা উচিত দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে তাদের।

অধিক অ্যান্টিবায়োটিকে বেশির ভাগ উপকারী ভাইরাস মরে যায়। শরীর দুর্বল হয়ে পরে। ধনতন্ত্র দক্ষিণপন্থী দলগুলোকে আশ্রয় করে ফায়দা লুটতে চাইছে। সে কারণেই তাদের এত দোস্তি। পুঁজি জরুরি। কিন্তু তার অসুস্থ ফাঁদ পরিহার করতে হবে।সেখানেই বামপন্থীরা ব্যালেন্সের
কাজ করে। তাই বামপন্থীদের জন্য খানিকটা জায়গা রাখতেই হবে। জিতিয়ে আনতে আনা উচিত কানাইয়া কুমারদের মত নয়া প্রজন্মের বামপন্থীদের। যারা মানুষের কথা বলবে। যারা ধর্মকেন্দ্রিক দলগুলির মুখোশ খুলে দেবে। যাদের শানিত যুক্তিতে ধরাশায়ী হবে ভন্ডরা ।তাদের সংসদে নিয়ে আসা জরুরি। তা আনতে হবে নিজেদের স্বার্থে।

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তলানিতে ঠেকলে যেকোন ছোট অসুখ মানুষকে কাবু করে ফেলে। গণতন্ত্রেও তেমন বামপন্থীরা সমূলে নিকেশ হলে সেখান ধর্মকেন্দ্রিক দলগুলোর মাতামাতি বেড়ে যায়। তারা ধর্মের নামে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা লাভের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে। দক্ষিণপন্থী দলগুলির মধ্যে এই প্রবণতা মারাত্মক। তারা এদেশের জনগণের ধর্মকেন্দ্রিক দুর্বলতাকে রাজনীতির হাতিয়ার করে। এতদিন ধরে তাই করে এসেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মনে করেছিলেন এই অসুস্থ রাজনীতি বোধহয় কমে যাবে। কিন্তু সোশ্যাল সাইট এর সাহায্য নিয়ে এই অসুস্থতা বাড়ছে দিন দিন।

এ দেশে দুর্ভাগ্য হল কংগ্রেসের দুর্নীতি পরে মসনদে বসল বিজেপি। তাদের হাবভাব চাল চলনে সবটাই কংগ্রেসের ছবি। গরু এবং মন্দির বাদ দিলে সবটাই যেন কংগ্রেস। এর মধ্যে আরেকটি নতুনত্ব রয়েছে তা হল নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। তাঁর বিদেশযাত্রার বাতিকএবং বিনোদনমূলক ভাষণ নিঃসন্দেহে বিজেপিকে অভিনবত্ব দিয়েছে। একথা বিরোধীরা বারবার বলেছেন। তা না হলে দক্ষিণপন্থী দলগুলির আচরণ মোটামুটি একই রকম। অনেকে টিপ্পনি কেটে নরেন্দ্র মোদিকে ‘দাড়িওয়ালা ইন্দিরা গান্ধী’ বলেও খোঁচা দিতে ছাড়েননি। এই বাংলায় একেবারে শেষ সময়ের সিপিএমের আচরণ কপি করে বঙ্গ তৃণমূলের নেতারা। তাদের দেখে অনেক সময় বোঝা যায়না বাংলায় আদৌ কিছু বদলেছে কিনা।
সিপিএম এ বাংলায় নিজেদের বামপন্থী হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ। অথচ সে সুযোগ তাদের ছিল। কেবল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা সেই সুযোগ নষ্ট করে দিয়েছে চিরতরে। এখনো বাংলার বহু বামপন্থী প্রেমি ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখেন। তাদের অবগতির জন্য জানিয়ে রাখা ভাল ক্ষমতায় বামপন্থার একমাত্র প্রমাণ নয়। বরং যেনতেন প্রকারে ভোটে জেতার যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তাতে সামিল হয়ে বামপন্থীরা দক্ষিণপন্থীদের অসুখে আক্রান্ত হয়েছে।

অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্রিগেডের ভিড় দেখে সন্তুষ্ট হন। তারপরে যে কথা তিনি বলেন তাতেই লুকিয়ে রয়েছে বামপন্থার সর্বনাশ। তিনি বলেছিলেন এতগুলি মানুষের ভোট ইভিএম পর্যন্ত আসবে তো ।বামপন্থীরা যখন মানুষকে ভোটার হিসেবে দেখবে তখনই বামপন্থার বৈধতা নষ্ট হয়ে যাবে। সে বামপন্থী দক্ষিণপন্থী হয়ে উঠবে। এ কথা বুঝতে বুঝতে না পারলে আগামী দিনে আরো বড় বিপদ হবে। লাল পতাকা হাতে নিয়ে যারা রাস্তায় লম্ফঝম্পও করে তাদের দেখে আপ্লুত হওয়া খুব একটা যুক্তির কাজ নয় । বামপন্থা আসলে একটি মানসিকতা ।এর যোগ অন্তরে।বাইরে তা প্রকাশ পেতে পারে, নাও পারে। কিন্তু যখন বামপন্থীরা এটিকে বাইরের জিনিস মনে করে কেবল ভোট বাড়ানোর তাগিদ অনুভব করেছেন, সর্বনাশা তখনই হয়েছে। আগামী দিনে কানাইয়া দের মতো নেতাদের বোঝাতে হবে বামপন্থা আসলে কী।

ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে বামপন্থার গুরুত্ব কী। কেবল মার্কস, লেনিন, মাও, স্ট্যালিন দিয়ে এই ব্যাখ্যা পুরোপুরি সম্ভব নয় সে চেষ্টা করতে গিয়ে এখানে একটি হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় মানুষ । বাইরের কোন জিনিস চাপিয়ে দিলে সে গ্রহণ করে বটে, কিন্তু সে গ্রহণে নিজস্বতা থাকে না । সব মাটিতেই আপেল ফলবে, সমস্ত মাটিতেই সুস্বাদু আঙ্গুর হবে এ ভাবনা আবেগ তাড়িত।রাশিয়া এবং চিনে যা সফল হয়েছিল তা ভারতের মাটিতে গোটাটাই সফল হবে না । আসার কথা হল কানাইহা সে কথা বুঝতে পারছেন।বাকিদেরও বুঝতে হবে । তা না হলে কেবল মার্কস লেনিনের মূর্তি নিচে দাঁড়িয়ে, ভোট জয়ের অংক করবেন পাঞ্জাবি পরা বাম নেতারা।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest