কন্যা ভ্রূণ হত্যার জের, তিন বছরে ভারতে ‘নিখোঁজ’ ১.১৭ কোটি কন্যাসন্তান!

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: গ্রাম, মফস্বল বা আধা শহর শুধু নয়, গোটা দেশেই বিপজ্জনক ভাবে কমছে শিশুকন্যার সংখ্যা। ২০১৫-২০১৭ সালের জনগণনার হিসাব বলছে, প্রতি ১০০০ জন পুরুষ শিশুর তুলনায় শিশুকন্যার সংখ্যা এক লাফে কমেছে ৮৯৬। গ্রামের চাইতেও শহরে মেয়েদের অনুপাত কম। কারণটা কি শুধুই কন্যা ভ্রূণ হত্যা? নাকি রহস্যটা অনেক গভীরে?

প্রশ্ন উঠতেই পারে, তারা তো পৃথিবীতেই আসেনি, তা হলে নিখোঁজের কথা আসছে কী ভাবে? আসলে তারা নিখোঁজ এ দেশের লিঙ্গ অনুপাতের পরিসংখ্যান থেকে। সম্প্রতি সরকারি রিপোর্টে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, তিন বছরে (২০১৫-১৭) ভারতে প্রতি এক হাজার জন পুত্রসন্তানের জন্মের মেয়াদকালে ভূমিষ্ঠ হওয়া কন্যাসন্তানের সংখ্যা মাত্র ৮৯৬টি। যা সেক্স রেশিও অ্যাট বার্থ বা এসআরবি-তে ব্যবধান ক্রমশ বাড়াচ্ছে।

এই পরিসংখ্যান থেকেই অনুমান, ওই তিন বছরে এ দেশ হারিয়েছে ১.১৭ কোটি কন্যাসন্তানকে। দেশের পাঁচটি বৃহৎ রাজ্যে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতে নারী-পুরুষের অনুপাতিক হার সব থেকে বেশি দুর্ভাগ্যজনক। রিপোর্টে স্পষ্ট, ওই সময়ে কালে উত্তরপ্রদেশে কন্যাসন্তানের পরিমাণ কমেছে ৩৪.৫ লক্ষ, যা মোট পরিমাণের প্রায় ৩০ শতাংশ। একই ভাবে রাজস্থানে ১৪ লক্ষ, বিহারে ১১.৬ লক্ষ, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতে ১০ লক্ষ করে কন্যাসন্তানের সংখ্যা কমেছে ওই তিনটি বছরে।

লিঙ্গ বৈষম্য ঘোচাতে সরকারি স্তরে নেওয়া হয়েছে বহুবিধ প্রচেষ্টা। চালু করা হয়েছে কন্যাসন্তানদের জন্য বেশ কিছু চমকপ্রদ প্রকল্প। কিন্তু তার পরেও লিঙ্গ অনুপাতে ব্যবধান ধরা পড়েছে বেশ চওড়া। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, হরিয়ানা, গুজরাত অথবা পঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলি এসআরবিতে উন্নতির ছবি কিছুটা হলেও ধরা পড়েছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ বা বিহারের মতো যে রাজ্যগুলিতে জন্মহার সব থেকে বেশি, সেখানে এসআরবি-র বিশাল ফারাক দেশের মোট জনসংখ্যার উপর প্রভাব ফেলছে। এবং তাকে ক্রমশ নীচের দিকে টেনে নামাচ্ছে।

অন্য দিকে কেরল অথবা ওড়িশার মতো রাজ্যে এসআরবি উচ্চ থাকলেও বর্তমানে সেখানও এই হার ক্রমশ নিম্নমুখী। পরিসংখ্যান বলছে, কেরলে যেখানে ২০১২-১৪ সালে প্রতি এক হাজার পুত্রসন্তানের জন্মের মেয়াদকালে কন্যাসন্তান জন্মানোর সংখ্যা ছিল ৯৭৪, সেখানে এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪৮-এ। একই ভাবে ওড়িশায় ২০১১-১৩ সালে এই সংখ্যা ৯৫৬ থাকলেও ২০১৫-১৭ সালে তা কমে ঠেকেছে ৯২৯-এ। এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, কেরল এবং ওড়িশায় এই সময়কালে এসআরবি কমেছে যথাক্রমে ২৬ এবং ২৭ পয়েন্ট।

একই সঙ্গে জন্মহার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকারি প্রচারের ফলও আশানুরূপ নয় বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। দিল্লিতে যেখানে জন্মহার মাত্র ১.৫, সেখানে উত্তরপ্রদেশ, বিহার বা মধ্যপ্রদেশের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এই হার দ্বিগুণেরও বেশি।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest