লখনউ: নির্বাচনী জনসভা থেকে প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেওয়ার ঘটনা অতিস্বাভাবিক। আর তা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে মাত্রা ছাড়িয়ে যান। কিন্তু রবিবার সমাজবাদী পার্টির আজম খান প্রায় সব মাত্রাই ছাড়িয়ে গেলেন। প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রার্থী তথা অভিনেত্রী জয়প্রদা সম্পর্কে করে বসলেন কুরুচিকর মন্তব্য। একেবারে জয়প্রদার অন্তর্বাসের রং নিয়ে মন্তব্য করলেন তিনি।এই অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের রামপুরে এফআইআর দায়ের হয়েছে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী আজম খানের বিরুদ্ধে।
উত্তরপ্রদেশে এবার জোট বেঁধেছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজপার্টি। তাদের সঙ্গে রয়েছে আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল। ওই রাজ্যের রামপুরে সেই মহাজোটের প্রার্থী সমাজবাদী পার্টির আজম খান। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে জয়াপ্রদাকে। যিনি রামপুর থেকে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ছিলেন। কিন্তু পরে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি জয়াপ্রদা বিজেপিতে যোগদান করেন। তার পর বিজেপির তরফে তাঁর নাম রামপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর পরই সমাজবাদী পার্টি ও বিজেপির মধ্যে বাকযুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। রবিবার দলের এক জনসভা থেকে সেই বাকযুদ্ধ জারি রাখতে বিতর্ক বাঁধিয়ে বসলেন আজম খান। উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, জয়াপ্রদাকে রামপুরের সঙ্গে তিনিই পরিচিত করেছিলেন। ১৭ বছর পর এখন ওঁর আসল পরিচয় বোঝা যাচ্ছে। এর পরই তিনি ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। দাবি করেন যে তিনি নাকি ১৭ দিনেই বুঝে গিয়েছিলেন জয়াপ্রদার অন্তর্বাসের রং খাকি। আজম খান যখন এই মন্তব্য করছেন, তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবও। এই মন্তব্যের পরেই প্রবল বিতর্ক দানা বাঁধে। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজমের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে আজম বলেন, “আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি, আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে কোনো অশালীন মন্তব্য করিনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তা হলে আমি ভোটে দাঁড়াব না।”
প্রসঙ্গত, এর আগে জয়াপ্রদা ও আজম খানের মধ্যে লড়াই প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে। আজম খানের বিরুদ্ধে এর আগেই একবার আপত্তিকর ছবি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছিলেন জয়াপ্রদা। তখন দুজনেই সমাজবাদী পার্টিতেই ছিলেন। ওই দলের প্রার্থীও হয়েছিলেন। এদিন জয়া প্রদা বলেন, আজম খানের মতো লোককে ভোটে দাঁড়াতে দেওয়াই উচিত নয়। তাঁর কথায়, এই ধরনের মন্তব্য আমার বিরুদ্ধে আগেও করা হয়েছে। আমিও ২০০৯ সালে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী ছিলাম। সেবারও তিনি আমার বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করেছিলেন। এই ধরনের মানুষ যদি যেতেন, গণতন্ত্রের কী হবে? আজম খানকে তাঁর প্রশ্ন, আপনি কী চান, আমি মারা যাই? তবে কি আপনি সন্তুষ্ট হবেন? আপনি হয়তো চান আমি ভয়ে পেয়ে এই কেন্দ্র ছেড়ে পালাই। কিন্তু আমি পালাব না।